দৈনিক আলোর জগত পত্রিকার সম্পাদক-প্রকাশক ফারুক আলম তালুকদারের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্মরণসভা এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এ স্মরণসভা পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশকদের কষ্ট কান্নার বেদনাময় আলোচনা সভায় পরিণত হয়।

সেখানে বক্তাদের কণ্ঠে ফুটে উঠে সিমাহীন ক্ষোভ আর হতাশা। সম্পাদক ও প্রকাশক ফারুক আলম তালুকদের স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে এই প্রবীণ সম্পাদককে ডিএফপি থেকে কাঁদতে কাঁদতে বের হতে হয়েছে। ডিএফপির ফ্যাসিস্ট সরকারের দালালরা দৈনিক আলোর জগতের পত্রিকার মিডিয়া লাইসেন্স বাতিল করায় ভেঙে পড়েছিল সে। সেই কষ্ট-যন্ত্রণায় ফারুক আলম তালুকদারের জীবনে কাল হয়ে যায়, ধুকে-ধুকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।

বক্তারা আরো বলেন, ফারুক আলম তালুকদার ছিলেন সংবাদপত্র শিল্পের একনিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব, নিবেদিত প্রাণ। তার কর্মজীবনে প্রিন্ট মিডিয়ার অঙ্গনে অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন। তার মৃত্যু বাংলাদেশের সংবাদপত্র শিল্পের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তার স্মৃতি ও অবদান চিরকাল আমাদের মনে থাকবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো.

সহিদুল ইসলাম উপস্থিত সকল সম্পাদক প্রকাশক ও সাংবাদিকদের স্বান্তনার বাণী দিয়ে বলেন, চলমান গণমাধ্যম সংস্কারে এসব বৈষম্য পুরোপুরি দূর করা হবে। আগামী দিন হবে সাংবাদিক-সম্পাদকদের সুখময় পেশাদারিত্বের দিন।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ অনুসন্ধানী প্রতিবেদক সাঈদুর রহমান রিমন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ খন্দকার আলমগীর হোসাইন, বিএফইউজের সাবেক প্রচার সম্পাদক জাকির হোসেন, সাংবাদিক নেতা দৈনিক সমকাল পত্রিকার জ্যেষ্ঠ প্রতিদেক আছাদুজ্জামান, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার উপদেষ্টা মো. আবুল বাসার মজুমদার, দৈনিক রূপবাণী পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ফারুক আহমেদ, দৈনিক স্বাধীন সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আনোয়ার হোসেন আকাশ, দৈনিক একুশে বাণী পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আশরাফ সরকার, ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটির চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল ইসলাম, দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মোহাম্মাদ মাসুদ, সাবেক প্যারা কমান্ডো সেনা কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান ভূঞা, বাংলাদেশ সংবাদপত্র শিল্প পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুস সোহাগ, দৈনিক মুক্তির লড়াই পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, দৈনিক একুশের বাণী পত্রিকার প্রধান সম্পাদক আনিসুর রহমান প্রধান। দৈনিক আলোর জগত পত্রিকার প্রধান সম্পাদক তুহিন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সরকার জামাল।

অনুষ্ঠানের শুরুতে দৈনিক আলোর জগত পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক এইচ এম এরশাদ পবিত্র কোরআন থেকে তেলোয়াত করেন। অনুষ্ঠানে বক্তরা আরও বলেন, ফারুক আলম তালুকদার ছিলেন সাংবাদিকদের প্রাণের স্পন্দন। সাংবাদিকতার জীবনে সাংবাদিকদের হাতেখড়ি হিসাবে পরিচিত, আজকে অনেক ছোট বড় সাংবাদিক তাদের পেশাকে বেছে নেওয়ার পেছনে তার অবদান ছিল অপরিসীম। তার হাত ধরে দেশে আজ হাজার হাজার সাংবাদিক বিভিন্ন পত্র পত্রিকা, প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রিক মিডিয়া, টিভি চ্যানেলসহ বিভিন্ন স্থানে কর্মরত আছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স মরণসভ অন ষ ঠ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পটুয়াখালীতে নিজ উপজেলায় অবরুদ্ধ নুরুল হক, উদ্ধারে সেনাবাহিনী–পুলিশ

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় পাতাবুনিয়া বটতলা বাজারে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে নুরুল হক ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে অভিযোগ করেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাসান মামুনের অনুসারীরা তাঁকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।

জানা গেছে, রাতে বকুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের পাতাবুনিয়া এলাকায় আয়োজিত এক স্মরণসভায় অংশ নিয়ে ফেরার পথে অবরুদ্ধ হন নুরুল হক। এর ঘণ্টা তিনেকের মাথায় সেনাবাহিনীর দুটি গাড়ী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

তবে রাত দেড়টার দিকে নুরুল হক ফেসবুকে দেওয়া আরেকটি পোস্টে তখনো অবরুদ্ধ থাকার কথা জানান। নুরুল হক লিখেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে ‘সন্ত্রাসীদের’ রাস্তা থেকে হটাতে পারেনি।

শুরুতে দেওয়া পোস্টে নুরুল হক লিখেছেন, ‘গলাচিপা উপজেলার পাতাবুনিয়া বটতলা বাজারে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের অনুসারীরা রাস্তায় গাছ ফেলে গুলতি, রড, রামদা নিয়ে আমাদের পথরোধ করেছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় কয়েকজনকে মারধর করে দুটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করেছে।’

পরে সেখান থেকে ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় নুরুল হক জানান, বৃহস্পতিবার রাতে গলাচিপায় গণসংযোগ কর্মসূচি হিসেবে কালারাজা বাজারে একটি দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন এবং কুমারখালী বাজারে একটি পথসভায় অংশ নেন তিনি। রাত ১০টার দিকে তাঁর দলীয় কর্মী প্রয়াত বাদল মেম্বারের স্মরণসভায় অংশ নিয়ে গলাচিপার উদ্দেশ্যে রওনা হন।

এ সময় পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুনের অনুসারীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁর পথরোধ করে, দুটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। তখনই তিনি জেলা পুলিশ সুপার ও গলাচিপা থানার ওসিকে বিষয়টি অবহিত করেন বলেও জানান নুরুল হক।

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা হাসান মামুন প্রথম আলোকে বলেন, নুরুল হক নূর এলাকায় উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। তিনি গত বুধবার প্রকাশ্যে একটি ঠিকাদারি কাজ নিয়ে জেলা বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার চরবিশ্বাস বাজারে তাঁর লোকজন বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এসব উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণে এলাকার লোকজন নুরুল হকের ওপর ক্ষিপ্ত হতে পারেন।

হাসান মামুন আরও বলেন, ‘আমি এখন ঢাকায় আছি। এসব ঘটনা ফেসবুকে দেখেছি। ভিপি নূরের অবরুদ্ধ হওয়ার বিষয়টি জেনে তাঁকে উদ্ধারের জন্য আমি সেনাবহিনী ও পুলিশ-প্রশাসনকে আহ্বান জানিয়ে ফেসবুকে পোষ্ট করেছি। আমি চাই, গলাচিপা উপজেলার পরিবেশ শান্ত ও সুশৃঙ্খল থাকুক।’

পরবর্তীতে নুরুল হকের সঙ্গে থাকা গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় আর্ন্তজাতিকবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল আমীন মুঠোফোনে জানান, সেনাবাহিনী আর পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা দিতে অপারগতা জানিয়ে নুরুল হকসহ তাঁদের গলাচিপা ছেড়ে পটুয়াখালী জেলা শহরে চলে যেতে অনুরোধ জানানো হয়। তবে তাঁরা গলাচিপা ডাকবাংলোয় রাতে থাকার জন্য রওনা হয়েছেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে একাধিকবার চেষ্টা করেও গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশাদুর রহমানের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গলাচিপায় ভিপি নুরকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ 
  • পটুয়াখালীতে নিজ উপজেলায় অবরুদ্ধ নুরুল হক, উদ্ধারে সেনাবাহিনী–পুলিশ