ছোট ছোট দোকানে কিংবা আবাসিক ভবনের নিচে ফিলিং স্টেশনের মতো ডিসপেনসার মেশিন বসিয়ে বিক্রি হচ্ছে ডিজেল, পেট্রোল, অকটেন। এগুলোর নেই কোনো ডিলারশিপ বা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন। জ্বালানি তেল বিক্রির এ ব্যবস্থা পরিচিতি পেয়েছে ‘মিনি তেল পাম্প’ নামে। এসব পাম্পে অবৈধ উপায়ে ভেজাল তেল সরবরাহে নিরাপত্তাঝুঁকি বাড়ছে।
প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মী টাকার বিনিময়ে ভুয়া কাগজপত্র সরবরাহ করে ব্যবসায়ীদের এ ধরনের পাম্প তৈরিতে সহায়তা করছেন। প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ভয়াবহ অগ্নিঝুঁকি তৈরি হবে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) চারঘাট উপজেলার সভাপতি সাইফুল ইসলাম।
কথা হলে বাঘা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো.
পরিবেশ অধিদপ্তর রাজশাহীর সহকারী পরিচালক কবির হোসেন বলেন, ‘মিনি তেল পাম্প স্থাপনে আমাদের দপ্তর থেকে কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। অবৈধ পাম্প পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে যত্রতত্র গড়ে ওঠা এসব মিনি তেলের পাম্পে মাঝে মধ্যেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম বাজারের পাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চেয়ারম্যান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী, পুলিশ, সাংবাদিকসহ ৩০ জন আহত হন। এর আগে চারঘাটের নন্দনগাছী বাজারের তেল দোকানে অগ্নিকাণ্ডে চারজন গুরুতর আহত হয়। আগুন আশপাশের দোকানে ছড়িয়ে পড়লে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, বাঘা উপজেলার রুস্তমপুর বাজারে আবাসিক এলাকায় দোতলা ভবনের নিচে ও টিনশেড ঘরে পাশাপাশি দুটি মিনি তেলপাম্প গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে ডিসপেনসার মেশিন বসিয়ে খেয়ালখুশিমতো ডিজেল, পেট্রোল, অকটেন বিক্রি করা হচ্ছে। একই চিত্র দেখা গেছে চারঘাটের ফরিদপুর মোড়, নওদাপাড়া বাজার ও নন্দনগাছী বাজারেও। এসব মিনি পাম্পে শত শত তেলের ব্যারেল স্তূপ করে রাখতে দেখা গেছে। এ দুই উপজেলায় এ ধরনের অন্তত ২৫টি মিনি পাম্প গড়ে উঠেছে। আরও কয়েকটি দোকানে মেশিন বসিয়ে চালুর অপেক্ষায়। বিস্ফোরক পরিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ও পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা সমকালকে নিশ্চিত করেছেন এ ধরনের ব্যবস্থাপনায় তেল বিক্রির কোনো অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি।
চারঘাটের ফরিদপুর মোড়ের মিনি তেল পাম্পের মালিক সোহানুর রহমান বলেন, বিস্ফোরক অধিদপ্তরে আবেদন করেছি। এখনও অনুমোদন পাইনি। ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন নিয়ে পাম্প চালু করেছি। তেল বিক্রির কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি।
বাঘার রুস্তমপুর বাজারের দুই মিনি তেল পাম্পের মালিক রবিউল আলম বাবু ও মজনু হোসেন জানান, স্থানীয় জাহিদ তুহিন নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসে চাকরি করেন। তাঁর মাধ্যমে লাইসেন্স নিয়ে তেল পাম্প করেছেন।
জানতে চাইলে মো. জাহিদ তুহিন বলেন, ‘শুনছি আপনারা তেল পাম্পের লাইসেন্স খুঁজছেন। সাংবাদিকদের লাইসেন্স খোঁজার কী প্রয়োজন? তারা কি আপনার টাকায় ব্যবসা করছে? আপনার এতে মাথাব্যথা কেন? লাইসেন্স অফিস দিয়েছে, অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহীর ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর সরোয়ার হোসাইন বলেন, ‘জাহিদ তুহিন রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসে সৈনিক পদে কর্মরত হলেও তিনি এ কাজে জড়িত কিনা জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে সত্যতা পেলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস থ ন বল ন উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসুর ১০ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন উপাচার্যের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের জন্য দশ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিনকে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
আজ সোমবার অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়।
নির্বাচন পরিচালনায় প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তাকে সহায়তার জন্য আরও ৯ জন রিটার্নিং কর্মকর্তাকে মনোনীত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন— মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম মহিউদ্দিন; সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী; তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মোস্তাক গাউসুল হক; উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম; স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা; ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম (শহীদুল জাহীদ); বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তারিক মনজুর; গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম শামীম রেজা এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর।
নিয়োগপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তারা উপাচার্যের সঙ্গে পরামর্শক্রমে নির্বাচনের পরবর্তী কার্যক্রম নির্ধারণ করবেন এবং ভোট গ্রহণসহ সার্বিক নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালনা করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধানের ৮(এফ) ধারার আওতায় এই নিয়োগ দেওয়া হয়।
অতীতে ডাকসু নির্বাচনে ৬ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন থাকলেও এবার তা বৃদ্ধি করে সর্বোচ্চ ১০ জন সদস্য নিয়ে নির্বাচন পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে করে স্বচ্ছতা, গ্রহণযোগ্যতা এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করা যাবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
জানতে চাইলে অধ্যাপক জসীম উদ্দিন সমকালকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দায়িত্ব দিয়েছে, ফলে আমাদের যাবতীয় কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। অফিশিয়ালি দায়িত্ব বুঝে পেলে বাকিদের সঙ্গে মিটিং করে নির্বাচনের তারিখসহ অন্যান্য বিষয় নির্ধারণ করব।