বাস্তব জীবনের গল্প কখনও কখনও সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। আর সেই স্থানে যদি থাকে সিনেমারই মানুষ, তাহলে বিষয়টি আরও আগ্রহের জন্ম দেয়। সম্প্রতি চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভীন পপির কথা যারা শুনেছেন তারা হয়তো কিছুটা আঁচ করতে পারবেন।

চার বছর আড়ালে থাকার পর মা ও বোনের থানায় জিডির খবর দিয়ে প্রকাশ্যে আসেন পপি। এবার রাখঢাক রাখেননি তিনি। বলা যায়, এতদিনের চাপা কষ্ট-যন্ত্রণা উগরে দিয়েছেন একটি ভিডিও বার্তা। এছাড়া বিয়ের সিদ্ধান্ত, মা-বোনদের সঙ্গে সম্পর্ক, সব কিছু নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে কথা বলেছেন পপি।

পপি জানান, তার বিয়ের পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু ২০১৯ সালে বাসায় একটা ‘ভয়াবহ দুর্ঘটনা’ ঘটে। সেদিন অনেক বড় অঙ্কের টাকা চুরি হয়। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে থানায় জিডি করেন। পরে তাঁকে রমনা থানায় ডাকা হয়।

পপি বলেন, ‘সেদিন আদনানকেও ডাকি। থানায় গিয়ে দেখলাম, আমার ভাইবোনেরা। ঘটনা চক্রে জীবন নিয়ে আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। মনে হলো, আমি কারও কাছে নিরাপদ নই। ফিল্মের কাজে সবার সঙ্গে মিশেছি ঠিকই, কিন্তু আপনজন কেউ ছিল না। বরাবরই আমি পরিবার অন্তঃপ্রাণ মানুষ। অথচ এই আমার কাছে পরিবারের সবাই অচেনা হয়ে গেলো। সম্পত্তি ও টাকাপয়সা নিয়ে জটিলতা শুরু হয়। জটিলতার এই পুরো সময়ে আদনান আমাকে ছায়ার মতো আগলে রেখেছে। কোনো জটিলতাই আমাকে স্পর্শ করতে দেয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওই সময়ে এমন একজন বন্ধুকে যদি না পেতাম, আমার জীবনটাই বিপন্ন হয়ে যেত। ২০২০ সালের দিকে আবার জটিলতা শুরু হয়। তখনো ভাবলাম, আমাকে মা-বোনেরা বাঁচতে দেবে না। বাসা থেকে বের হয়ে পড়ি। যোগাযোগ করি আদনানের সঙ্গে। এরপর আমার জায়গাজমির দলিল, ব্যাংকের কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্ট পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করি। বলতে পারেন, রীতিমতো জীবন বাঁচাতে বাসা থেকে পালিয়ে গেলাম। তখন আমার সামনে দুটি পথ খোলা, হয় আত্মহত্যা করতে হতো, নয়তো ওদের হাতে খুন হয়ে যেতে হতো’

স্বামী আদনানই তাঁকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন বলে জানান পপি। তিনি এও জানান, এই পরিস্থিতিতে তিনি বিয়ে করতে বাধ্য হন।

পপির কথায়, ‘২০২০ সালের নভেম্বরে বিয়ে করি বাসায় কাজি ডেকে। আমার আত্মীয়স্বজন ছিলেন। এটা সত্য, বিয়েতে আমার মাকে ডাকিনি। হয়তো এটা বিশ্বাস করবে না কেউ, কিন্তু এটাই সত্য, আমার মা চাইতো না আমি বিয়ে করে সংসারী হই।’

উল্লেখ্য, ‘রানীকুঠির বাকী ইতিহাস’, ‘মেঘের কোলে রোদ’, ‘গঙ্গাযাত্রা’ সিনেমার মতো বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তিনি নায়িকা থেকে ‘অভিনেত্রীর’র খেতাব পান। এমনকি তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন পপি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আদন ন

এছাড়াও পড়ুন:

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ২৭ পদের চাকরি পেতে আর কত অপেক্ষা

২০২০ থেকে ২০২৫—৫ বছর পেরিয়ে গেলেও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ২৭ ক্যাটাগরির পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনো সম্পন্ন হয়নি। করোনা মহামারি, ফুটবল ও ক্রিকেট বিশ্বকাপ, এমনকি একটি গণ-অভ্যুত্থান পার হলেও এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় চরম হতাশায় দিন কাটছে হাজারো চাকরিপ্রত্যাশীর।

২০২০ সালের ২৮ অক্টোবর ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের ৩৬ ক্যাটাগরির ১ হাজার ৫৬২টি পদের জন্য প্রথম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ২০২১ সালের ৩ অক্টোবর সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি আসে। কয়েক ধাপে লিখিত, মৌখিক এবং কয়েকটি পদের ব্যবহারিক পরীক্ষাও ২০২৩ সালে শেষ হয়। কিন্তু এরপরও ২৫ ক্যাটাগরির পদের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। অন্যদিকে, দুটি ক্যাটাগরির পদের পরীক্ষা এখনো অনুষ্ঠিতই হয়নি।

জানা যায়, ২০২৩ সালে একযোগে ২৬টি পদের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও একই বছরের ১ নভেম্বর মাত্র ৩টি পদের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এর আগে আরও ৬টি পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়, তবে একযোগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পরও ২৩টি পদের ফলাফল কেন প্রকাশ করা হয়নি, তার সদুত্তর দিতে পারছে না অধিদপ্তর।

লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষ হলেও আটকে আছে ফলাফল, আশাহত প্রার্থীরা

গবেষণা সহকারী পদে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া একজন প্রার্থী আক্ষেপ করে বলেন, ‘একই সঙ্গে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দিয়েও কারও চাকরি হলো, কারও হলো না। দুই বছরের বেশি সময় পার হয়েছে, কিন্তু ফলাফল হয়নি। এটা কোনো স্বাভাবিক ঘটনা হতে পারে না। আমরা অনেকবার স্মারকলিপি দিয়েছি, মানববন্ধন করেছি, কিন্তু অধিদপ্তর কোনো গুরুত্বই দেয়নি।’

অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে আবেদনকারী একজন বলেন, ‘আবেদন করতে তো টাকা লাগে। আমরা যাঁরা ছোট পদে আবেদন করি, তাঁদের আর্থিক অবস্থাও ভালো থাকে না। এরপর পরীক্ষা না হলে আরও হতাশ হতে হয়। পাঁচ বছর হয়ে গেছে, এখন আর পরীক্ষা হবে সে আশা করি না।’

আরও পড়ুনসহকারী শিক্ষক নিয়োগে দুই ধাপের লিখিত পরীক্ষা ২ জানুয়ারি১৭ ঘণ্টা আগেনিয়োগপ্রক্রিয়া বিলম্বের কারণ

নিয়োগপ্রক্রিয়া এত দীর্ঘ হওয়ার বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মীর সাজেদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের পদ সংরক্ষণের মেয়াদ থাকে তিন বছর। ফলে আমরা নতুন করে ডিপিসি (বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি) করেছি। কোটাসংক্রান্ত জটিলতাও ছিল। আমাদের কাজ প্রায় সমাপ্ত, দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা হবে।’ এত দিন কেন ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে আমি এই পদে যোগ দিয়েছি। আগে ঠিক কী কারণে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে ছিল, এ বিষয়ে আমার সঠিক জানা নেই।’

আরও পড়ুন৬৫৫০২ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ এখন ১০ম গ্রেড১৭ ঘণ্টা আগে

এ ছাড়া, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক (গ্রেড-১৬) ও অফিস সহায়ক (গ্রেড-২০) পদের পরীক্ষা নিয়োগবিধি সংশোধনের পর অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে পরিচালক জানিয়েছেন।

এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আগের প্রশাসনের রদবদলসহ অভ্যন্তরীণ কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া পিছিয়েছে। আগের প্রশাসক অধিদপ্তরে অনেক পদ শূন্য রেখে গিয়েছে । এসবের স্পষ্ট কোনো কারণ আমরা জানি না।’

আরও পড়ুনকানাডায় ৫ হাজার চিকিৎসকের স্থায়ী বসবাসের সুযোগ, বাংলাদেশ থেকে আবেদন সম্ভব কি?১৯ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুননর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই–এ চাকরি, পদ ১৩৭ ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অলসতা মোকাবিলার আধ্যাত্মিক কৌশল
  • পানছড়িতে তিন ভারতীয় নাগরিক গ্রেপ্তার
  • পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ২৭ পদের চাকরি পেতে আর কত অপেক্ষা