সেমিতে বার্সা-অ্যাথলেটিকোর গোল ও কামব্যাক থ্রিলার
Published: 26th, February 2025 GMT
বার্সেলোনার মাঠ লুইস কম্পানিসে যেন ফুটবল ম্যাচ নয় মিলল এক থ্রিলার সিরিজের দেখা। যার শুরু ‘চক্ষু চড়কগাছ’ হওয়া ঘটনা দিয়ে। কোপা দেল রে’র সেমিফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচ। প্রথম মিনিটেই গোল অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার হুলিয়ান আলভারেজের। অ্যান্তোনিও গ্রিজম্যানের গোলে ষষ্ঠ মিনিটে অ্যাথলেটিকোর লিড ২-০!
গল্পের কিন্তু ওটা শেষ নয়। কেবল শুরু। কারণ খানিক বাদেই, দুই মিনিটের ব্যবধানে বার্সার জোড়া গোল এবং ম্যাচে সমতা। ১৯ মিনিটে গোল করেন বার্সার স্প্যানিশ মিডফিল্ডার পেদ্রি। ২১ মিনিটে গোল করেন তরুণ ডিফেন্ডার পাও কুবার্সি। ম্যাচে ২-২ গোলের সমতা!
প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই দুই গোলে পিছিয়ে থেকে শুরু করা বার্সেলোনার লিড। ম্যাচের ৪১ মিনিটে গোল করেন বার্সার আরেক স্প্যানিশ ডিফেন্ডার ইনিগো মার্টিনেজ। ম্যাচে বার্সা ৩-২ গোলের লিড নিয়ে শেষ করে প্রথমার্ধ। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের ৭৪ মিনিটে গোল করেন বার্সার পোলিশ স্ট্রাইকার রর্বাট লেভানডভস্কি। ম্যাচে বার্সা ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকে শুরু করে ৪-২ গোলের লিডে পৌঁছে যায়!
বার্সার নামের পাশে তখন দুর্দান্ত এক কামব্যাকের গল্প লেখার অপেক্ষা। ৪-২ গোলের লিড নেওয়ার পর ম্যাচ ওখানেই শেষ ধরে নেওয়া স্বাভাবিক। তাও আবার ম্যাচটা বার্সার ঘরের মাঠে। কিন্তু থ্রিলার ম্যাচে কামব্যাকের গল্প লিখেছে ডিয়াগো সিমিওনের অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে মার্কোস লরিয়েন্তে গোল করে ব্যবধান ৪-৩ করে ফেলেন। যোগ করা সময়ে নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার অ্যালেক্সজান্ডার সরলর্থ ম্যাচ ৪-৪ গোলের সমতায় শেষ করেন।
প্রথম লেগে থ্রিলার কোন সিনেমার যেন দুই কিস্তি শেষ হলো। এখন সিকুয়েল আনার অপেক্ষা। গল্পের শেষ টানার অপেক্ষা। কামব্যাক থ্রিলারের যে সিকুয়েল ম্যাচ মঞ্চস্থ হবে অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের ঘরের মাঠ ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোয়। ম্যাচটি হবে ৩ এপ্রিল। গল্পের পট প্রস্তুতের জন্য পাওয়া যাচ্ছে বেশ সময়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ ল কর ন ক মব য ক প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।