ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আয়ু আর ২-৩ বছর আছে বলে মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলীয় সমাবেশে এই মন্তব্য করেছেন তিনি।
মমতা দাবি করেন, ২০২৭ থেকে ২৯ সালের মধ্যে বিজেপি শেষ হয়ে যাবে।
দলীয় সমাবেশে আগামী বিধানসভা ভোটে ন্যূনতম ২১৫টি আসন পেতে হবে বলে কর্মীদের লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ এই নেত্রী। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন ২০২৬ সালে অনুষ্ঠিত হবে।
আরো পড়ুন:
বিধানসভা নির্বাচনে ২১৫ আসন পেতেই হবে: মমতা ব্যানার্জি
বরেণ্য অভিনেতা মুরালি গ্রেপ্তার
তৃণমূল কংগ্রেস এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে মমতার বার্তা, “আগামী বিধানসভা ভোটে ২১৫টা আসন পেতেই হবে। আসন আরো বেশি পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। ২১৫টা আসনের কম কোনো মতেই নয়। এবার বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের জামানত জব্দ করার পালা।”
মমতা বলেন, ২০২১ সালে সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচনে পাওয়া ২১৪ আসনের রেকর্ড দলকে ভাঙতে হবে ২০২৬-এ। নির্বাচনকে সামনে রেখে কর্মীরা কী করবেন, কী করবেন না, তাও পয়েন্ট ধরে বুঝিয়ে দেন তিনি।
কর্মীদের নির্বাচনী টিপস দেওয়ার পাশাপাশি ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মমতার অভিযোগ, ভোটের আগে ভোটার লিস্টে কারচুপি করেছে কমিশন।
মমতার অভিযোগ, ভোটারদের কার্ডে রদবদল করে বাংলার ভোটে ভিন রাজ্য থেকে লোক নিয়ে এসে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বক্তব্য রাখার সময়ে, মুর্শিদাবাদের রানিনগরের এক বাসিন্দা সইদুল ইসলামের নাম তোলেন তিনি। তার যে এপিক নম্বর রয়েছে, তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে হরিয়ানার কোনো এক সনিয়া দেবীর নাম।
রানিনগরেরই আরো এক বাসিন্দা মোহাম্মদ আলি হোসেন, তার এপিক নম্বরের সঙ্গেও একই কাণ্ড করা হয়েছে বলে উদাহরণ দেন মমতা। তার অভিযোগ, স্যাম্পল সার্ভে করে যা নথি হাতে এসেছে, তা চমকে দেওয়ার মতো। একই এপিক নম্বরে বাংলার ভোটারের জায়গায় বহু ক্ষেত্রে হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও বিহারের নাম ঢোকানো হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই কাজের পিছনে কিছু এআরও এবং ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের দিকে আঙুল তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ডেটা অপারেটরদের ওপর লক্ষ্য রাখুন।
ভোটার তালিকায় এমন গরমিল করেই দিল্লি ও মহারাষ্ট্রে বিজেপি জিতেছে বলে ইঙ্গিত দেন মমতা। তিনি বলেন, দিল্লি পারেনি, মহারাষ্ট্র পারেনি, বাংলায় আমরা ধরব, জবাব দেবো। আমি আপনাদের রহস্যটা উন্মোচন করে দিলাম। এর পরের কাজটা আপনাদের। ভোটার তালিকা যাচাই-বাছাই করুন। ডেটা অপারেটরদের ওপর লক্ষ্য রাখুন। ২০২৭ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে বিজেপি শেষ হয়ে যাবে। বিজেপির আয়ু ২-৩ বছর।
বৃহস্পতিবার দলের মহাসমাবেশে একথা বলেন তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল ১১টায় সেই বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের এই মুখ্যমন্ত্রী কী বার্তা দেন, সেদিকেই তাকিয়ে ছিলেন অনেকেই।
অনেকের মতে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংগঠনের সর্বস্তরে ‘ঝাঁকুনি’ দিতে চান মমতা। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে মমতার বার্তা, “আগামী বিধানসভা ভোটে ২১৫টা আসন পেতেই হবে। অভিষেক ঠিকই বলেছে। আসন আরও বেশি পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। ২১৫টা আসনের কম কোনও মতেই নয়। এবার বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের জামানত জব্দ করার পালা।”
এদিন তৃণমূলের সভা থেকে বিজেপির কঠোর সমালোচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের বদনাম করার জন্য বিজেপি বারবার এজেন্সি পাঠাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, ‘২০২৭ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে বিজেপি শেষ হয়ে যাবে। বিজেপির আয়ু ২-৩ বছর। তারপরে আর নেই। এর মধ্যেই ওরা বাংলাকে টার্গেট করবে। মহারাষ্ট্র-দিল্লিতে ওরা বিজেপির খেলা ধরতে পারেনি। বাংলায় আমরা ধরব। যোগ্য জবাব দেব।’
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম খ যমন ত র কর ম দ র ২ ৩ বছর আসন প ত ব ধ নসভ ন মমত মমত র
এছাড়াও পড়ুন:
২০২৬ আইপিএলের আগে নতুন হেড কোচ নিয়োগ দিল কেকেআর
আইপিএল ২০২৬ মৌসুমের আগে কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) নতুন হেড কোচ হিসেবে দায়িত্ব দিল অভিষেক নায়ারকে। গত মৌসুমে তিনি ছিলেন চন্দ্রকান্ত পান্ডিতের সহকারী কোচ। এবার সেই জায়গা থেকেই পদোন্নতি পেয়ে দলের দায়িত্বভার নিলেন তিনি। এর আগে এক বছরের বিরতিতে নায়ার কাজ করেছিলেন ভারতের জাতীয় দলের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরের সহকারী হিসেবে।
সম্প্রতি নারী প্রিমিয়ার লিগের দল ইউপি ওয়ারিয়র্সও তাকে প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল।
আরো পড়ুন:
শেষটায় কী অপেক্ষা করছে?
ফাইনালে যেতে ভারতকে ৩৩৯ রানের টার্গেট দিলো অস্ট্রেলিয়া
কেকেআরের সিইও ভেঙ্কি মাইসোর এক বিবৃতিতে বলেন, “২০১৮ সাল থেকে অভিষেক কেকেআর পরিবারের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। মাঠের ভেতরে ও বাইরে- দুই জায়গাতেই তিনি আমাদের খেলোয়াড়দের গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। খেলার সূক্ষ্ম বিষয়গুলো বোঝার ক্ষমতা আর খেলোয়াড়দের সঙ্গে গভীর সংযোগ; দুটোই তাকে আলাদা করে রেখেছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, এখন তিনি প্রধান কোচ হিসেবে কেকেআরকে নতুন অধ্যায়ে নেতৃত্ব দেবেন।”
৪২ বছর বয়সী অভিষেক নায়ার একসময় ছিলেন মুম্বাইয়ের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। ২০০৯ সালে ভারতের জার্সি গায়ে তিনটি ওয়ানডেও খেলেছেন তিনি। তবে খেলোয়াড়ি জীবনের চেয়ে কোচ হিসেবে তার সিভিটাই এখন অনেক সমৃদ্ধ।
২০১৮ সালে খেলোয়াড়ি জীবনের শেষ দিকে নায়ার কেকেআর একাডেমির প্রধান কোচ নিযুক্ত হন। ২০১৯ সালে অবসরের পর মূল দলের সহকারী কোচ হিসেবে যোগ দেন। পরে ২০২২ সালে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের প্রধান কোচের দায়িত্বও পালন করেন।
কেকেআরে থাকাকালীন গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে তার গড়ে ওঠে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। যখন গম্ভীর ভারতের জাতীয় দলের প্রধান কোচ হন, তখন নায়ারও তার সহকারী হিসেবে যোগ দেন। তবে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে বিসিসিআইয়ের পর্যালোচনার পর এক বছরেরও কম সময়ে তার চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। এরপর আইপিএল ২০২৫ মৌসুমের আগে তিনি ফের ফিরে আসেন কেকেআরে।
তিন মৌসুম পর কেকেআর ও চন্দ্রকান্ত পান্ডিতের পথ আলাদা হয়ে যায়। সেই সময়ের মধ্যে দলটি দশ বছর পর ২০২৪ সালে আইপিএল শিরোপা জিতেছিল। তবে ২০২৫ মৌসুমে হতাশাজনক পারফরম্যান্সে মাত্র পাঁচ জয়ে পয়েন্ট তালিকায় অষ্টম স্থানে থাকাটা শেষ পর্যন্ত পান্ডিতের বিদায়ের কারণ হয়। এরপর তিনি ফিরে যান নিজ রাজ্য মধ্যপ্রদেশে এবং সেখানে ক্রিকেট পরিচালকের দায়িত্ব নেন।
কেকেআরের সহায়ক দলেও বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। বোলিং পরামর্শক ভরৎ অরুণ ও স্পিন-বোলিং বিশেষজ্ঞ কার্ল ক্রো দুজনই চলে গেছেন লখনউ সুপার জায়ান্টসে। ফলে আগামী কয়েক মাসে তাদের বিকল্প খোঁজার কাজ শুরু হবে।
অর্থাৎ, নতুন করে সাজানো কেকেআর এখন নতুন কোচ অভিষেক নায়ারের হাত ধরে এগোতে প্রস্তুত। আইপিএল ২০২৬-এ আবারও পুরনো জৌলুস ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায়।
ঢাকা/আমিনুল