টেকনিশিয়ান-পরিচালকের দ্বন্দ্ব, টলিউডে শুটিং পুরোপুরি বন্ধ
Published: 7th, February 2025 GMT
কলকাতার টালিগঞ্জ স্টুডিওপাড়ায় টেকনিশিয়ানদের সঙ্গে পরিচালকদের দ্বন্দ্ব তুঙ্গে। অসহযোগিতার অভিযোগে শুটিং ফ্লোরে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিরেক্টরস গিল্ড।
পরিচালক শ্রীজিৎ রায়ের সেট অসমাপ্ত রাখাকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। এরপর পরিচালকরা শুটিং ফ্লোরে গেলেও আংশিক কর্মবিরতি পালন করছিলেন টেকনিশিয়ানরা। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে পরিচালকরা ঘোষণা দেন, শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে আর কাজ করবেন না তারা। যতদিন দ্বন্দ্বের অবসান না ঘটে, ততদিন ফ্লোরে যাবেন না। যার ফলে আজ সকাল থেকে টলিপাড়ায় শুটিং থমকে আছে। লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশন— পুরোপুরি বন্ধ।
ডিরেক্টরস গিল্ডের শুটিং বন্ধের সিদ্ধান্তের পরও বেশ কজন পরিচালক শুটিং করছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন— সৃজিৎ মুখোপাধ্যায়, তথাগত মুখোপাধ্যায়। শুক্রবার থেকে শুটিং শুরু হয়েছে সৃজিতের ‘কিলবিল সোসাইটি’-এর। এ নির্মাতার দাবি, পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায় যদি ‘রাস’-এর শুটিং করতে পারেন, তাহলে তার ফ্লোরে যেতে বাধা কই! অন্যদিকে, ছোটপর্দার পরিচালক সুমন দাসও সিরিয়ালের শুটিং করছেন।
আরো পড়ুন:
অভিনয়ে ফিরছেন শতাব্দী
আমি বোধহয় অদৃশ্য গণ্ডি ভাঙতে পেরেছি: ইধিকা
কয়েকজন পরিচালক শুটিং করায় গিল্ডের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। টলিপাড়ার সূত্রের খবর, বহু পরিচালক, প্রযোজক শুটিংয়ের পক্ষে।
ডিরেক্টরস গিল্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তথাগত ও সুমন শহরের বাইরে শুটিং করছেন। তাই তাদের কাজ বন্ধ করা হচ্ছে না। শহরে ফিরে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য আর ফ্লোরে যাবেন না। তাহলে কি স্টুডিওপাড়ায় তালা পড়বে? জবাবে ডিরেক্টরস গিল্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিচালক ছাড়া যদি শুটিং সম্ভব হয়, তাহলে কাজ চলবে।
গতকাল সন্ধ্যায় ফেডারেশনকে বৈঠকে আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো উত্তর মেলেনি। তারপর রাতে ডিরেক্টরস গিল্ড মিটিং করে। ওই বৈঠকের পরই গিল্ডের সম্পাদক সুদেষ্ণা রায় শুটিং বন্ধের ঘোষণা দেন। পাশাপাশি ফেডারেশনের উদ্দেশে বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে সংগঠনটি।
শর্তগুলো জেনে নিন:
**সব দাবির লিখিত উত্তর দিতে হবে।
**তিন পরিচালক যাতে নির্দ্বিধায় কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।
**লিখিত বা মৌখিক নির্দেশে কাউকে ব্ল্যাকলিস্ট করা হবে না।
**লিখিত বা মৌখিক নির্দেশে কারো কাজ বন্ধ করা যাবে না।
**কোনো ব্যক্তি বিশেষ নিয়ে সমস্যা থাকলে তার সংশ্লিষ্ট গিল্ডকে জানাতে হবে।
**পরিচালক, প্রযোজকদের তরফে টেকনিশিয়ানদের লিস্ট ফেডারেশনকে অবশ্যই দেওয়া হবে। তবে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে কোনো পারমিশন আসার প্রশ্ন থাকবে না।
ঢাকা/সুচরিতা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড র ক টরস গ ল ড দ বন দ ব
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।