কুড়িগ্রামে পুলিশের সামনে দুটি নৌকায় ডাকাতি
Published: 9th, February 2025 GMT
কুড়িগ্রামের রাজীবপুর-চিলমারী নৌপথে ব্রহ্মপুত্র নদে ১০ দিনের ব্যবধানে আবারও নৌকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিলমারী উপজেলার কড়াইবরিশাল খেয়াঘাটের কাছে ব্রহ্মপুত্র নদে নৌ পুলিশের সামনে দুটি নৌকায় ডাকাতি করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে চলে যায় ডাকাত দল।
এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি কড়াইবরিশাল এলাকায় যাত্রীবাহী নৌকায় এবং গত ২১ ডিসেম্বর চিলমারীর অষ্টমীরচর ইউনিয়নের দুই শ বিঘার চরের কাছে ব্রহ্মপুত্র নদে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
চিলমারী বন্দর রমনা নৌঘাট কর্তৃপক্ষ ও ভুক্তভোগী যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ দুপুরে রাজীবপুরের কোদালকাটি ও পাখিউড়া থেকে চিলমারী অভিমুখে ছেড়ে আসা দুটি নৌকা চিলমারী ইউনিয়নের কড়াইবরিশাল খেয়াঘাটের পশ্চিম-দক্ষিণ পাশে পৌঁছালে এক দল ডাকাত ট্রলার নিয়ে নৌকা দুটির গতি রোধ করে। পরে তারা ডাকাতি শুরু করে। ডাকাতেরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে নৌকায় থাকা যাত্রী ও গরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় খেয়াঘাটে একটি নৌকায় চিলমারী থানা-পুলিশের কয়েকজন সদস্য থাকলেও তাঁরা নির্বিকার ছিলেন।
নৌ পুলিশের সামনে ডাকাতির ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা নৌ থানার ওই পুলিশের নৌকা আটক করেন। পরে চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও চিলমারী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে আনেন।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, ২টি নৌকায় ডাকাতির ঘটনায় প্রায় ৪০ লাখ টাকা ডাকাত দল নিয়ে গেছে। ডাকাতির সময় একটি নৌকার এক যাত্রী আঘাত পেয়ে আহত হয়েছেন। পরে আহত ওই যাত্রীকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত যাত্রীর নাম আমিনুল ইসলাম। তিনি রৌমারী উপজেলার কোমড়ভাঙ্গি এলাকার বাসিন্দা।
চিলমারী ঘাটের মাস্টার আবু বক্কর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘চিলমারী ইউনিয়নের ওই এলাকা পাশের গাইবান্ধা জেলার সীমান্তঘেঁষা। বিভিন্ন সময় ওই এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। আমরা অনেকবার চিলমারী নৌ থানার কাছে মৌখিক আবেদন করেছিলাম, অন্তত জোড়গাছ হাটের দিন সেখানে কিছু পুলিশ রাখার। কিন্তু তারা (পুলিশ) আমাদের কথা শোনে না। ১০ দিন আগেও সেখানে একটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আজ আবারও ব্যবসায়ীদের কাছে ডাকাতি করে কয়েক লাখ টাকা নিয়ে গেল।’
ভুক্তভোগী যাত্রী ও স্থানী বাসিন্দারা জানান, যখন ডাকাতেরা ব্যবসায়ীদের নৌকা আটক করে ডাকাতি করে, তখন ঘটনাস্থল থেকে ২০০–৩০০ মিটার দূরেই নৌ পুলিশের কয়েকজন সদস্য ছিলেন। তবে তাঁদের কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না, ডাকাতদের হাতে অস্ত্র ছিল। তাই ডাকতেরা ডাকাতি করে তাঁদের সামনে দিয়েই গুলি ছুড়তে ছুড়তে চলে যায়।
ডাকাতির শিকার একটি নৌকার মাঝি মোসলেম উদ্দিন বলেন, ডাকাতদের হাতে দেশীয় অস্ত্র ও বন্দুক ছিল। তারা এসে গুলি করেছে। পরে ভয়ে কয়েকজন পানিতে লাফ দিয়েছেন। ডাকাত দল নৌকায় থাকা ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে কয়েক লাখ টাকা নিয়ে গুলি করতে করতে চলে গেছে। তিনি আরও বলেন, ডাকাত দলে ১০ থেকে ১৫ জন ছিল। তাদের হাতে অস্ত্র থাকায় তাঁরা কিছুই করতে পারেননি।
এ ঘটনায় চিলমারী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই সেলিম সরকারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে চিলমারী মডেল থানার ওসি মোশাহেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে আছি। স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলছি। স্থানীয় বাসিন্দারা ভুল বুঝে পুলিশের নৌকা আটক করে রেখেছিলেন, পরে ছেড়ে দিয়েছেন। ব্যবসায়ীরা থানায় অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড ক ত র ঘটন ড ক ত দল ব যবস য় র স মন
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি সব সময় শ্রমিকদের পাশে আছে : রাজিব
মহান মে দিবস ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী গার্মেন্টস শ্রমিক দল নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির উদ্যোগে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২রা মে) বিকেলে নগরীর চাষাড়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব।
এসময় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাসুকুল ইসলাম রাজিব বলেন, ১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে বিএনপির পক্ষ থেকে দেশকাসীকে জানাই গভীর শ্রদ্ধা। শ্রমিকরা হলো আমাদের দেশের চালিকা শক্তি। আপনাদের শ্রমে, ঘামে এবং ত্যাগে রচিত হচ্ছে বাংলাদেশের কৃষি, শিল্প ও অর্থনীতি। আপনাদের জন্যই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তাই আপনাদের সবাইকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে ও আমার ব্যাক্তিগত পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। শ্রমিকদরে ন্যায্য অধিকার রক্ষা করার জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সব সময় শ্রমিকদের পাশে ছিলো, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আমরা বিশ্বাস করি আজ বাংলাদেশের শ্রমজীবি মানুষ যে পরিশ্রম করে থাকে সেই পরিশ্রমের জন্যই আমরা নতুন ভাবে স্বপ্ন দেখেতে শুরু করেছি। বাংলাদেশকে গোটা পৃথিবীর বুকে একটি আত্ননির্ভরশীল দেশ হিসেবে আমরা দেখতে চাই।
ভিপি রাজিব আরও বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ২০২৪ এ আমাদের হাজার ছাত্র-জনতা আত্নহতির বিনিমেয়ে আমরা আবারো নতুন করে স্বাধীনতা লাভ করেছি। আমরা শিল্প সমৃদ্ধির একটি জেলা হিসেবে নারায়ণগঞ্জকে গড়ে তুলতে চাই। আপনাদের নিরাপদ কর্মের পরিবেশ যারা নষ্ট করতে চায় আমরা তাদেরকে হুশিয়ার উচ্চারন করে বলতে চাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল তথা নারায়ণগঞ্জ যতদিন আছে ততদিন কোন শ্রমিকের প্রতি বিন্দু পরিমান আঘাত কেউ করতে পারবে না। আপনারা জানেন আমাদের নেতা তারেক রহমান আমাদের জন্য ৩১টি দফা দিয়েছেন। তার মধ্যে সমস্ত সেক্টরের কথা রয়েছে। আমরা তা বাস্তবায়ন করবো। আমরা বিশ্বাস করি আগামী দিনে যে বাংলাদেশকে আমরা দেখতে চাই সেই বাংলাদেশ হবে বৈষম্যবিহীন। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ সমান ভাবে তার অধিকার ভোগ করবে। যে উপরের তলায় আছেন, যে শিল্পপতি আছেন, তার যেমন অধিকার আছে, তেমনি একজন শ্রমিকের অধিকারও সমান হতে হবে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গার্মেন্টস শ্রমিক দল নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ ইসমাঈল হোসেন কাউসার এর সভাপতিত্বে এবং ফতুল্লা থানা বিএনপির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মামুনুর রশিদ এর সঞ্চালনায় এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ আছাদুজ্জামান বাবুল, সহ-অর্থ সম্পাদক আব্দুল আল মামুন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গার্মেন্টস শ্রমিক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লুৎফুন নাহার লতা, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দল নারায়ণগঞ্জ জেলা আহবায়ক সলিমুল্লাহ করিম সেলিম, শ্রমিক নেতা এজাজ চৌধুরী, মোঃ রাজু আহম্মেদ ভূঁইয়া ও নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি পারভেজ মল্লিক সহ বিভিন্ন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।