সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কথিত পীর মো. মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে হওয়া মামলায় আজ বুধবার সকালে তাঁকে নিজ আস্তানা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর শাগরেদ ও জামাতা মো. আবু নাইমকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

মিজানুর রহমান শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধুমঘাট অন্তাখালী গ্রামের প্রয়াত দীনদার গাজীর ছেলে। আবু নাইম শরীয়তপুরের সখীপুর থানার মোল্যাবাজার গ্রামের নুরুল হুদার ছেলে। নিজেকে ‘আল্লাহপাকের কুতুব ও ওলি’ দাবি করে মানুষের ‘অন্তর্চক্ষু খুলে দেওয়া’র নামে অসংখ্য মানুষের থেকে আর্থিক সুবিধা আদায়ের অভিযোগ আছে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে।

প্রতারণাসহ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে শ্যামনগরের শংকরকাঠি গ্রামের সিদ্দিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, মিজানের নির্দেশনায় তাঁর জামাতা আবু নাইম ‘শরিয়তের মানদণ্ডে ওলীগণের হালত’ নামীয় একটি বই প্রকাশ করেন। ওই বইয়ের বিভিন্ন অংশে আল্লাহ ও মহানবী (সা.

)–এর প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করা হয়েছে। এজাহারে আরও অভিযোগ করা হয়, নিজেকে ক্রসফায়ারের আসামি দাবি করে মিজান আরও অনেকের মতো সিদ্দিকুলের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা ধার নেন। পরবর্তীতে টাকা চাইলে ‘মাওলা দিচ্ছে না’ জানিয়ে টালবাহানা শুরু করে তাঁকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।

মিজানকে ‘ভণ্ড’ আখ্যায়িত করে গত শুক্রবার তাঁর আস্তানা গুঁড়িয়ে দিতে কয়েক হাজার মানুষ আস্তানা অভিমুখে রওনা দিয়েছিলেন। একপর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা জনতাকে আটকে দেন। তখন উপজেলা বাতিল প্রতিরোধ কমিটি ও উপজেলা ওলামা পরিষদের নেতারা মিজানকে আইনের আওতায় আনতে তিন দিনের সময়সীমা বেঁধে দেন। মিজানকে একজন প্রতারক দাবি করে তাঁকে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে শ্যামনগর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন কয়েকজন ব্যক্তি। তাঁরা দাবি করেছেন, মিজান তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবীর মোল্যা জানান, সিদ্দিকুল ইসলামের করা মামলার আসামি হিসেবে মিজানুর রহমান ও আবু নাইমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আবু নাইমের সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘শরিয়তের মানদণ্ডে ওলীগণের হালত’ নামের বইয়ের মাধ্যমে মুসলমান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগে তাঁদের দুজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম জ ন র রহম ন গ র প ত র কর শ য মনগর উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাকিমপুর সীমান্ত থেকে আটক ১৫ বাংলাদেশিকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে সাতক্ষীরার তলুইগাছা সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনা হয়। 

আরো পড়ুন:

কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি 

অবৈধ অস্ত্রের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে তথ্য সহায়তার আহ্বান বিজিবির

ফিরিয়ে আনা বাংলাদেশিদের মধ্যে আটজন নারী, দুইজন পুরুষ ও পাঁচজন শিশু। তারা সাতক্ষীরা সদর, শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার বাসিন্দা। তাদের রাতে সাতক্ষীরা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। 

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার হাকিমপুর সীমান্ত পার হওয়ার সময় বাংলাদেশি নাগরিকরা বিএসএফের কাছে আটক হন। তাদের মধ্যে রয়েছেন- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভেটখালী গ্রামের মো. শাহীন সানা, তার স্ত্রী নিলুফা ও কন্যা শাহিনা সুলতানা, একই উপজেলার নওয়াবেকি গ্রামের মিস সুরাইয়া ইয়াসমিন, মোছা. রাবিয়া বেগম, বড়কুপট গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম, লিপিকা খাতুন, নাজমা খাতুন, জিম তরফদার, বয়ারসিং গ্রামের মোছা. ফারহানা আক্তার ও তার ছেলে ফারহান ঢালী, উত্তর আটুলিয়া গ্রামের সেমিনা খাতুন, আশাশুনি উপজেলার হিজলিয়া গ্রামের রাবিয়া খাতুন ও রিয়াদ হাসান এবং সদর উপজেলার পায়রাডাঙ্গা গ্রামের ফুলমতি খাতুন।

সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামিনুল হক বলেন, “ভারতের হাকিমপুর সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকরা বিএসএফের হাতে আটক হন। পরবর্তীতে বিএসএফের আমুদিয়া কোম্পানি কমান্ডার বিকাশ কুমার সাতক্ষীরার তলুইগাছা কোম্পানি কমান্ডার আবুল কাশেমের নিকট পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে এসব বাংলাদেশিদের হন্তান্তর করেন।”

তিনি আরো বলেন, “বিজিবি ফেরত আনা নারী-পুরুষ ও শিশুদের সাতক্ষীরা থানায় হন্তান্তর করেছে। পরিচয় যাচাই শেষে তাদের পরিবারের কাছে হন্তান্তর করা হবে।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর