বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক আন্দোলনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‌‌‘গণঅভ্যুত্থানের কণ্ঠস্বর’ শিরোনামে ৩৬ জুলাইয়ের কবিতা পাঠ। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। আবৃত্তি করেন ইকবাল আহমেদ। বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পক্ষে স্বাগত বক্তব্য দেন সানাউল্লাহ সাগর। 

প্রথম পর্বে কবিতা পাঠ করেন চঞ্চল বাশার, ফারুক ওয়াসিফ, জুননু রাইন, ইব্রাহীম নিরব, শাদমান শাহিদ। তারপর সানাউল্লাহ সাগরের কবিতা আবৃত্তি করেন রাজিয়া সুলতানা ঈশিতা। জুলাইয়ের দিনলিপি নিয়ে বক্তব্য দেন কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক সমকালের সহকারী সম্পাদক এহসান মাহমুদ।

দ্বিতীয় পর্বে কবিতা পাঠ করেন মাইনুল ইসলাম মানিক, আশিক বিন রহিম, নাহিদা আশরাফি, মামুন আজাদ প্রমুখ। ছড়া পাঠ করেন আহমেদ ইসহাক। জুলাই বিপ্লবে কবিতার ভাষা ও গণমুখী কবিতা নিয়ে বলেন কবি ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক শামস আরেফিন। 

তৃতীয় পর্বে কবিতা পাঠ করেন সীমান্ত হেলাল, মোহাম্মদ জসিম, বহ্নি কুসুম প্রমুখ। অভ্যুত্থানে গানের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন গীতিকার মহসিন আহমেদ এবং পলিয়ার ওয়াহিদের কবিতা আবৃত্তি করেন তরিকুল ফাহিম। গণঅভ্যুত্থানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন কবি নকিব মুকশি। 

চতুর্থ পর্বে কবিতা পাঠ করেন মুহিম মাহফুজ, এনামূল হক পলাশ, হাসান মাহাদি প্রমুখ। ছড়া পাঠ করেন জুলফিকার শাহদাৎ। রাজপথের রাজসাক্ষী শিরোনামে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল। 

পঞ্চম পর্বে কবিতা পাঠ করেন মাসুম মুনওয়ার, সাজ্জাদ সাইফ, সুলতান স্যানাল প্রমুখ। এ পর্বে শহীদ ও আহত পরিবারের গল্প বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশেষ সেল-প্রধান হাসান ইনাম। লেখক-কবি-শিল্পীদের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন প্রধান অতিথি কথাসাহিত্যিক ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ। 

ষষ্ঠ পর্বে কবিতা পাঠ করেন এহসান হাবীব, সাঈদ ইসলাম, মহিউদ্দীন মোহাম্মদ প্রমুখ। এ পর্বে রাজপথে রুখে দাঁড়ানোর গল্প শোনান নুসরাত নূর। সপ্তম পর্বে কবিতা পাঠ করেন ঈফতেখার ঈশপ, নজরুল মোহাম্মদ, অর্বাক আদিত্য প্রমুখ। শহীদ পরিবার নিয়ে কথা বলেন ফরিদ আহমেদ রনি। কবি ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক আবদুল হাই শিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন কলামিস্ট প্রকৌশলী এ কে এম রেজাউল করিম। 

অনুষ্ঠান শেষে জুলাইবিষয়ক বই ফরিদ আহমেদ রনির ‘আত্মনিবেদন’, পলিয়ার ওয়াহিদের ‌‘গুলি ও গাদ্দার’, কাদের মাজহারের ‘কারাগারের স্মৃতিকথা’, জিএম রাজিব হোসেনের ‘দ্রোহের গ্রাফিতি’, এনামূল হক পলাশের ‘পলায়নের আগে’ এবং ফেরদৌস মাহমুদ ও নকিব মুকশির কাব্যগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ল ই গণহত য গণঅভ য ত থ ন প ঠ কর ন আহম দ

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের

গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণসংযোগের সময় দেওয়া বক্তব্যে এই আহ্বান রাখেন তিনি।

শেখ হাসিনার শাসন আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। গুম, খুন, ভিত্তিহীন মামলা, লুটপাট, টাকা পাচার, বাকস্বাধীনতা হরণ ও ভোট চুরিসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি। 

আরো পড়ুন:

জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা

হাসিনা-রেহানাসহ ২২ জনের গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১২ মে

শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‍“আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের ঘরে থাকতে দেননি আপনি। আমরা তো কোথাও পালিয়ে যাইনি। আদালতে মিথ্যা মামলা আইনের মাধ্যমে ফেইস (মোকাবিলা) করেছি। উকিল ধরে জামিন নিয়েছি। আপনি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে আছেন কেন? আপনিও মামলা লড়েন। আপনি দেশে এসে দাড়ান না দেখি।”

জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা অনেকে মনে করেন শেখ হাসিনা আবারো দেশে ফিরে আসবেন। তিনি তো ১৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তার তো দেশ থেকে পালানোর কথা ছিল না। তিনি পালালেন কেন? কারণ তিনি একজন ডাইনি ছিলেন। জনগণের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন যে, তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জনগণ যদি সেদিন তাকে পেত, তাহলে ছিঁড়ে খেত।” 

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “হাসিনা দেশে ফিরে রাজনীতি করলে আমাদের কিছু করতে হবে না, জনগণই তাকে দেখে নেবে।” 

আওয়ামী লীগের শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করে; এতে মানুষ ভালোবাসবে না। দলের কোনো নেতাকর্মীরা অন্যায় করলে যেন জেলার নেতারা তাদের শক্ত হাতে দমন করেন; তারা যেন অন্যায়কারীদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাই অপকর্ম বন্ধ করুন, না হলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে।” 

ত্রোদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দৃষ্টি রেখে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। মির্জা ফখরুলসহ দলটির শীর্ষ নেতারা সভা-সমাবেশ করছেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা, না রাখা নিয়ে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে; সেই সঙ্গে আইনি ঝক্কিও সামনে আসছে।

গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া কয়েক শত ফৌজদারি মামলায় তিনি আসামি। অনেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তবে ভারতের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর কোনো নিশ্চয়তা এখনো তৈরি হয়নি। 

গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ছোট বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। সেদেশে উচ্চনিরাপত্তা শৃঙ্খলে বসবাস করছেন বলে আন্তর্জাতিক সাংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়ে থাকে। সেখান থেকে দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনলাইনে তার কথোপকথনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে অস্বস্তির কথা ভারতকে জানিয়ে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার। 

ঢাকা/মঈনুদ্দীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কারের একাল-সেকাল
  • তরুণ সমাজ দেশপ্রেমে উত্তীর্ণ হয়েছে, বাংলাদেশ উচ্চস্থানে উন্নীত হবে : ডিসি
  • শামীম ওসমানের ছেলে অয়নের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
  • শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
  • গণঅভ্যুত্থানের তরুণ নেতৃত্ব ও রাজনীতিতে প্রাণপ্রবাহ
  • জুলাই বিপ্লবী মেয়েরা আজ নিরাপদ বোধ করছে না: ফরহাদ মজহার
  • আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত দুজন শনাক্ত  
  • ড. ইউনূস অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেননি, আমাদের হাতে বিপ্লবের দলিল নেই: ফরহাদ মজহার
  • ড. ইউনূস গণঅভ্যুত্থানের ফসল, নেতা নন: ফরহাদ মজহার
  • গণঅভ্যুত্থানে শহীদ রিজভীর ভাইকে কুপিয়ে জখম, গ্রেপ্তার ৩