ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মামলায় শ্যামনগরের কথিত পীর মিজান গ্রেপ্তার
Published: 19th, February 2025 GMT
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কথিত পীর মো. মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে হওয়া মামলায় আজ বুধবার সকালে তাঁকে নিজ আস্তানা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর শাগরেদ ও জামাতা মো. আবু নাইমকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
মিজানুর রহমান শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধুমঘাট অন্তাখালী গ্রামের প্রয়াত দীনদার গাজীর ছেলে। আবু নাইম শরীয়তপুরের সখীপুর থানার মোল্যাবাজার গ্রামের নুরুল হুদার ছেলে। নিজেকে ‘আল্লাহপাকের কুতুব ও ওলি’ দাবি করে মানুষের ‘অন্তর্চক্ষু খুলে দেওয়া’র নামে অসংখ্য মানুষের থেকে আর্থিক সুবিধা আদায়ের অভিযোগ আছে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে।
প্রতারণাসহ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে শ্যামনগরের শংকরকাঠি গ্রামের সিদ্দিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, মিজানের নির্দেশনায় তাঁর জামাতা আবু নাইম ‘শরিয়তের মানদণ্ডে ওলীগণের হালত’ নামীয় একটি বই প্রকাশ করেন। ওই বইয়ের বিভিন্ন অংশে আল্লাহ ও মহানবী (সা.
মিজানকে ‘ভণ্ড’ আখ্যায়িত করে গত শুক্রবার তাঁর আস্তানা গুঁড়িয়ে দিতে কয়েক হাজার মানুষ আস্তানা অভিমুখে রওনা দিয়েছিলেন। একপর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা জনতাকে আটকে দেন। তখন উপজেলা বাতিল প্রতিরোধ কমিটি ও উপজেলা ওলামা পরিষদের নেতারা মিজানকে আইনের আওতায় আনতে তিন দিনের সময়সীমা বেঁধে দেন। মিজানকে একজন প্রতারক দাবি করে তাঁকে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে শ্যামনগর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন কয়েকজন ব্যক্তি। তাঁরা দাবি করেছেন, মিজান তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবীর মোল্যা জানান, সিদ্দিকুল ইসলামের করা মামলার আসামি হিসেবে মিজানুর রহমান ও আবু নাইমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আবু নাইমের সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘শরিয়তের মানদণ্ডে ওলীগণের হালত’ নামের বইয়ের মাধ্যমে মুসলমান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার অভিযোগে তাঁদের দুজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম জ ন র রহম ন গ র প ত র কর শ য মনগর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় পৃথক দুর্ঘটনায় নিহত ২
সাতক্ষীরায় পৃথক দুর্ঘটনায় দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাড়ি ও শ্যামনগর উপজেলার তারানপুরে এদুটি দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, কলারোয়া উপজেলার কেড়াগাছি ইউনিয়নের কাকডাঙ্গা গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে নাঈম হাসান (১৮) এবং শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের তারানপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে মাও. ফজলুর রহমান (৫৫)।
নিহত নাঈম হোসেন সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং ফজলুর রহমান শ্যামনগর উপজেলার দরগাহপুর এনডিএস মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক।
কেড়াগাছি গ্রামের শহীদুল ইসলাম জানান, তার ছেলে নাঈম হাসান ২০২০ সালে সেনাবাহিনীতে চাকরি পাওয়ার পর রাজশাহীতে চার মাস প্রশিক্ষণ দিয়ে বাড়ি চলে আসে। বর্তমানে সে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশুনা করার পাশপাশি সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের মোহরার হিসেবে কাজ করতেন।
প্রতিদিনের মতো সোমবার সকালে সে কর্মস্থলে আসার উদ্দেশ্যে মোটর সাইকেল যোগে বাড়ি থেকে বের হয়। পথিমধ্যে আগরদাড়ি মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সামনে পৌঁছালে সাতক্ষীরা থেকে বাঁশদহাগামি একটি পণ্যভর্তি ট্রাক (যার নাম্বার যশোর-ট-১১-১৬৫৬) তার মোটরসাইকেলটিকে চাপা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন।
স্থানীয়রা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘেষেণা করেন। বিক্ষুদ্ধ জনতা এসময় ঘাতক ট্রাকটি আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক রাশেদুজ্জামান জানান, হাসপাতালের আনার আগেই নাঈমের মৃত্যু হয়।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামিনুল হক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, শ্যামনগরের তারানপুর গ্রামে বিদ্যুৎ স্পর্শে মাওলানা ফজলুর রহমান নামে এক মাদ্রাসা প্রভাষকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল ৮টার দিকে নিজ বাড়ির প্রাচীরে মোটর দিয়ে পানি দেওয়ার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির মোল্লা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কারো কোন অভিযোগ না থাকায় প্রভাষক ফজলুর রহমানের মরদেহ পারিবারিকভাবে দাফন করা হয়েছে।
ঢাকা/শাহীন/এস