ছোট হিমাগার কৃষিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে: কৃষি উপদেষ্টা
Published: 26th, February 2025 GMT
মৌসুমে সবজি উৎপাদন করে প্রতি বছরই মূল্য পাচ্ছে না কৃষক। পাশাপাশি সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে। এতে বছরের পর বছর হাড়ভাঙা খাটুনির পরও মলিন থাকছে কৃষকের মুখ। তবে এই দিন বদলের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ফসল রক্ষা ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে সাভারের রাজালাখ হর্টিকালচার সেন্টারের ‘কৃষকের শীতল ঘর’ নামে হিমাগার তৈরি করা হয়েছে। এতে স্বস্তির নিশ্বাস নিচ্ছেন কৃষক।
বুধবার কৃষকের এই মিনি কোল্ডস্টোরেজ কার্যক্রম ও খামারি অ্যাপের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.
এ সময় তিনি বলেন, কৃষকের মিনি কোল্ডস্টোরেজ ও খামারি অ্যাপ কৃষিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
কৃষি উপদেষ্টা বলেন, একটা সময় জনসংখ্যার চেয়ে কৃষি জমির পরিমাণ অনেক বেশি ছিল। এখন কৃষি জমি কমেছে, জনসংখ্যা অনেক বেড়েছে। এরপরও কৃষকরা ভালো উৎপাদনের মধ্যদিয়ে আমাদের একটি সন্তোষজনক পর্যায়ে রেখেছেন।
কম কৃষি জমিতে অধিক ফলন, পচনশীল কৃষি পণ্য সংরক্ষণের বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আধুনিক ও বিজ্ঞান সম্মত চাষাবাদ ব্যবস্থাপনা কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে খামারি অ্যাপ চালু করা হয়েছে। কৃষকদের উৎপাদিত শাকসবজি, ফলমূল সংরক্ষণের জন্য মিনি কোল্ডস্টোরেজ নির্মাণ করা হয়েছে। সারা দেশে ১০০ মিনি কোল্ডস্টোরেজ তৈরি করা হবে। এ প্রযুক্তি কৃষকদের মাঝেও ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘টিস্যু কালচার ল্যাবরেটরি কাম হর্টিকালচার সেন্টার স্থাপন ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের পরিচালক তালহা জুবাইর মাশরুরের তত্ত্বাবধানে দুটি মিনি কোল্ড স্টোরেজ তৈরি করা হয়েছে। সাভারের রাজালাখ হর্টিকালচার সেন্টারের ঘরের ভেতরে ও খোলা আকাশের নিচে কনটেইনারভিত্তিক সৌরচালিতভাবে তৈরি করা হয়। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য আধুনিক শীতল সংরক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে কৃষকের উৎপাদিত পণ্যকে সঠিক সময়ে বাজারে উঠানো। এর মাধ্যমে মৌসুমে দামের ওঠানামা নিয়ন্ত্রণ, ফসলের অপচয় রোধ ও কৃষকের আর্থিক ক্ষতির শঙ্কা কমবে। কৃষক সরাসরি বাজারে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির সুযোগ পাবেন। কমবে মধ্যস্বত্বভোগীর প্রভাব।
কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, কৃষকের শীতল ঘরের মাধ্যমে আমরা ফসলের অপচয় কমাব। কৃষকদের লাভজনক উৎপাদনের সুযোগ বাড়বে। সরকার ও বেসরকারি বিনিয়োগের মাধ্যমে এই প্রযুক্তিকে সহজলভ্য করা হবে। এ বিষয়ে কৃষককে দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ। আপাতত সারাদেশে এ রকম আরও ১০০ মিনি কোল্ডস্টোরেজ সরকার নির্মাণ করে দেবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম বলেন, এই কোল্ডস্টোরেজ কৃষকের জন্য নতুন দরজা খুলবে। এখন কৃষক নিজেই ফসল সংরক্ষণের মাধ্যমে দর নির্ধারণ করতে পারবেন। উন্নত এই প্রযুক্তি আমরা দেশজুড়ে ছড়িয়ে দিতে চাই।
প্রকল্পের পরিচালক তালহা জুবাইর মাশরুর বলেন, স্থানীয় ও আমেরিকান হাইটেক ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষকের শীতল ঘর তৈরি হয়েছে। ইন্টারনেটভিত্তিক এবং রিয়েল টাইম তদারকি সুবিধা থাকায় মোবাইলে ঘরে বসে এই মিনি কোল্ডস্টোরেজ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। মাত্র ৫ লাখ টাকায় কৃষক নিজের বাড়িতেই এটি তৈরি করতে পারবেন। আর কনটেইনারে সোলারসহ বানাতে লাগবে ১৫ লাখ টাকা। প্রচলিত কোল্ডস্টোরেজের চেয়ে এখানে খরচ প্রায় ৭০ শতাংশ কম লাগবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট ক ষকদ র উৎপ দ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই’
নতুন করে আর গৃহস্থালিতে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
তিনি বলেছেন, ‘‘কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। সুযোগ থাকলে ঢাকার সব বাড়ির গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দিতাম।’’
শুক্রবার (১৩ জুন) সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার কৈলাশটিলা-৭ ও সিলেট-১০ গ্যাস কূপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
১৩ লাখ ২০ হাজার টন জ্বালানি তেল কিনবে সরকার
কমল ডিজেল-অকটেন-পেট্রোলের দাম, কেরোসিনে বেড়েছে ১০ টাকা
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘‘গৃহস্থালিতে পাইপলাইনের গ্যাস ব্যবহার করে অপচয় করা হয়। গ্যাস সংযোগ বন্ধ করতে পারলে সেটাই হতো সঠিক সিদ্ধান্ত। যেখানে শিল্প-কারখানা পর্যাপ্ত গ্যাস পাচ্ছে না, সেখানে বাসাবাড়িতে নতুন সংযোগ দেওয়া মানে অপচয় বাড়ানো। এ কারণে নতুন সংযোগ আর নয়।’’
সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের আবাসিক গ্যাস সংযোগ দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘যেসব এলাকায় গ্যাস উত্তোলন হয়, সেসব অঞ্চলে সরকার স্বল্প মূল্যে সিলিন্ডার গ্যাস সরবরাহের উদ্যোগ নেবে।’’
ফাওজুল কবির বলেন, ‘‘দেশে প্রতি বছর ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট করে গ্যাস উৎপাদন কমছে। ফলে আমদানি নির্ভরতা বাড়ছে। আমরা চেষ্টা করছি অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়িয়ে এলএনজি আমদানি কমাতে।’’
উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘‘কৈলাশটিলা-৭ এবং সিলেট-১০ নম্বর কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ১৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।’’
ঢাকা/নূর/রাজীব