বাবার সম্পত্তি বণ্টন করলেন ভাই, যা বললেন রুনা খান
Published: 11th, February 2025 GMT
সম্প্রতি পরিবারের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে চিত্রনায়িকা পপি ও তার পরিবারকে নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিষয়টি থানা থেকে আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। এরই মধ্যে সামনে এলো অভিনেত্রী রুনা খানের বাবার সম্পত্তি বণ্টনের বিষয়। তবে এখানে দ্বন্দ্ব নয়, সঠিকভাবে তার বাবার সম্পতি ভাগ করেছেন তাঁর ভাই তুহিন খান।
বিষয়েটি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন অভিনেত্রী রুনা খান নিজেই। ফেসবুক স্ট্যাটাসে রুনা খান জানান, তার বাবার ২৫ কাঠার একটি জমি ছিল। সে জমি বিক্রির টাকা তার ভাই তাকে অর্ধেক বুঝিয়ে দিয়েছে।
রুনা লিখেছেন, ‘তুহিন বয়সে আমার দেড় বছরের ছোট, কিন্তু পড়াশুনায় ৫ বছর পেছনে! আম্মা-আব্বু আমাকে ৫ বছর বয়সে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুলে সরাসরি ক্লাস টুতে ভর্তি করান। আর তাকে ৫ বছরে প্লে-গ্রুপ থেকে ক্লাস-টু উঠতে উঠতে তার বয়স ১০।’
এরপর অভিনেত্রী লেখেন, ‘তিনি যখন ইডেনে অনার্সে ভর্তি হন তখন তার ভাই ৯ম শ্রেণিতে পড়েন। পারিবারিক বাস্তবতায় রুনাকে টিউশনি করে পড়াশোনা করতে হয়েছে, সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। সংসারের পিছনে রুনার অবদান ভুলেননি তার ভাই। জমি বিক্রির টাকা ভাগ করার সময় সবাই তুহিনকে বলেছে, তোমার সম্পত্তি এক টাকা হলে রুনার দশ টাকা। ও তোমার চেয়ে দশগুণ আয়ও করে। জবাবে তুহিন বলেছেন, রুনার আমার থেকে ১০ গুন বেশি আছে তাই অর্ধেক দিলাম, নইলে ওকে পুরাটা দিতাম। বাপের ২৫ কাঠা জমি যে ২৫ বছর আগেই বেঁচে খেতে হয়নি, তার কারণ রুনা।’
রুনা লিখেছেন, ‘আব্বুর রিটায়ার করার পর কোন একটা আত্মীয়-স্বজন ১ টাকা দিয়ে সাহায্য করেনি, রুনা জীবনে ১ টা টাকা কারোর কাছে সাহায্য চায়নি, ধার করেনি। ১৮ বছর বয়স থেকে টিউশনি করে নিজে চলেছে-সংসার চালিয়েছে-আমাকে মানুষ করে! এইজন্যই তো এই জমি আছে, নইলে তো জমি কবেই বেঁচে খেতে হতো! আব্বুর জমির পুরাটা ওর ভাগ। ওর অনেক আছে তাই ওর ভাগ থেকে অর্ধেক আমি নিলাম।’
রুনা সবশেষে লেখেন, ‘আমি যা করেছি তা এই দেশের বহু মেয়ে হয়তো পরিবারের-ভাইয়ের জন্য করে। তবে আমার ভাই যা করলো গত সপ্তাহে, তা এই দেশের কয়জন ভাই বাপের সম্পত্তি ভাগের ক্ষেত্রে বোনদের সাথে করে, তা ঠিক জানি না। আমার থেকে শেখার তেমন কিছু না থাকলেও, আমার ভাইয়ের থেকে এদেশের ছেলেরা শিখতে পারেন। মনে মনে হাসি আর ভাবি, অর্থ-বিত্ত-বিখ্যাত না হলেও ভাই আমার মানুষ হয়েছে। সত্যিকারের মানুষ!’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সবার নজরের বাইরে থাকা চৈতী দেশের জন্য আনল স্বর্ণপদক
একটু বড় হওয়ার পর মেয়েকে দেখে চিন্তায় পড়ে যান মা–বাবা। অন্য শিশুদের মতো বাড়ছে না সে। হাত–পা ছোট, উচ্চতাও থমকে গেছে। পরে বুঝতে পারেন—চৈতী বামন।
যে মেয়েকে নিয়ে একসময় দুশ্চিন্তার পাহাড়ে আটকা পড়েছিল পরিবার, আজ সেই চৈতীই আনন্দের আলো ছড়াচ্ছে। দেশের জন্য প্রথমবারের মতো এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছে চৈতী রানী দেব।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামের শিলু রানী দেব ও সত্য দেবের মেয়ে চৈতীর বয়স ১৩ বছর। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। কিন্তু তার লক্ষ্য নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫–এ বর্শা নিক্ষেপ ও ১০০ মিটার দৌড়ে সে জিতে নিয়েছে দুটি স্বর্ণপদক। ৭ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
চৈতীর প্রতিভা আছে। অনুশীলনে সে খুব আন্তরিক। সে কিছু করতে চায়। আশা করছি, ওকে দিয়ে একটা ভালো ফলাফল পাবমেহেদী হাসান, বিকেএসপির প্রধান প্রশিক্ষকচৈতীর স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়টি দুবাই থেকে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্সের (শি) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী শারমিন ফারহানা চৌধুরী।
যে মেয়েকে সবাই দেখত শুধু উচ্চতায়ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চৈতী একসময় গ্রামবাসীর নজরে পড়ত শুধু তার খর্বাকৃতির জন্য। খেলাধুলায় তার যে অসাধারণ প্রতিভা আছে, তা ছিল চোখের আড়ালে।
তবে এই ছবি এখন বদলে গেছে। গ্রামবাসী বাড়িতে এসে খোঁজ নেন। শিক্ষকেরা খেলতে উৎসাহ দেন, ছবি তোলেন। স্কুলে সে এখন ‘তারকা’।
দুবাইয়ে বর্শা নিক্ষেপে স্বর্ণপদক জয়ের পর চৈতী