স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেই শেষ করা হয়েছে: ব্যারিস্টার সাকের
Published: 10th, February 2025 GMT
স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেই তাদের শেষ করে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা শিবিরের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার মোস্তফা সাকের উল্লাহ।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে ‘শিবির মিট ব্রিলিয়্যান্স’ অনুষ্ঠানে অতিথি বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বিগত ১৬ বছরে আমরা যে ছাত্র রাজনীতি দেখেছি, তা ছাত্র রাজনীতি হলে আমরা সেটা চাই না। ছাত্র রাজনীতি যদি নৈতিকতা, আদর্শিক ও ছাত্রদের কল্যাণকামী হয়, তবে এমন রাজনীতিই আমরা চাই। যে রাজনীতি আদর্শের প্রভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আবু সাঈদের মতো গুলির সামনে বুক চিতিয়ে দিতে দ্বিধা করবে না।”
তিনি আরো বলেন, “এ ক্যাম্পাসে এমন সাহসী ছিল শহীদ মাসউদ বিন হাবিব, মুজাহিদুল ইসলাম ও মামুন। দুঃখের বিষয় হলো তাদের মৃত্যুতে শিবির ছাড়া কেউ কাঁদেনি। গত ১৬ বছরে এমন ন্যারেটিভ প্রচলিত ছিল, ছাত্রশিবিরকে মারলে মানুষ মারা হত না। আপনারা এ বক্তব্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ান। চুপ থাকলে আপনিও একদিন আক্রান্ত হবেন। গত সময়ে আমরা তাই দেখেছি। যারাই স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, তাদেরই শেষ করে দেওয়া হয়েছে।”
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন চবি শাখা শিবির। এতে শিবির নিয়ে শিক্ষার্থীদের থেকে আসা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আলোচকরা। অনুষ্ঠানে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতি দেখা গেছে।
শাখা সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। অতিথি বক্তা হিসেবে ছিলেন চবি শাখা শিবিরের সাবেক সভাপতি রাজিফুল হাসান বাপ্পি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন এআই বিজ্ঞানী মুজিবুর রহমান। এছাড়া ক্রিটিক হিসেবে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) সভাপতি মোহাম্মদ আজহার ও চবি ক্লাব অ্যালায়েন্সের সভাপতি মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসাইন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, “আপনাদের প্রশ্নগুলে শুনে আশান্বিত হয়েছি যে, আপনারা ছাত্রশিবিরকে জানার চেষ্টা করছেন। আমাদের এ দেশ অনেক জুলুমের শিকার হয়েছে। এ দেশের মানুষ বারবার অন্যায় জুলুম নিপীড়নের মধ্যে দিন কাটিয়েছে। আমাদের দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও এক অদৃশ্য শক্তির কাছে পরাধীন ছিল। আমরা যারা দেশকে ভালোবাসি, তাদের দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেই দায়বদ্ধতা থেকে আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাব।”
তিনি বলেন, “আমরা চাই সম্ভবনাময় একটি বাংলাদেশ। আমাদের অনেক জনশক্তি রয়েছে যা কাজে লাগিয়ে দেশকে সমৃদ্ধ করা যাবে। আমাদের দেশ প্রাকৃতিক সম্পদের পরিপূর্ণ। এগুলো খুঁজে বের করার দায়িত্ব আমাদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা দেশ ও জাতির জন্য কাজ করব। ইসলামী ছাত্রশিবির সেই লক্ষ্যে সৎ, দক্ষ দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরিতে কাজ করছে।”
তিনি আরও বলেন, “পেছনের অতীত ভুলে গিয়ে বিধ্বস্ত এ দেশটাকে নতুনভাবে বিনির্মাণ করার চেষ্টা করাই এখন আমাদের প্রধান কাজ। সেই লক্ষ্যে শুধু শিবির নয়, সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।”
অনুষ্ঠানে ১৩ জন চবি শিক্ষার্থীকে লেখক সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এই লেখকদের বই চলতি অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি মিশরের প্রাচীন বিদ্যাপীঠ আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ থেকে স্কলারশিপ পাওয়া ১০ জনের অন্যতম চবি শিক্ষার্থী মিফতাহুল আবেদীন আশিককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত আম দ র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলের অংশগ্রহণের প্রতিবাদে ইউরোভিশনের ট্রফি ফেরত দিচ্ছেন সুইস সংগীতশিল্পী নেমো
আন্তর্জাতিক গানের প্রতিযোগিতা ইউরোভিশনে ইসরায়েলের অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সুইজারল্যান্ডের সংগীতশিল্পী নেমো নিজের পুরস্কার ফেরত দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল অনবরত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পরও দেশটিকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার নেমো পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন।
নেমো তাঁর গাওয়া ‘দ্য কোড’ গানটির জন্য ২০২৪ সালে ইউরোভিশন পুরস্কার জিতেছেন। তাঁর মতে, ইউরোভিশন প্রতিযোগিতায় ইসরায়েলের অংশগ্রহণের বিষয়টি প্রতিযোগিতার আদর্শিক জায়গার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আর সে আদর্শিক জায়গাটি হলো সব মানুষের অন্তর্ভুক্তি ও সবার মর্যাদা বজায় রাখা।
ইউরোভিশনের আয়োজক সংস্থা ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়ন (ইবিইউ)–এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদী পদক্ষেপের সর্বশেষ সংযোজন এটি। গত সপ্তাহে ইবিইউ ইসরায়েলকে আগামী বছর অস্ট্রিয়ায় অনুষ্ঠেয় প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার পর পাঁচটি দেশ প্রতিযোগিতা থেকে সরে গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে নেমো বলেন, ‘ইউরোভিশন বলে যে তারা ঐক্য, অন্তর্ভুক্তি ও সব মানুষের মর্যাদার পক্ষে দাঁড়ায়। এই মূল্যবোধগুলোর কারণেই এ প্রতিযোগিতাটি আমার কাছে এত অর্থবহ। কিন্তু যখন কিনা জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে (অধিকৃত ফিলিস্তিন অঞ্চল, পূর্ব জেরুজালেম ও ইসরায়েল বিষয়ক তদন্ত) গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে, তখন বোঝা যায়, ওই আদর্শগুলোর সঙ্গে ইবিইউর নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো স্পষ্টত সাংঘর্ষিক।’
আরও পড়ুনগাজায় ইসরায়েলের জাতিহত্যামূলক যুদ্ধের প্রতিবাদে ইউরোপজুড়ে লাখো মানুষের বিক্ষোভ৩০ নভেম্বর ২০২৫ইসরায়েল বারবার গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। ইসরায়েলের দাবি, তারা আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা থেকে সীমান্ত পেরিয়ে হামাসের নেতৃত্বে হামলার পর নিজেদের আত্মরক্ষার অধিকার তাদের রয়েছে। ওই হামলার কারণেই এই যুদ্ধের সূচনা হয়েছে।
গত বুধবার আইসল্যান্ডের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম আরইউভির খবরে বলা হয়েছে, দেশটি ২০২৬ সালে অনুষ্ঠেয় ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে না। গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি। এর আগে স্পেন, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড ও স্লোভেনিয়াও একই ধরনের ঘোষণা দেয়।
আরও পড়ুনইসরায়েলিদের বাধায় নিজেদের জমিতে যেতে পারেন না ফিলিস্তিনিরা, বিপর্যয়ে জলপাইশিল্প০৪ ডিসেম্বর ২০২৫