আকাশপথে সৌদি আরব ও মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের ভাড়ায় বিশেষ ছাড় দিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ‘ওয়ার্কার ফেয়ার’ নামে এ সুবিধা চার মাস চলবে। তবে নতুন কর্মী ভিসা ও ওয়ানওয়ে (একক যাত্রা) টিকিটে এ সুবিধা মিলবে। মঙ্গলবার ট্রাভেল এজেন্টদের শীর্ষ সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) এসব তথ্য জানিয়েছে।

ই-মেইলে বিমান ট্রাভেল এজেন্টদের বলেছে, ওয়ার্কার ফেয়ারের আওতায় ঢাকা থেকে সৌদি আরবের ভিত্তি ভাড়া (কর বাদে) ৩৬০, ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুরের ১৫০ ও ঢাকা ছাড়া অন্য কোনো জায়গা থেকে কুয়ালালামপুরের ভিত্তি ভাড়া হবে ১৭৫ ডলার।

সূত্র জানায়, নতুন ভাড়ায় ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে একক যাত্রায় টিকিটের দাম পড়বে ২৮ হাজার ১৭৮ টাকা এবং ঢাকা-জেদ্দা, রিয়াদ, দাম্মাম রুটে ৫৪ হাজার ৫৪ টাকা। বর্তমানে ট্রাভেল এজেন্টদের কাছে ঢাকা থেকে সৌদি আরবের ভিত্তি ভাড়া ৪০০ থেকে ৪৮০ এবং মালয়েশিয়ার জন্য ৩০০ থেকে ৩৫০ ডলার নেওয়া হয়।

বিমান কর্তৃপক্ষ বলেছে, ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত এ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। সুবিধা পেতে যাত্রীকে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ক্লিয়ারেন্স কার্ড বা সত্যায়িত ভিসা প্রয়োজন হবে। ওমরাহ ভিসা, ফ্যামিলি ভিজিট বা রেসিডেন্স ভিসাধারীরা বিশেষ এ ভাড়া সুবিধা পাবেন না। আবার টিকিট স্বেচ্ছায় পরিবর্তন, রিফান্ড চার্জ ও অন্যান্য শর্তাবলি ভাড়া পরিচালনার নিয়ম অনুযায়ী হবে। ভাড়া যে কোনো সময় পূর্ব বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই পরিবর্তন হতে পারে।

আটাব মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ জানান, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়াগামী নতুন শ্রমিকদের জন্য বিমান ভাড়া কমাতে তারা দীর্ঘদিন দাবি করে আসছিলেন। মঙ্গলবার বিমান চিঠি পাঠিয়ে সেই দাবিতে সাড়া দিয়েছে। ফলে এখন থেকে নতুন শ্রমিকরা কম খরচে দেশ দুটিতে যেতে পারবেন।

গত ২২ জানুয়ারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যফবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে আটাবের জরুরি সভা হয়। সেখানে সৌদি ও মালয়েশিয়াগামী নতুন শ্রমিকদের বিমান ভাড়া কমানোর দাবি জানান আটাব নেতারা।

এদিকে শ্রমিক ভিসা নিয়ে বিদেশগামী কর্মীদের জন্য বিশেষ ভাড়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে পরিপত্র জারি করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। গতকাল যাত্রীদের স্বার্থ সংরক্ষণে বিমান টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে ১০ নির্দেশনার মধ্যে এ তথ্য রয়েছে।

পরিপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনাকারী এয়ারলাইন্স ও ট্রাভেল এজেন্সি শ্রমিক ভিসা নিয়ে বিদেশগামী শ্রমিক বা কর্মীদের জন্য বিশেষ বিমানভাড়ার ব্যবস্থা করবে। যদিও এতে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য নির্দেশনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো– মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়াসহ প্রবাসী কর্মীদের টিকিট ভাড়া কমানোর জন্য আগামী সাত দিনের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ সব এয়ারলাইন্স ও বোর্ড অব এয়ারলাইন্স রিপ্রেজেন্টেটিভস (বিএআর) পদক্ষেপ নেবে।

শিগগির গ্রুপ-টিকিট বুকিংসহ যেকোনো প্রকার টিকিট বুকিংয়ের সময় ভ্রমণেচ্ছু যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বর, পাসপোর্টের ফটোকপিসহ বুকিং সম্পন্ন করতে হবে। বুকিংয়ের তিন দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট যাত্রীর নামে টিকিট ইস্যু না হলে ওই সময় উত্তীর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এয়ারলাইন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে টিকিট বাতিল করবে।

গ্রুপ-বুকিংয়ের ক্ষেত্রে বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে টিকিটের প্রকৃত বিক্রিমূল্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে জানাতে হবে এবং মন্ত্রণালয় তা নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে। সব ধরনের এয়ার টিকিট অনলাইনে বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে এবং বিক্রি করা টিকিটের দাম অনলাইনে এবং টিকিটের গায়ে প্রদর্শিত থাকতে হবে।

চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও কিংবা চাহিদার অতিরিক্ত টিকিট মজুত করে অন্য এজেন্টের মাধ্যমে এয়ার টিকিট বিক্রির কারণে টিকিটের দাম বাড়লে বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২২- এর বিধি-১৫ অনুযায়ী মূল ট্রাভেল এজেন্সির নিবন্ধন সনদ স্থগিত বা বাতিল করা হবে। বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ অনুযায়ী অনিবন্ধিত ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে টিকিট বিক্রি বন্ধ করতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স দ আরব কর ম দ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন

প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।

শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।

আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।

দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।

২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।

আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।

সূত্র: এনবিসি নিউজ

আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ