সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া যেতে বিমান ভাড়ায় ছাড় পাবেন কর্মীরা
Published: 11th, February 2025 GMT
আকাশপথে সৌদি আরব ও মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের ভাড়ায় বিশেষ ছাড় দিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ‘ওয়ার্কার ফেয়ার’ নামে এ সুবিধা চার মাস চলবে। তবে নতুন কর্মী ভিসা ও ওয়ানওয়ে (একক যাত্রা) টিকিটে এ সুবিধা মিলবে। মঙ্গলবার ট্রাভেল এজেন্টদের শীর্ষ সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) এসব তথ্য জানিয়েছে।
ই-মেইলে বিমান ট্রাভেল এজেন্টদের বলেছে, ওয়ার্কার ফেয়ারের আওতায় ঢাকা থেকে সৌদি আরবের ভিত্তি ভাড়া (কর বাদে) ৩৬০, ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুরের ১৫০ ও ঢাকা ছাড়া অন্য কোনো জায়গা থেকে কুয়ালালামপুরের ভিত্তি ভাড়া হবে ১৭৫ ডলার।
সূত্র জানায়, নতুন ভাড়ায় ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে একক যাত্রায় টিকিটের দাম পড়বে ২৮ হাজার ১৭৮ টাকা এবং ঢাকা-জেদ্দা, রিয়াদ, দাম্মাম রুটে ৫৪ হাজার ৫৪ টাকা। বর্তমানে ট্রাভেল এজেন্টদের কাছে ঢাকা থেকে সৌদি আরবের ভিত্তি ভাড়া ৪০০ থেকে ৪৮০ এবং মালয়েশিয়ার জন্য ৩০০ থেকে ৩৫০ ডলার নেওয়া হয়।
বিমান কর্তৃপক্ষ বলেছে, ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত এ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। সুবিধা পেতে যাত্রীকে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ক্লিয়ারেন্স কার্ড বা সত্যায়িত ভিসা প্রয়োজন হবে। ওমরাহ ভিসা, ফ্যামিলি ভিজিট বা রেসিডেন্স ভিসাধারীরা বিশেষ এ ভাড়া সুবিধা পাবেন না। আবার টিকিট স্বেচ্ছায় পরিবর্তন, রিফান্ড চার্জ ও অন্যান্য শর্তাবলি ভাড়া পরিচালনার নিয়ম অনুযায়ী হবে। ভাড়া যে কোনো সময় পূর্ব বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই পরিবর্তন হতে পারে।
আটাব মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ জানান, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়াগামী নতুন শ্রমিকদের জন্য বিমান ভাড়া কমাতে তারা দীর্ঘদিন দাবি করে আসছিলেন। মঙ্গলবার বিমান চিঠি পাঠিয়ে সেই দাবিতে সাড়া দিয়েছে। ফলে এখন থেকে নতুন শ্রমিকরা কম খরচে দেশ দুটিতে যেতে পারবেন।
গত ২২ জানুয়ারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যফবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে আটাবের জরুরি সভা হয়। সেখানে সৌদি ও মালয়েশিয়াগামী নতুন শ্রমিকদের বিমান ভাড়া কমানোর দাবি জানান আটাব নেতারা।
এদিকে শ্রমিক ভিসা নিয়ে বিদেশগামী কর্মীদের জন্য বিশেষ ভাড়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে পরিপত্র জারি করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। গতকাল যাত্রীদের স্বার্থ সংরক্ষণে বিমান টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে ১০ নির্দেশনার মধ্যে এ তথ্য রয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনাকারী এয়ারলাইন্স ও ট্রাভেল এজেন্সি শ্রমিক ভিসা নিয়ে বিদেশগামী শ্রমিক বা কর্মীদের জন্য বিশেষ বিমানভাড়ার ব্যবস্থা করবে। যদিও এতে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য নির্দেশনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো– মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়াসহ প্রবাসী কর্মীদের টিকিট ভাড়া কমানোর জন্য আগামী সাত দিনের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ সব এয়ারলাইন্স ও বোর্ড অব এয়ারলাইন্স রিপ্রেজেন্টেটিভস (বিএআর) পদক্ষেপ নেবে।
শিগগির গ্রুপ-টিকিট বুকিংসহ যেকোনো প্রকার টিকিট বুকিংয়ের সময় ভ্রমণেচ্ছু যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বর, পাসপোর্টের ফটোকপিসহ বুকিং সম্পন্ন করতে হবে। বুকিংয়ের তিন দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট যাত্রীর নামে টিকিট ইস্যু না হলে ওই সময় উত্তীর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এয়ারলাইন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে টিকিট বাতিল করবে।
গ্রুপ-বুকিংয়ের ক্ষেত্রে বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে টিকিটের প্রকৃত বিক্রিমূল্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে জানাতে হবে এবং মন্ত্রণালয় তা নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে। সব ধরনের এয়ার টিকিট অনলাইনে বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে এবং বিক্রি করা টিকিটের দাম অনলাইনে এবং টিকিটের গায়ে প্রদর্শিত থাকতে হবে।
চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও কিংবা চাহিদার অতিরিক্ত টিকিট মজুত করে অন্য এজেন্টের মাধ্যমে এয়ার টিকিট বিক্রির কারণে টিকিটের দাম বাড়লে বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২২- এর বিধি-১৫ অনুযায়ী মূল ট্রাভেল এজেন্সির নিবন্ধন সনদ স্থগিত বা বাতিল করা হবে। বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ অনুযায়ী অনিবন্ধিত ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে টিকিট বিক্রি বন্ধ করতে হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স দ আরব কর ম দ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হচ্ছে সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে
জালিয়াতির মাধ্যমে এলসির বিপরীতে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে পাঁচটি মামলা করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন, তাতে বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানও আসামি হতে যাচ্ছেন।
আজ সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয় মামলাগুলোর অনুমোদন দেয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি, শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান রহমানের পাশাপাশি তাঁর ছেলে, ভাই, ভাতিজা, জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে এই মামলাগুলো হবে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, অনুমোদিত পাঁচ মামলায় ৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে মোট ২১ কোটি ৫৫ লাখ ২৮ হাজার ৮০১ মার্কিন ডলার বা প্রায় ১ হাজার ৯৩৯ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় সালমান এফ রহমান ছাড়া আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর ছেলে শায়ান এফ রহমান, ভাই বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সোহেল এফ রহমান, সোহেল রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমান, বেক্সিমকো গ্রুপের পরিচালক ইকবাল আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওসমান কায়সার চৌধুরী, পরিচালক এ বি সিদ্দিকুর রহমান, মাসুদ ইকরামুল্লাহ খান, শাহ মঞ্জুরুল হক ও রীম এইচ শামসুদ্দোহা।
এ ছাড়া স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ারুল বাশার ও পরিচালক নাসরিন আহমেদ, ক্রিসেন্ট অ্যাকসেসরিজের এমডি আবু নাঈম মাহমুদ সালেহিন ও পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তানভীর, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি মোহাম্মদ আলিফ ইবনে জুলফিকার ও পরিচালক নুসরাত হায়দার, পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি ওয়াসীউর রহমান ও পরিচালক রিজিয়া আক্তার, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এমডি সালাউদ্দিন খান মজলিস ও পরিচালক আবদুর রউফ, কাঁচপুর অ্যাপারেলস লিমিটেডের এমডি মাহফুজুর রহমান খান ও পরিচালক সৈয়দ তানবির এলাহী আফেন্দী সম্ভাব্য আসামির তালিকায় রয়েছেন।
জনতা ব্যাংকের মধ্য থেকে আসামি করা হচ্ছে ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুছ ছালাম আজাদ ও আবদুল জব্বার, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত উপমহাব্যবস্থাপক আবদুর রহিম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক শহিদুল হক, অবসরপ্রাপ্ত ডিজিএম (রপ্তানি বিভাগ) মমতাজুল ইসলাম, সিনিয়র অফিসার রফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক সালেহ আহম্মেদ, অবসরপ্রাপ্ত এজিএম মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক এজিএম (রপ্তানি) মোহাম্মদ শাজাহান, সাবেক এজিএম (রপ্তানি) হুমায়ুন কবির ঢালী ও প্রিন্সিপাল অফিসার শ ম মাহাতাব হোসাইন বাদশাকে।
দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামিদের যোগসাজশে জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচার করা হয়। এর মধ্যে পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেডের নামে ৫ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ দশমিক ২৫ ডলার, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেডের নামে ১ কোটি ৮৮ লাখ ৩ হাজার ৬৫৮ দশমিক ৯১ ডলার, কাঁচপুর অ্যাপারেলস লিমিটেডের নামে ৮ কোটি ৪০ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৭ দশমিক ৪৫ ডলার, স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেডের নামে ১ কোটি ৪৭ লাখ ২৯ হাজার ৩৪০ ডলার এবং ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে ৪ কোটি ৭৭ লাখ ১৫ হাজার ৪৮২ দশমিক ৪৬ ডলার আত্মসাৎ হয়।
সব মিলিয়ে আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২১ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা।
সাবেক সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কয়েক দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে রয়েছেন। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলা হয়।