খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে ৪ সংবাদকর্মী আহত, মামলা
Published: 16th, February 2025 GMT
গাজীপুরে গাছ কেটে বনভূমি জবর দখলের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন ৪ সংবাদকর্মী। এ সময় ৪ সংবাদকর্মীর ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। ভেঙে ফেলে ব্যবহৃত মোবাইল সেট ও মোটরসাইকেল।
গাজীপুর সদর উপজেলার নয়নপুর কড়ইতলা এলাকার এ ঘটনায় গতকাল শনিবার জয়দেবপুর থানায় একটি মামলা করেছেন হামলার শিকার সংবাদকর্মী রুকনুজ্জামান খান।
মামলার বাদী সংবাদকর্মী রুকনুজ্জামান খান বলেন, গাছ কেটে বনভূমি দখলের খবর পেয়ে মিলন শেখ, নজরুল ইসলাম ও রাসেল শেখ নামে ৩ সহকর্মীকে নিয়ে আমি নয়নপুর কড়ইতলা এলাকায় যাই। আমাদেরকে দেখে ওই এলাকার শাহাবুল ইসলাম, তার ছেলে আব্দুল্লাহ নীরব, নাঈম মিয়া ও তাদের সহযোগী মৃত আব্দুল রহমানের ছেলে আকবর আলসহ ১০-১৫ আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে। মোবাইল সেট নিয়ে ভেঙে ফেলে। মারপিট করে। এতে আমরা চারজন আহত হই।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, গাজীপুর উপজেলার নয়নপুর বড়ইতলী এলাকার শাহাবুল ইসলাম (৫৮), তার ছেলে আব্দুল্লাহ নীরব (২০), নাঈম মিয়া (২৮) তাদের সহযোগী মৃত আব্দুল রহমানের ছেলে আকবর আলীসহ (৫০) অজ্ঞাত ১০-১৫ জন সহযোগীর বিরুদ্ধে শনিবার মামলা দায়ের করেছেন রুকনুজ্জামান খান। আসামিদের গ্রেপ্তারে আমরা অভিযান চালাচ্ছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব দকর ম
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে তিন জেলায় বিক্ষোভ
মুন্সিগঞ্জ-৩ (সদর-গজারিয়া), দিনাজপুর-৫ (পার্বতীপুর-ফুলবাড়ী) ও পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ, মশালমিছিল, ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ও কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ করেছেন মনোনয়নবঞ্চিত নেতার অনুসারীরা।
৪ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ৩৬টি আসনে বিএনপির প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে বিএনপির কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক মো. কামরুজ্জামানকে মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।
অন্যদিকে দিনাজপুর-৫ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন এ কে এম কামরুজ্জামান। সেখানে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এ জেড এম রেজওয়ানুল হক।
আর পটুয়াখালী-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল আলম তালুকদার। এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক মু. মুনির হোসেন ও নির্বাহী সদস্য এ কে এম ফারুক আহম্মেদ তালুকদার।
দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারী নেতা-কর্মীরা নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
মুন্সিগঞ্জে মশালমিছিল
প্রার্থী পরিবর্তনের কর্মসূচিতে মুন্সিগঞ্জ ও মিরকাদিম পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ড ও সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের হাজারো নেতা-কর্মী অংশ নেন। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, আজ বিকেলের পর থেকে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনের সড়কে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে জড়ো হন মহিউদ্দিন আহমেদের সমর্থকেরা। এতে শহরের প্রধান সড়কের এক পাশ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মাগরিবের নামাজের পরপরই তাঁরা মশাল জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।
মিছিলটি শহরের সুপারমার্কেট, জুবলী সড়ক, পুরাতন কাছারি এলাকা ঘুরে আবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। এ সময় মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন নেতা-কর্মীরা। সেই সঙ্গে মনোনয়ন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
কর্মসূচিতে অংশ নেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আতোয়ার হোসেন, কাজী আবু সুফিয়ান, শহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান, মিরকাদিম পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওবাইদুর রহমান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবুল হাসেম, জেলা যুবদলের সাবেক সদস্যসচিব মোহাম্মাদ মাসুদ রানা, শহর যুবদলের আহ্বায়ক এনামুল হক প্রমুখ।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নেতারা বলেন, এখানে মনোনয়নের একমাত্র যোগ্য ছিলেন মো. মহিউদ্দিন। তৃণমূলের সবার পছন্দের প্রার্থী ছিলেন তিনি। অথচ তাঁকে বাদ দিয়ে অযোগ্য একজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এখানকার প্রতিটি ইউনিটের নেতারা কামরুজ্জামানের মনোনয়ন প্রত্যাখ্যান করেছেন। প্রার্থী পরিবর্তন করে মহিউদ্দিনকে মনোনয়ন দিতে হবে। অন্যথায় মহিউদ্দিন বা তাঁর পরিবার থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাউকে নির্বাচনে আনা হবে। এ সময় বিএনপি মনোনীত কামরুজ্জামানকে মুন্সিগঞ্জ শহরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
পার্বতীপুরে আধা বেলা শাটডাউন
দিনাজপুর-৫ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে আধা বেলা শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেছেন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
সকাল ১০টার দিকে পার্বতীপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল চৌরাস্তায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়। এ সময় পার্বতীপুর থেকে সৈয়দপুর, দিনাজপুর ফুলবাড়ী ও রংপুরগামী পরিবহনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পার্বতীপুর রেলওয়ে হেড ডিপো থেকে উত্তরাঞ্চলের ৮ জেলায় তেল সরবরাহ বন্ধ থাকে। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল গোলচত্বরে টায়ার জ্বালিয়ে পার্বতীপুরের সঙ্গে চারদিকের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে দেন বিক্ষোভকারীরা।
খবর পেয়ে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাদ্দাম হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। দুপুর ১২টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এদিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত পার্বতীপুর শহরের নতুন বাজারের কাপড় মার্কেট, স্বর্ণপট্টি, মনিহারি পট্টিসহ সব দোকানপাট বন্ধ রাখেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন পার্বতীপুর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি সালেহ আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক আকরাম হোসেন মাস্টার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোখলেছুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, পৌর বিএনপির সভাপতি আতিয়ার রহমান, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আজিজ, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
বাউফলে কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ
পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দলের একাংশের নেতা–কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মনোনয়নপ্রত্যাশী দুই প্রার্থীর নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা কাফনের কাপড় পরে উপজেলা পৌর শহরে এ কর্মসূচি পালন করেন।
বিকেল সোয়া চারটার দিকে বিএনপির উপজেলা, পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়ন কমিটির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল জব্বার মৃধার নেতৃত্বে মিছিলটির সামনের সারির নেতাদের গায়ে কাফনের কাপড় ছিল। মিছিলটি পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। এর আগে নেতা–কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল জব্বার মৃধা বলেন, আসনটিতে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শহিদুল আলম ১৭ বছর ধরে কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন না। তিনি দুর্দিনে কোনো নেতা-কর্মীর খোঁজখবর নেননি। কোনো হামলা-মামলার শিকার হননি। ২০০৮ সালে মামলাসংক্রান্ত জটিলতায় মনোনয়ন না পেয়ে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। এমন ব্যক্তিকে তাঁরা কোনোভাবেই মেনে নেবেন না। প্রার্থী পরিবর্তন করে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি জানান তিনি।