ব্র্যাডম্যানের স্মৃতিবিজড়িত বাউরালে আছে বাংলাদেশও
Published: 25th, February 2025 GMT
২৪ বছর আগে এই দিনে মহাপ্রয়াণ ঘটেছিল সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের। অস্ট্রেলিয়ায় ২০১৫ বিশ্বকাপ কাভার করতে গিয়ে ব্র্যাডম্যানের স্মৃতিবিজড়িত বাউরালে ঘুরে প্রথম আলোয় এ লেখাটি লিখেছিলেন উৎপল শুভ্র। প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৫ সালের ২৪ মার্চ।
এই সেই মাঠ! যেখানে ডন ব্র্যাডম্যান নামের বিস্ময়ের ক্রিকেট অমরত্বের দিকে যাত্রা শুরু।
ব্র্যাডম্যান ওভালের সবুজ ঘাসে পা রাখতেই অদ্ভুত এক রোমাঞ্চ ছড়িয়ে পড়ে সারা শরীরে। এই সেই মাঠ! এই সেই মাঠ!
সামনেই প্যাভিলিয়ন, সেটিও ব্র্যাডম্যানের নামাঙ্কিত। ওই যে সিঁড়ি, ৯৫ বছর আগেও কি এটি এমনই ছিল! ওই ধাপগুলো পেরিয়েই ব্যাটিং করতে নেমেছিল ১২ বছরের ওই কিশোর! সেদিন মহাগুরুত্বপূর্ণ এক খেলা। অথচ বাউরাল ক্রিকেট ক্লাবের এক খেলোয়াড়ের দেখা নেই। বাধ্য হয়ে কিশোর ব্র্যাডম্যানকে নামিয়ে দেওয়া হলো। প্যাড হাঁটু পেরিয়ে ঊরুর অর্ধেক পর্যন্ত উঠে গেছে, পায়ে ঢলঢল করতে থাকা ওই প্যাড পরেই অপরাজিত ৩৭। ম্যাচ শেষে যেটির পুরস্কার হিসেবে ব্র্যাডম্যানকে একটি ব্যাট উপহার দেওয়া হবে ক্লাব থেকে।
পুরোনো ব্যাট, কোথাও কোথাও একটু ভেঙেও গেছে। কাঠমিস্ত্রি বাবা সেটিকেই জোড়াতালি দিয়ে ঠিকঠাক করবেন, নিচের দিকটা একটু কেটে ফেলে ছোট্ট ছেলেটির মাপমতো বানিয়ে দেবেন সেটিকে। ডন ব্র্যাডম্যানের প্রথম ক্রিকেট ব্যাট!
মাঠ আর ব্র্যাডম্যান জাদুঘরের মাঝখানে কালো ব্রোঞ্জের একটা মূর্তি। এক হাতে ব্যাটটা ধরা, আরেক হাতে ক্যাপ তুলে ধরেছেন—ব্র্যাডম্যানের সবচেয়ে পরিচিত ছবি। এই মাত্র আরেকটি সেঞ্চুরি করলেন আরকি! জাদুঘরে ব্র্যাডম্যানের জীবনের প্রথম ব্যাটটাও আছে। উল্টো দিকে কিছু স্কোর লেখা। খুব খেয়াল করে দেখলে এখনো পড়া যায়।
কী দীনহীন সাধারণ এক ব্যাট! কানাটা আধা ইঞ্চিও হবে কি না সন্দেহ! যে ব্যাট দিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে শততম সেঞ্চুরি করেছিলেন, সেটিও তো এর চেয়ে খুব ভালো কিছু বলে মনে হচ্ছে না। অ্যাডিলেড ওভালে ‘ব্র্যাডম্যান কালেকশনে’ অমর সব কীর্তি গড়ার হাতিয়ার ব্যাটগুলো দেখে যা মনে হয়েছিল, এখানেও সেই বিস্ময় ছড়িয়ে পড়ে মনে। এমন ব্যাট দিয়েই টেস্টে এক দিনে ৩০৯ রান, ৫২ টেস্টের ৮০ ইনিংসে ২৯টি সেঞ্চুরি, টেস্টে ৯৯.
ব্র্যাডম্যান জাদুঘরে ওই ব্যাটটাও আছে। যেটি মাত্র ২২ বলে সেঞ্চুরির সাক্ষী। সিডনি থেকে ৬০ মাইল দূরত্বের ব্ল্যাকহিথে কংক্রিট পিচের উদ্বোধন উপলক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ব্র্যাডম্যানকে। প্রতিপক্ষ দলে বিল ব্ল্যাক নামে এক বোলার ছিলেন। ব্র্যাডম্যানের এক সতীর্থ তাঁকে মনে করিয়ে দেন, কিছুদিন আগে একটা প্রদর্শনী ম্যাচে ব্র্যাডম্যানকে বোল্ড করেছিলেন এই বিল ব্ল্যাক, এর পর থেকে সেটিই জাহির করে বেড়াচ্ছেন। ব্র্যাডম্যান শুধু বলেন, ‘আই থিংক আই উইল হ্যাভ আ গো।’ তখন ৮ বলের ওভার। ৩ ওভারেই ব্র্যাডম্যানের সেঞ্চুরি। টেস্ট ক্যারিয়ারে মাত্র ৬টি ছক্কা। কিন্তু সেদিন তো ব্র্যাডম্যানের চোখে খুনের নেশা। সেঞ্চুরিতে তাই চারের চেয়ে ছয় বেশি—৯টি চারের পাশে ১০টি ছক্কা! শেষ পর্যন্ত থেমেছিলেন ২৫৬ রান করে। এই ব্যাট দিয়েই? কীভাবে সম্ভব!
কাল দুপুরে সিডনি শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে ১১৭ কিলোমিটার দূরের বাউরাল ব্র্যাডম্যানকে নিয়ে পুরোনো বিস্ময়গুলোকে আবারও নতুন করে মনে জাগিয়ে তুলল। রানের বন্যা বইয়ে দেওয়াটাও সে সময় জীবিকার নিশ্চয়তা নয়, এক স্টকব্রোকার কোম্পানিতে চাকরি পাবেন বলে ব্র্যাডম্যান তাই অ্যাডিলেডে পাড়ি জমিয়েছিলেন। জীবনের বেশির ভাগ সময় সেখানেই কেটেছে। অ্যাডিলেড ওভালে ‘ব্র্যাডম্যান কালেকশনে’ও তাই তাঁর কীর্তিধন্য ক্রিকেট-সরঞ্জামের অভাব নেই। কিন্তু বাউরাল তো বাউরাল। এখানে যে পথে পথে ব্র্যাডম্যানের শৈশব আর কৈশোরের স্মৃতিচিহ্ন ছড়িয়ে। বিশ্বকে তা দেখাতেই ‘ব্র্যাডম্যান জাদুঘর’-এর জন্ম। তবে অনেক দিনই আর এই নাম নেই। নতুন নাম—ব্র্যাডম্যান মিউজিয়াম অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট হল অব ফেম। ব্র্যাডম্যান নিজেই বদলে দিয়ে গেছেন। ভবিষ্যতের ক্রিকেটারদের উদ্দেশে একবার বলেছিলেন, যখন খেলাটা ছাড়বে, তখন নিজেকে একটা প্রশ্নই করবে, তুমি যে অবস্থায় শুরু করেছিলে, ক্রিকেটকে তার চেয়ে ভালো অবস্থায় রেখে যেতে পেরেছ কি না! এই যাঁর দর্শন, তাঁর তো এটা মনে হবেই, ‘ব্র্যাডম্যান মিউজিয়াম’ হলে তো শুধু নিজেরই নামকীর্তন হয়। এ কারণেই ব্র্যাডম্যানের যা কিছু আছে, তার সঙ্গে ক্রিকেটের ইতিহাসও এখানে একাকার।
প্রতিটি টেস্ট খেলুড়ে দেশের জন্য আলাদা অংশ বরাদ্দ আছে। যেখানে কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়াকে হারানো বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের অটোগ্রাফ-সংবলিত জার্সিও। ক্রিকেটকে বদলে দেওয়া কেরি প্যাকারের যে ওয়ার্ল্ড সিরিজ ক্রিকেটকে সে সময় চরম অপছন্দ করেছিলেন ব্র্যাডম্যান, সেটিকেও দেওয়া হয়েছে প্রাপ্য স্বীকৃতি। ওই টুর্নামেন্টের তিন দল অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বিশ্ব একাদশের জার্সি থেকে শুরু করে ওয়ার্ল্ড সিরিজ ক্রিকেটের কুশীলবদের ছবি তো আছেই; এমনকি টিভি প্রযোজক, ক্যামেরাম্যান ও আলোকচিত্রীর ছবি পর্যন্ত।
পাশেই বডিলাইন সিরিজ নিয়ে একটা ফিল্ম চলছে। শুধু ব্র্যাডম্যানের ব্যাট থেকে রান-বন্যা ঠেকাতেই ইংল্যান্ড অধিনায়ক ডগলাস জার্ডিনের মাথা থেকে বেরিয়েছিল যে কৌশল। যেটি ব্র্যাডম্যানের ব্যাটিং গড় নামিয়ে এনেছিল মানবীয় পর্যায়ে। মজাটা হলো, সেই সিরিজে ‘ব্যর্থ’ ব্র্যাডম্যানের ৫৬.৫৭ গড়ও আসলে গ্রেটনেসের স্বীকৃতি পেতে যথেষ্ট।
ওপরে বড় পর্দায় ক্রিকেটের বিভিন্ন সময়কালের খেলা চলছে। এর একটু নিচে কিঞ্চিৎ গর্বিত এবং তার চেয়েও বেশি বিব্রত শচীন টেন্ডুলকার বলছেন, ব্র্যাডম্যানের কথা অনুযায়ী ব্যাটিংয়ের ধরনেই শুধু তাঁর সঙ্গে স্যার ডনের তুলনা চলতে পারে, আর কিছুতে নয়। ১৯৩২ সালে বাউরালে ফিরে ব্র্যাডম্যানের বানানো ক্রিকেট কোচিংয়ের প্রথম ভিডিও ‘হাউ আই প্লে ক্রিকেট’ চলছে একটু দূরেই। ইন্টারঅ্যাকটিভ মনিটরে আঙুলের ছোঁয়ার অপেক্ষায় সেই ডব্লু জি গ্রেস থেকে আধুনিক কালের ক্রিকেট ইতিহাস—এই জাদুঘর আসলে দু-তিন ঘণ্টায় দেখে শেষ হওয়ার নয়।
তার পরও একসময় বেরিয়ে আসতে হয়। আরও অনেক কিছু যে দেখার আছে। ওই বাড়িটা কোথায়, যেটির পেছনে পানির ট্যাংকের নিচে পাটাতনটাতে গলফ বল ছুড়ে একটা স্টাম্প দিয়ে সেটিকে মারার চেষ্টায় দিন কাটত কিশোর ব্র্যাডম্যানের? একটু হাঁটতেই পাওয়া গেল সেই ৫২ শেফার্ড স্ট্রিটের বাড়িটা। সামনে একটা ফলক আছে, যেটি জানিয়ে দিচ্ছে কেটেছে ব্র্যাডম্যানের শৈশব ও কৈশোর। বাড়ির পেছনে উঁকিঝুঁকি মেরে দেখার চেষ্টা করছি, যদিও জানি পানির ট্যাংকটা আর নেই। এই বাড়িতে এখন অন্য কেউ থাকেন।
এই বাড়ি ছেড়ে ১৯২৪ সালে ১৬ বছর বয়সী ব্র্যাডম্যানকে নিয়ে বাবা-মা যে বাড়িতে গিয়েছিলেন, চার বছর আগে সিডনিতে পাড়ি জমানোর আগে যেখানেই ছিলেন ব্র্যাডম্যান, ২০ গ্লিব স্ট্রিটের সেই বাড়িটা অবশ্য কিনে নিয়ে সেই আগের রূপই দিয়েছে ব্র্যাডম্যান ফাউন্ডেশন। ব্র্যাডম্যান ওভালের পাশে রাস্তাটার ওপারেই সেই বাড়ি।
পানির ট্যাংক অবশ্য জাদুঘরে আছে। একটা ক্রিকেট স্টাম্প আর গলফ বল দিয়ে চাইলে আপনি ব্র্যাডম্যানের মতো খেলতেও পারেন। আর আছে ‘ব্র্যাডম্যান ওয়াক’, যেটি ধরে হেঁটে গেলে আপনি ফিরে যাবেন অতীতে। ব্র্যাডম্যান কোথায় কাজ করতেন, ১৯৩০ ইংল্যান্ড সফরের পর কোথায় তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল...হাঁটতে থাকবেন আর এসব এসে আপনার সামনে দাঁড়াবে। আবারও আপনি বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে ভাববেন, ...আমি মানব বিস্ময়ে ভ্রমি বিস্ময়ে!
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র প রথম জ দ ঘর কর ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
অধ্যাপক ইউনূসের সংস্কারের অঙ্গীকারের এক বছর পরেও কারাগারে সাংবাদিকেরা: সিপিজে
সাংবাদিক ফারজানা রুপা চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকার একটি জনাকীর্ণ আদালতে আইনজীবী ছাড়াই দাঁড়িয়েছিলেন। বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি হত্যা মামলা নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করছিলেন। ইতিমধ্যে অন্য মামলায় কারাগারে থাকা এই সাংবাদিক শান্তভাবে জামিনের আবেদন জানান। ফারজানা বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমার বিরুদ্ধে এক ডজন মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি একজন সাংবাদিক। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি মামলাই যথেষ্ট।’
বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টসের (সিপিজে) এক নিবন্ধে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপার বিরুদ্ধে ৯টি হত্যা মামলা রয়েছে। আর তাঁর স্বামী চ্যানেলটির সাবেক বার্তাপ্রধান শাকিল আহমেদের নামে রয়েছে আটটি হত্যা মামলা।
এক বছর আগে ছাত্রদের নেতৃত্বে কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভের পর পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বিক্ষোভ চলাকালে দুজন সাংবাদিক নিহত হন। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
অধ্যাপক ইউনূস গণমাধ্যম সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের অধীন সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু ২০২৪ সালের নভেম্বরে ডেইলি স্টার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস বলেছিলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তাড়াহুড়ো করে হত্যার অভিযোগ আনা হচ্ছে। তিনি আরও বলেছিলেন, সরকার তখন থেকে এ ধরনের পদক্ষেপ বন্ধ করে দিয়েছে। মামলাগুলো পর্যালোচনা করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কিন্তু প্রায় এক বছর পর এখনো সাংবাদিক ফারজানা রুপা, শাকিল আহমেদ, শ্যামল দত্ত ও মোজাম্মেল হক বাবু কারাগারে আছেন। হত্যায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পৃথক মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। বিগত সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের বারবার ব্যবহারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সেন্সরশিপ বলেই মনে হচ্ছে।
এ ধরনের আইনি অভিযোগ ছাড়াও সিপিজে সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক হামলা, রাজনৈতিক কর্মীদের কাছ থেকে হুমকি এবং নির্বাসনের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কমপক্ষে ২৫ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে তদন্ত করছে। এই অভিযোগ সাবেক শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
সিপিজের আঞ্চলিক পরিচালক বেহ লিহ ই বলেন, ‘চারজন সাংবাদিককে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ ছাড়াই এক বছর ধরে কারাগারে আটকে রাখা অন্তর্বর্তী সরকারের সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার ঘোষিত প্রতিশ্রুতিকে দুর্বল করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত সংস্কার মানে অতীত থেকে বেরিয়ে আসা, এর অপব্যবহারের পুনরাবৃত্তি নয়। যেহেতু আগামী মাসগুলোতে দেশে নির্বাচন হতে চলেছে, তাই সব রাজনৈতিক দলকে সাংবাদিকদের খবর প্রকাশের অধিকারকে অবশ্যই সম্মান জানাতে হবে।’
আইনি নথি ও প্রতিবেদন নিয়ে সিপিজের এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এফআইআর নথিভুক্ত হওয়ার অনেক পর সাংবাদিকদের নাম প্রায়ই এতে যুক্ত করা হয়। মে মাসে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, গত বছরের বিক্ষোভের পর ১৪০ জনের বেশি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
শ্যামল দত্তের মেয়ে শশী সিপিজেকে বলেন, তাঁর বাবার বিরুদ্ধে এখন কতগুলো মামলা চলছে, পরিবার তার হিসাব রাখতে পারেনি। তাঁরা অন্তত ছয়টি হত্যা মামলার কথা জানেন, যেখানে শ্যামল দত্তের নাম আছে। মোজাম্মেল বাবুর পরিবার ১০টি মামলার কথা জানে। ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদের পরিবার সিপিজেকে জানিয়েছে, তারা পাঁচটি মামলার এফআইআর পাননি, যেখানে একজন বা অন্য সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মানে হলো তাঁদের কেউই জামিনের আবেদন করতে পারছেন না।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম ও পুলিশের মুখপাত্র এনামুল হক সাগরকে ই–মেইল করে সিপিজে। তবে তাঁরা সাড়া দেননি বলে সিপিজের নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়।