Samakal:
2025-06-15@23:08:10 GMT

আলোচনা উস্কে দিল ৩ ছবি

Published: 20th, February 2025 GMT

আলোচনা উস্কে দিল ৩ ছবি

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানায় নবনিযুক্ত ওসিকে শুভেচ্ছা জানানো উপলক্ষে কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি) ভাঙ্গা উপজেলা শাখার নেতাদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও কৃষক লীগের দুই নেতাকে দেখা গেছে। গত সোমবার ভাঙ্গা থানায় এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে গতকাল বুধবার গণঅধিকার পরিষদ ভাঙ্গা শাখার আহ্বায়ক মো.

আনিসুর রহমান জানান, এ বিষয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে।

গণঅধিকার পরিষদের ভাঙ্গা শাখার আহ্বায়ক আনিসুর রহমান ও সদস্য সচিব মো. আতিকুল্লাহ হেলাল স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, মিরু মাতুব্বরের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই। ১৭ ফেব্রুয়ারি ভাঙ্গা থানায় নবনিযুক্ত ওসি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসর মিরু মাতুব্বরের সঙ্গে ছবি তোলায় গণঅধিকার পরিষদ ভাঙ্গা শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব করিম শরীফকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করা হলো। তা ছাড়া কেন তাঁকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, তা আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে জানতে চেয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদের নেতা করিম শরীফ সমকালকে বলেন, তিনি নোটিশটি পেয়েছেন। নোটিশের জবাব যথাসময়ের মধ্যেই দেবেন। তাঁর দাবি, মিরু মাতুব্বরের সঙ্গে তাঁর কোনো সম্পর্ক কোনো দিন ছিল না, এমনকি তাঁকে চেনেনও না।

ওসি শফিকুল ইসলামের ভাষ্য, জিওপি নেতা আনিসুর রহমান তাঁকে জানিয়েছেন, ওই দুই নেতা (মিরু মাতুব্বর ও বিপুল মুন্সী) আগে আওয়ামী লীগ করতেন। তারা গণঅধিকার পরিষদে নতুন যোগ দিয়েছেন। এই থানায় তিনি (ওসি) সবেমাত্র যোগদান করেছেন, সবাইকে ঠিকমতো চেনেন না।

ফেসবুকে তিনটি ছবি ছড়িয়েছে। একটি ছবিতে দেখা যায়, ওসির সঙ্গে সাক্ষাতের আগে থানা ফটকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও কৃষক লীগের দু’জন নেতাকে নিয়ে ছবি তুলছেন গণঅধিকার পরিষদের ভাঙ্গা শাখার আহ্বায়ক আনিসুর রহমান ও সদস্য সচিব মো. আতিকুল্লাহ্‌ হেলালসহ দলের কয়েকজন নেতাকর্মী। দ্বিতীয় ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ওসিকে ফুলের তোড়া দিচ্ছেন নেতারা। এ সময় ওসির বাঁয়ে ছিলেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক মিরু মাতুব্বর, ভাঙ্গা পৌর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক বিপুল মুন্সী ও গণঅধিকার পরিষদ ভাঙ্গা শাখার নেতৃবৃন্দ। সেলফি তুলছেন গণঅধিকার পরিষদ ভাঙ্গা শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব করিম শরীফ।

এই দুটি ছবির পাশাপাশি আরেকটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়েছে। সেখানে ভাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মুন্সী এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সম্পাদক মিরু মাতুব্বর এবং ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন) আসনের সাবেক এমপি নিক্সন চৌধুরী রয়েছেন। দুই নেতাকে ফুলের মালা গলায় পরিয়ে দিচ্ছেন এমপি।

বিষয়টি নিয়ে এলাকায় প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শিকদার সাইদুর রহমান মিঠু বলেন, ‘মিরু মাতুব্বর ও বিপুল মুন্সি সাবেক এমপি 
নিক্সনের অনুসারী ছিলেন। তাদের লালনপালন করতেন আওয়ামী-বিএনপি লীগের সুবিধাবাদী জাফর মুন্সী ও বাকি মাতুব্বর (সাবেক পৌর কাউন্সিলর)।’

গণঅধিকার পারিষদের নেতারা স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও কৃষক লীগের নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিলে তার দায়ভার তাদেরই নিতে হবে মন্তব্য করে আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদ ভাঙ্গা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক স্মরণ আহমেদ বলেন, ৫ আগস্টের পর আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসররা ভোল পাল্টে বিএনপিসহ অন্য দলে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। এজন্য সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে।

ফোন না ধরায় এ বিষয়ে মিরু মাতুব্বর বা বিপুল মুন্সী কারও সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। 

গণঅধিকার পরিষদ নেতা আনিসুর রহমান বলেন, নোটিশের জবাব অনুযায়ী করিম শরীফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গণঅধিকার পরিষদ ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি মো. ফরহাদ হোসেন বুধবার রাতে সমকালকে বলেন, আনিসুর রহমান ও আতিকুল্লাহ হেলালের সঙ্গে ছবিতে আওয়ামী দোসর দু’জনকে দেখা গেছে। তারা কৃষক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে চেনেন না বলে জেলা কমিটিকে জানিয়েছেন। তার পরও বিষয়টির খোঁজ নিয়ে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে দু’জনের বিরুদ্ধে সংগঠনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গণঅধ ক র প ম ত ব বর উপজ ল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

গলাচিপায় ভিপি নুরকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ 

পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিএনপির নেতাকর্মীরা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে (ভিপি নুর) অবরুদ্ধ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাত ১০টার দিকে গলাচিপা উপজেলার পাতাবুনিয়া বটতলা বাজারে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। রাত ১টার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ওই বাজারে গিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে থাকা গণঅধিকার পরিষদ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। 

অন্যদিকে, চর বিশ্বাস বাজারে সরকারি চান্দিনা ভিটির ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন রিসিপ্ট বা ভূমি কর ব্যতিত অন্যান্য সরকারি পাওনা আদায়ের রশিদ) পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সম্পাদকের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে ভিপি নুরের ভাই আমীনুল ইসলামসহ দুই পক্ষের ১০ জন আহত হন। পরে চর বিশ্বাস বাজারে ইউনিয়ন বিএনপির অফিস ভাঙচুর করেন গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। 

নুরুল হক নুরের ছোট ভাই আমীনুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, বাজারে দুই শতাধিক দোকান আছে। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বাকের বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান প্রতিটি দোকান থেকে ৩০ হাজার টাকা করে দাবি করেন ডিসিআর পাইয়ে দেওয়ার নামে, যা সরকারের নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অনেক বেশি। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা নুরুল হক নুরের সহযোগিতা চান। গত ১০ জুন নুর এলাকায় গেলে বিষয়টি নিয়ে দোকানিরা অভিযোগ করেন। তিনি তাদের অতিরিক্ত টাকা না দিতে বলেন এবং প্রশাসনের মাধ্যমে ডিসিআর পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর থেকেই স্থানীয় বিএনপির নেতাদের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

অভিযোগ অস্বীকার করে চর বিশ্বাস ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান বলেছেন, “আমরা কর্মীসভা করছিলাম। সে সময় ভিপি নুরের ভাই আমীনুল ও তার লোকজন এসে আলোচনা বন্ধ করতে বলেন। আমরা আলোচনা বন্ধ করলেও অকারণে তারা আমাদের ওপর চড়াও হন এবং চেয়ার ছুড়ে মারেন। এতে আমাদের ৮–১০ জন নেতাকর্মী আহত হন। আমরা কারো কাছ থেকে টাকা নিইনি। ভিপি নুরের শ্যালক এনিম আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে মিলে টাকা তুলেছেন। এখন এর দায় আমাদের ওপর চাপানো হচ্ছে।”

নুরুল হক নুর বলেছেন, “আমি নেতাকর্মীদের নিয়ে পাতাবুনিয়া বাজারের বাদল মেম্বারের স্মরণসভায় গিয়েছিলাম। রাত পৌনে ১০টার দিকে সেই স্মরণসভা শেষে গলাচিপা বাজারে ফেরার পথে শুনতে পাই, বিএনপির নেতাকর্মীরা গাছের গুড়ি এবং দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। পরে আমাদের কয়েকজন কর্মী সেখানে বিষয়টি দেখার জন্য গেলে বিএনপি নেতা হাসান মামুনের অনুসারীরা একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। এছাড়া, দশমিনার কয়েকটি অফিস তারা ভাঙচুর করেন। হাসান মামুনের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। আমরা যখনই গণসংযোগ করি, তখনই বিএনপির নেতাকর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের হুমকি দেন। আমাদের সঙ্গে ৫০০ থেকে ৭০০ নেতাকর্মী ছিলেন। আমরা এ ঘটনা মোকাবিলা করতে পারতাম। কিন্তু, এলাকায় অনাকাঙ্ক্ষিত উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্ট হোক, সেটা আমরা চাইনি।”

সার্বিক বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন বিএনপি নেতা হাসান মামুন। সেখানে তিনি লিখেছেন, আওয়ামী লীগ নেতারা গণঅধিকারের ঘাড়ে পা দিয়ে বিএনপি অফিস ভাঙচুর করেছেন। হামলাকারী ও হামলার নির্দেশদাতাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। 

পরে কয়েকটি পোস্টে তিনি ভিপি নুরকে উদ্ধারের জন্য সেনাবাহিনী ও পুলিশকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়া, তিনি বিএনপি নেতাদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।

গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেছেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভিপি নুরের বিরুদ্ধে ছাত্রদলের বিক্ষোভ
  • গলাচিপা ও দশমিনায় ১৪৪ ধারার আদেশ অব্যাহত
  • পটুয়াখালীতে বিএনপি-জিওপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, ১৪৪ ধারা জারি
  • আশীর্বাদের পরিবর্তে অভিশাপের চিঠি দিয়েছে বিএনপি: ভিপি নুর
  • গলাচিপায় ১৪৪ ধারা জারি
  • গলাচিপায় ভিপি নুরকে অবরুদ্ধ করার অভিযোগ