Samakal:
2025-12-13@19:11:47 GMT

২৯ বছর অপেক্ষার অবসান

Published: 18th, February 2025 GMT

২৯ বছর অপেক্ষার অবসান

ক্রিকেট পাকিস্তানে কেবল একটি খেলা নয়; এটি তাদের উত্তরাধিকার, আবেগ, প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই খেলাটিকে অবলম্বন করে দিন কাটাচ্ছে, জাতি গঠনের হাতিয়ারও এই ক্রিকেট। করাচির ঘিঞ্জি চায়ের ধাবা থেকে শুরু করে লাহোরের অলিগলি, ইসলামাবাদের জৌলুস কিংবা বেলুচিস্তানের পাহাড়ঘেরা ছোট্ট গাঁয়ে ক্রিকেটই প্রধান উপজীব্য। সেই পাকিস্তানে ২৯ বছর পর আইসিসি ইভেন্ট হতে যাচ্ছে, তাই সাজসাজ রব তো পড়বেই।

রোববার রাতে লাহোরে যার কিছুটা দেখা মিলেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরুর দু’দিন আগে ঐতিহাসিক লাহোর ফোর্টে ‘দেওয়ান-ই-খাস’ নামক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আসরের পর্দা উন্মোচন হয়েছে। ক্রিকেটীয় নানা বিষয়ের পাশাপাশি কনসার্ট, আতশবাজি, আলোর খেলায় মোহনীয় হয়ে উঠেছিল লাহোর দুর্গ। ১৯ ফেব্রুয়ারি করাচিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।

লাহোর ফোর্টে জাঁকজমকপূর্ণ পর্দা উন্মোচন অনুষ্ঠানে আসন্ন টুর্নামেন্টের দারুণ একটি প্রিভিউ নানা বর্ণে ফুটিয়ে তোলা হয়। আলোক ছটায় দুর্গের সদর দরজায় মোহনীয়ভাবে ভেসে উঠছিল সবকিছু। সেখানে একটা বড় অংশজুড়ে ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও ছিল। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সেই আসর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সর্বশেষ আয়োজন, যেখানে আবার ভারতকে দাপটের সঙ্গে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান। পর্দা উন্মোচন অনুষ্ঠানে ছিলেন সরফরাজ খানের নেতৃত্বাধীন ২০১৭ সালের ট্রফিজয়ী দলের সদস্যরা। মঞ্চে তুলে ধরা হয় পাকিস্তানের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি।

পাকিস্তানে সর্বশেষ আইসিসি ইভেন্ট হয়েছিল ১৯৯৬ ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ভারতের সঙ্গে ওই আসরের যৌথ আয়োজক ছিল তারা। এর পর নিরাপত্তা ইস্যু, রাজনৈতিক অস্থিরতা পাকিস্তান থেকে ক্রমেই হারিয়ে যেতে থাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলের ওপর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা সে কফিনে যেন শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছিল। এর অনেক বছর পর পাকিস্তানে ফিরে ক্রিকেট। দুই বছর আগে এশিয়া কাপ দিয়ে তারা কোনো আন্তর্জাতিক আসর আয়োজন করেছিল। আর এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়ে পাকিস্তানে পুরোদমে ফিরছে ক্রিকেট। 

বিশ্ব ক্রিকেটে পাকিস্তানের প্রভাব-প্রতিপত্তি দেখানোর মওকাও এই আসর। যদিও ভারত এই আসর খেলতে পাকিস্তান যাচ্ছে না বলে কিছুটা অপূর্ণতা থাকছেই। তার পরও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন পাকিস্তানের জন্য বিরাট কিছু। তাই তো লাহোরের পর্দা উন্মোচন অনুষ্ঠানে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) সভাপতি মহসিন নাকভী বলেন, ‘এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়ে ২৯ বছর পর পাকিস্তানে আইসিসি ইভেন্ট ফিরছে। তাই এই আসর আমাদের কাছে কোনো টুর্নামেন্টের চেয়েও বড় কিছু। পাকিস্তানের আতিথেয়তা ও ক্রিকেটের ভালোবাসা দেখানোর এটি দারুণ একটি সুযোগ।’

লাহোর ফোর্টে এই ঐতিহাসিক আয়োজনের পর্দা উন্মোচন অনুষ্ঠান আয়োজনের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এই শহরের সমৃদ্ধ ইতিহাস-ঐতিহ্যের পাশাপাশি ক্রিকেটের প্রতি অবদানের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন নাকভী। একই সঙ্গে পাকিস্তানি দর্শকদের মাঠে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি, ‘এখন স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ করার দায়িত্ব হলো আপনাদের।’ 

তবে এই জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে একটি বিষয় নিয়ে কিঞ্চিৎ বিতর্কও দেখা গেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নেওয়া ৮ দলের মধ্যে ৭ দলের পতাকা লাহোর স্টেডিয়ামে দেখা গেলেও ছিল না ভারতের পতাকা। কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, ভারত তো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে পাকিস্তান যাচ্ছে না। তারা দুবাইয়ে আসরের সব ম্যাচ খেলবে। সে জন্যই হয়তো পিসিবি তাদের পতাকা রাখেনি। এ ব্যাপারে অবশ্য পিসিবির বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ই আসর

এছাড়াও পড়ুন:

পশ্চিম তীরে ২০১৭ সালের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণ

অধিকৃত পশ্চিম তীরে অবৈধ ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণের কাজ অন্তত ২০১৭ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘ মহাসচিবের এক প্রতিবেদন থেকে এমনটা জানতে পেরেছে এএফপি। মূলত ২০১৭ সাল থেকে জাতিসংঘ এ ধরনের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে আসছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালে প্রায় ৪৭ হাজার ৩৯০টি আবাসন ইউনিটের পরিকল্পনা এগিয়ে নেওয়া ও এর অনুমোদন দেওয়া বা টেন্ডার প্রকাশ করা হয়েছে। এ সংখ্যা ২০২৪ সালের তুলনায় অনেক বেশি। গত বছর এ ধরনের আবাসন ইউনিটের সংখ্যা ছিল ২৬ হাজার ১৭০টির মতো।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এ সম্প্রসারণের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটি নিয়মিত উত্তেজনা উসকে দিচ্ছে, ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমিতে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে এবং একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন, গণতান্ত্রিক, ভৌগোলিকভাবে সংযুক্ত ও সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাবনা হুমকির মুখে ফেলছে।’

আরও পড়ুনইসরায়েলিদের বাধায় নিজেদের জমিতে যেতে পারেন না ফিলিস্তিনিরা, বিপর্যয়ে জলপাইশিল্প০৪ ডিসেম্বর ২০২৫

২০১৭ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে পশ্চিম তীরে প্রতিবছর গড়ে ১২ হাজার ৮১৫টি ইসরায়েলি আবাসন ইউনিট যুক্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন গুতেরেস। তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, আগের বছরগুলোর তুলনায় বসতির সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে।

১৯৬৭ সালে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল ও পরে অঞ্চলটিকে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করে নেয়। জেরুজালেমকে বাদ দিলে পশ্চিম তীরে বর্তমানে প্রায় ৫ লাখ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীর বসবাস। সেই সঙ্গে সেখানে প্রায় ৩০ লাখ ফিলিস্তিনিও রয়েছেন।

গুতেরেস বলেন, এ ধরনের তৎপরতা অবৈধ ইসরায়েলি দখলদারিকে আরও দৃঢ়, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং ফিলিস্তিনি জনগণের নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেদের নেওয়ার অধিকার ক্ষুণ্ন করছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়। এর জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় তাণ্ডব শুরু করে ইসরায়েল। তখন থেকে পশ্চিম তীরেও সহিংসতা ছড়িয়েছে দেশটি।

আরও পড়ুনগাজার ‘হলুদ রেখা’ থেকে সরবে না সেনা, এটিই নতুন সীমান্ত: ইসরায়েলি বাহিনীর প্রধান০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যের ভিত্তিতে এএফপির করা হিসাব অনুযায়ী, ওই সংঘাত শুরুর পর থেকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনা বা বসতি স্থাপনকারীদের হাতে অন্তত ১ হাজার ২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সশস্ত্র যোদ্ধারা যেমন আছেন, তেমন বেসামরিক মানুষেরাও আছেন।

একই সময় পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের হামলা বা ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে অন্তত ৪৪ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের সরকারি হিসাব অনুসারে এমন তথ্য জানা গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পশ্চিম তীরে ২০১৭ সালের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণ