চুলের ‘কেরাটিন ট্রিটমেন্ট’ করার ঘরোয়া উপায়
Published: 18th, February 2025 GMT
চুল পড়া রোধে ‘কেরাটিন ট্রিটমেন্ট’ খুব জরুরি। এই ট্রেটমেন্টের জন্য যেসব উপাদান প্রয়োজন সেগুলো ডিমের খোসাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। ডিমের খোসা দিয়ে যেভাবে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট করবেন, জেনে নিন।
চিকিৎসকেরা বলেন, ডিমের খোসাতে প্রচুর ক্যালশিয়াম রয়েছে। অনেকেই ডিমের খোসা চূর্ণ গাছের সার হিসেবে ব্যবহার করেন। আবার এই খোসা দিয়েই হেয়ার মাস্কও তৈরি করা যায়। চুলের গোড়া মজবুত করতে এই মাস্কের জুড়ি নেই। কারণ এই উপাদান চুলের গোড়ায় মেলানিন রঞ্জকের উৎপাদন বাড়াতে পারে এবং প্রোটিন তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। ডিমের খোসাতে ক্যালশিয়ামের পাশাপাশি, প্রচুর পরিমাণে থাকে ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এসব উপাদান মাথার ত্বকে পিএইচের ভারসাম্য বজায় রাখে।
ডিমের খোসার মাস্ক যেভাবে বানাবেন: ডিমের খোসা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর রোদে শুকিয়ে মিক্সারে চূর্ণ করে নিতে হবে। এই চূর্ণ বোতলে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। তারপর গোসলের সময় শ্যাম্পুর সঙ্গে ডিমের খোসা চূর্ণ মিশিয়ে দিন। সপ্তাহে তিন দিন এভাবে শ্যাম্পুর মিশ্রণ চুলে ব্যবহার করলে চুলের গোড়ায় জমে থাকা ধুলোময়লা ও মৃতকোষ দূর হবে। চুলের রুক্ষতা দূর হবে।
আরো পড়ুন:
দীপিকার হেয়ার স্টাইল
চুলের জন্য ভালো কলা ও মধুর মাস্ক
এ ছাড়া ডিমের খোসা চূর্ণ ও নারকেল তেল এক সঙ্গে মিশিয়ে হেয়ার মাস্ক বানাতে পারেন। এজন্য এক চামচের মতো ডিমের খোসা চূর্ণের সঙ্গে ২ চা চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ ভাল করে চুলে ও মাথার ত্বকে মালিশ করে ৩৫-৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তারপর হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে এক দিন এই প্যাক ব্যবহার করলে চুল লম্বা হবে। চুলের ঝলমলে ভাব বজায় থাকবে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ল র যত ন
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।