আকারটা সফেদার মতো। পাকলে ঘন হলুদ বর্ণ ধারণ করে। ভেতরের শাঁসটা পরিচিত কোনো ফলের মতো নয়। একেবারেই আলাদা এর স্বাদ। গাঢ় হলুদ শাঁস মুখে দিলে মনে হবে ডিমের কুসুমের সঙ্গে কেউ ক্রিম আর মধু মিশিয়ে দিয়েছে। মুখে লেগে থাকবে অনেকক্ষণ।

পার্বত্য চট্টগ্রামের বৈচিত্র্যময় ফলের ভান্ডারে যোগ হওয়া নতুন এই ফলের নাম বারি টিসা-১। টিসা ফল নামেই আপাতত একে ডাকা হচ্ছে। পাঁচ বছর গবেষণা করে রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের গবেষকেরা ফলিয়েছেন আমেরিকা মহাদেশের মেক্সিকোর এই ফল।

আগামী এক বছরের মধ্যে কৃষকদের কাছে ফলটি পৌঁছে দেওয়া সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা। দক্ষিণ মেক্সিকো ও মধ্য আমেরিকার স্থানীয় এ ফল বাংলাদেশের বাজারে সাড়া জাগাবে বলে মনে করেন গবেষকেরা।

রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে আমেরিকা ও মেক্সিকো থেকে ৪ জাতের টিসা ফলের চারা পরীক্ষার জন্য নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে একটি প্রজাতি দেখতে ডিমের মতো, অন্যটি অনেকটা সফেদা ফলের মতো। বাকি দুটি কিছুটা লম্বা আকারের। ডিম আকারের জাতটিতে ৪ থেকে ৫ বছর বয়সী গাছে একবারে ৪০০ থেকে ৫০০টি ফল ধরে। প্রতিবছর ফলন দেয়। আকারের কারণে একে এগফ্রুট নামেও ডাকা হয়। এ জাতটি পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য সম্ভাবনাময় বলে মনে করছেন গবেষকেরা। আবার এ ফল দিয়ে কেক, পুডিং, আইসক্রিম, জুস ইত্যাদি তৈরি করা যায়।

গবেষকেরা জানান, পাহাড়ি অঞ্চলের আবহাওয়া, মাটি, তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত টিসা ফল চাষের জন্য উপযোগী। বিশেষ করে নভেম্বর-ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে অধিক ফলন পাওয়া যায়। ফলের ওজন গড়ে ১৭০ থেকে ১৯৫ গ্রাম। প্রতি গাছে ৬৫ থেকে ৭০ কেজি ফল ধরে। গাছের বয়স ভেদে ফলনের তারতম্য ঘটে। পরিপক্ব ফলের রং ডিমের কুসুমের মতো হলুদ হয়। বংশবিস্তারের জন্য বীজ থেকে টিসা ফলের চারা উৎপাদনের পাশাপাশি গ্রাফটিং বা কলমের মাধ্যমেও চারা উৎপাদন করা যায়। ফলটি ভিটামিন- এ, সি, মিনারেল (ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম) সমৃদ্ধ।

পাকা টিসা ফলের ভেতরটা দেখতে একেবারে ডিমের কুসুমের মতো। রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে। সম্প্রতি তোলা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকের লাশ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিক সৈয়দ মাসুম বিল্লাহর (২০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মাসুমের বাম হাতের একটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলার আলামত থাকায় তার পরিবার অভিযোগ করছে, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) দুপুরে কালনা মধুমতি সেতুর পশ্চিম পাশে রাস্তার ওপর মাসুমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ইজিবাইকের চালক সুজন শেখ তাকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

মাসুম বিল্লাহ লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে। 

আরো পড়ুন:

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলায় চট্টগ্রামে প্রথম অভিযোগপত্র দাখিল

সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা: ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

মাসুমের স্বজনরা জানিয়েছেন, শালনগর ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে মাসুমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ের খবর পেয়ে শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে তিনি ঢাকা থেকে লোহাগড়ায় আসেন। সকালে পরিবারের সঙ্গে তার শেষবার কথা হয়, এরপর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।

মাসুম বিল্লাহর চাচা শরিফুল ইসলাম বলেছেন, “আমরা শুনেছি, সকালে লোহাগড়া বাজারের একটি পার্লারে মেয়েটির সঙ্গে মাসুমের কথা হয়। এর পর মেয়েটির বাবার কাছ থেকে হুমকি পায় সে। পরে হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে মাসুমের মৃত্যুর খবর জানি। তার বাম হাতের  নখ উপড়ানো ছিল। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”

মাসুমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া ইজিবাইক চালক সুজন বলেছেন, “ঘটনাস্থলে কোনো দুর্ঘটনার চিহ্ন ছিল না। তবে মনে হয়েছে, কেউ মাসুমকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়েছে।”

লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম শনিবার (২ আগস্ট) সকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমরা মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় নিয়ে আসি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।” 

ঢাকা/শরিফুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ