Samakal:
2025-08-01@18:27:57 GMT

আতঙ্কের নাম মিনি তেল পাম্প

Published: 28th, February 2025 GMT

আতঙ্কের নাম মিনি তেল পাম্প

ছোট ছোট দোকানে কিংবা আবাসিক ভবনের নিচে ফিলিং স্টেশনের মতো ডিসপেনসার মেশিন বসিয়ে বিক্রি হচ্ছে ডিজেল, পেট্রোল, অকটেন। এগুলোর নেই কোনো ডিলারশিপ বা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন। জ্বালানি তেল বিক্রির এ ব্যবস্থা পরিচিতি পেয়েছে ‘মিনি তেল পাম্প’ নামে। এসব পাম্পে অবৈধ উপায়ে ভেজাল তেল সরবরাহে নিরাপত্তাঝুঁকি বাড়ছে।
প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মী টাকার বিনিময়ে ভুয়া কাগজপত্র সরবরাহ করে ব্যবসায়ীদের এ ধরনের পাম্প তৈরিতে সহায়তা করছেন। প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ভয়াবহ অগ্নিঝুঁকি তৈরি হবে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) চারঘাট উপজেলার সভাপতি সাইফুল ইসলাম। 

কথা হলে বাঘা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো.

মিজানুর রহমান ও চারঘাট ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, মিনি তেল পাম্প স্থাপনে কাউকে লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। এভাবে তেল পাম্প স্থাপন ভয়ংকর ঝুঁকিপূর্ণ। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। 
পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহীর সহকারী পরিচালক কবির হোসেন বলেন, ‘মিনি তেল পাম্প স্থাপনে আমাদের দপ্তর থেকে কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। অবৈধ পাম্প পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে যত্রতত্র গড়ে ওঠা এসব মিনি তেলের পাম্পে মাঝে মধ্যেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম বাজারের পাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চেয়ারম্যান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী, পুলিশ, সাংবাদিকসহ ৩০ জন আহত হন। এর আগে চারঘাটের নন্দনগাছী বাজারের তেল দোকানে অগ্নিকাণ্ডে চারজন গুরুতর আহত হয়। আগুন আশপাশের দোকানে ছড়িয়ে পড়লে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়। 
সরেজমিন দেখা যায়, বাঘা উপজেলার রুস্তমপুর বাজারে আবাসিক এলাকায় দোতলা ভবনের নিচে ও টিনশেড ঘরে পাশাপাশি দুটি মিনি তেলপাম্প গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে ডিসপেনসার মেশিন বসিয়ে খেয়ালখুশিমতো ডিজেল, পেট্রোল, অকটেন বিক্রি করা হচ্ছে। একই চিত্র দেখা গেছে চারঘাটের ফরিদপুর মোড়, নওদাপাড়া বাজার ও নন্দনগাছী বাজারেও। এসব মিনি পাম্পে শত শত তেলের ব্যারেল স্তূপ করে রাখতে দেখা গেছে। এ দুই উপজেলায় এ ধরনের অন্তত ২৫টি মিনি পাম্প গড়ে উঠেছে। আরও কয়েকটি দোকানে মেশিন বসিয়ে চালুর অপেক্ষায়। বিস্ফোরক পরিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ও পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা সমকালকে নিশ্চিত করেছেন এ ধরনের ব্যবস্থাপনায় তেল বিক্রির কোনো অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি।

চারঘাটের ফরিদপুর মোড়ের মিনি তেল পাম্পের মালিক সোহানুর রহমান বলেন, বিস্ফোরক অধিদপ্তরে আবেদন করেছি। এখনও অনুমোদন পাইনি। ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন নিয়ে পাম্প চালু করেছি। তেল বিক্রির কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি।
বাঘার রুস্তমপুর বাজারের দুই মিনি তেল পাম্পের মালিক রবিউল আলম বাবু ও মজনু হোসেন জানান, স্থানীয় জাহিদ তুহিন নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসে চাকরি করেন। তাঁর মাধ্যমে লাইসেন্স নিয়ে তেল পাম্প করেছেন। 
জানতে চাইলে মো. জাহিদ তুহিন বলেন, ‘শুনছি আপনারা তেল পাম্পের লাইসেন্স খুঁজছেন। সাংবাদিকদের লাইসেন্স খোঁজার কী প্রয়োজন? তারা কি আপনার টাকায় ব্যবসা করছে? আপনার এতে মাথাব্যথা কেন? লাইসেন্স অফিস দিয়েছে, অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহীর ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর সরোয়ার হোসাইন বলেন, ‘জাহিদ তুহিন রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসে সৈনিক পদে কর্মরত হলেও তিনি এ কাজে জড়িত কিনা জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে সত্যতা পেলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস থ ন বল ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ