শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমে পারস্পরিক সহযোগিতার উদ্দেশ্যে পাকিস্তানের ইউনিভার্সিটি অব ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেসের (ইউভিএএস) সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু)। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় অনলাইন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিন বছরের জন্য চুক্তি সই হয়। এরফলে পাকিস্তানের ইউভিএএস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রামের সিভাসুতে পড়তে আসতে পারবেন। দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এক মাসের জন্য ইন্টার্নশিপের সুযোগ পাবেন।

সিভাসু কর্তৃপক্ষ আজ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিভাসুর ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ ও ইউবিএএসের ভেটেরিনারি সায়েন্স অনুষদের ডিন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। ফলে সিভাসুর শিক্ষার্থীরা পাকিস্তানে এক মাসের ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ পাবেন। আবার পাকিস্তানের ইউভিএএস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সিভাসুতে এক মাসের ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ পাবেন।

ইন্টার্নশিপ চলাকালে সিভাসুর শিক্ষার্থীরা পাকিস্তানের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা, সার্জারিসহ নানা বিষয়ে হাতে–কলমে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। পাশাপাশি তাঁরা ইউভিএএসের বিভিন্ন ডেইরি ও পোলট্রি ফার্ম, হ্যাচারি এবং গবেষণা ল্যাবের কার্যক্রম পরিদর্শন করতে পারবেন। সিভাসুতে একই ধরনের সুবিধা পাবেন পাকিস্তানের শিক্ষার্থীরাও। এ ছাড়া চুক্তির আওতায় দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গবেষণা উপকরণ, প্রকাশনা ও একাডেমিক তথ্য বিনিময়, যৌথ গবেষণা প্রোগ্রাম, একাডেমিক কনফারেন্স আয়োজন, শিক্ষা, গবেষণা ও পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মী বিনিময়, পাঠ্যক্রম উন্নয়ন ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্প্রসারণে পারস্পরিক সহযোগিতাসহ নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

এই চুক্তির আওতায় সিভাসুর ‘ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম)’–এর পঞ্চম বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের ৯১ শিক্ষার্থী দুই ভাগে আগামী জুলাই ও আগস্টে পাকিস্তানে যাবেন। লাহোরে অবস্থিত সে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টার্নশিপ করবেন।

উল্লেখ্য, সিভাসুর সঙ্গে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি রয়েছে। এসব দেশের শিক্ষার্থীরা সিভাসুতে প্রশিক্ষণ ও পড়াশোনার জন্য আসেন, সিভাসুর শিক্ষার্থীরাও যান।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সবার নজরের বাইরে থাকা চৈতী দেশের জন্য আনল স্বর্ণপদক

একটু বড় হওয়ার পর মেয়েকে দেখে চিন্তায় পড়ে যান মা–বাবা। অন্য শিশুদের মতো বাড়ছে না সে। হাত–পা ছোট, উচ্চতাও থমকে গেছে। পরে বুঝতে পারেন—চৈতী বামন।

যে মেয়েকে নিয়ে একসময় দুশ্চিন্তার পাহাড়ে আটকা পড়েছিল পরিবার, আজ সেই চৈতীই আনন্দের আলো ছড়াচ্ছে। দেশের জন্য প্রথমবারের মতো এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছে চৈতী রানী দেব।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামের শিলু রানী দেব ও সত্য দেবের মেয়ে চৈতীর বয়স ১৩ বছর। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। কিন্তু তার লক্ষ্য নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫–এ বর্শা নিক্ষেপ ও ১০০ মিটার দৌড়ে সে জিতে নিয়েছে দুটি স্বর্ণপদক। ৭ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

চৈতীর প্রতিভা আছে। অনুশীলনে সে খুব আন্তরিক। সে কিছু করতে চায়। আশা করছি, ওকে দিয়ে একটা ভালো ফলাফল পাবমেহেদী হাসান, বিকেএসপির প্রধান প্রশিক্ষক

চৈতীর স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়টি দুবাই থেকে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্সের (শি) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী শারমিন ফারহানা চৌধুরী।

যে মেয়েকে সবাই দেখত শুধু উচ্চতায়

ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চৈতী একসময় গ্রামবাসীর নজরে পড়ত শুধু তার খর্বাকৃতির জন্য। খেলাধুলায় তার যে অসাধারণ প্রতিভা আছে, তা ছিল চোখের আড়ালে।

তবে এই ছবি এখন বদলে গেছে। গ্রামবাসী বাড়িতে এসে খোঁজ নেন। শিক্ষকেরা খেলতে উৎসাহ দেন, ছবি তোলেন। স্কুলে সে এখন ‘তারকা’।

দুবাইয়ে বর্শা নিক্ষেপে স্বর্ণপদক জয়ের পর চৈতী

সম্পর্কিত নিবন্ধ