চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারত তাদের সব ম্যাচ দুবাইয়ে খেলার মাধ্যমে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে—এমন আলোচনায় যারপরনাই বিরক্ত সুনীল গাভাস্কার। ভারতের কিংবদন্তি এ ক্রিকেটার উল্টো সমালোচকদেরই তোপ দেগেছেন। বলেছেন, সমালোচকদের কথায় ভারতের কান দেওয়ার দরকার নেই। ভারতের কারণেই তাঁদের বেতন হয়।

এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) হলেও ভারত সে দেশে যেতে রাজি হয়নি। পরে সমঝোতার ভিত্তিতে ভারতের সব ম্যাচ রাখা হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই স্টেডিয়ামে। ভারত ফাইনালে উঠলে শিরোপানির্ধারণী লড়াইও হবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশ নেওয়া ৭ দলই একাধিক ভেন্যুতে ম্যাচ খেলছে। ভারতের সঙ্গে একই গ্রুপে থাকায় ম্যাচ খেলার জন্য বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডকে দুবাই ও পাকিস্তানে যাতায়াত করতে হয়েছে। আবার যে সব দলের ম্যাচ শুধু পাকিস্তানে, তাদেরও লাহোর, করাচি, রাওয়ালপিন্ডিতে ঘোরাঘুরি করতে হচ্ছে। বিপরীতে ভারত ক্রিকেট দল দুবাইয়ে থেকে সেখানে অনুশীলন করে সব ম্যাচ একই মাঠে খেলছে।

কোথাও না যাওয়ায় রোহিত শর্মারা ‘স্পষ্টত সুবিধা’ পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছিলেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও ধারাভাষ্যকার নাসের হুসেইন ও মাইক আথারটন। পরে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটার রাসি ফন ডার ডুসেনও বলেন, এক ভেন্যুতে সব ম্যাচ খেলায় ভারত যে সুবিধা পাচ্ছে, সেটা বুঝতে রকেটবিজ্ঞানী হওয়ার দরকার নেই।

ভারতের সুবিধাসংক্রান্ত নাসের, আথারটনদের মন্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বেশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায়ই জানিয়েছেন গাভাস্কার। ভারতের কিংবদন্তি এ ক্রিকেটার চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে ইংল্যান্ডের বিদায়ের দিকে ইঙ্গিত করে ইন্ডিয়া টুডেকে বলেন, ‘তাঁরা সবাই জ্ঞানী এবং অভিজ্ঞ। তোমাদের দল যে (সেমিফাইনালে) উঠতে পারল না, সে দিকে নজর দিচ্ছ না কেন? আমি তোমাদের এই প্রশ্নটাই করছি স্যার। লাগাতার ভারতের কথা না ভেবে তোমরা কি নিজেদের দিকে তাকিয়ে দেখেছ? তোমাদের দলের ছেলেদের মানসিক অবস্থা এমনই যে, তাঁরা ফলাফল নিয়ে মাথাই ঘামাচ্ছে না।’

নাসের, আথারটনদের প্রতি ভারতের সাবেক অধিনায়কের পরামর্শ, ‘তোমাদের ফলাফল নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে। তোমাদের দেশ নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে, যে দলের জন্য খেলছ তাদের নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে। বরং ওই দায়িত্বটা আরও বড়। সব সময়ই দেখি তাঁরা হা হুতাশ করে। ‘‘ভারত এটা করেছে, ভারত ওটা করেছে’’। লাগাতার চলতে থাকে। আমাদের এখন এ সব অগ্রাহ্য করার সময় এসেছে। তাঁরা হা হুতাশ করুক। আমাদের মনোযোগ দেওয়ার আরও ভালো জিনিস আছে।’

টেস্ট ক্রিকেটে ১০ হাজার রান করা প্রথম ব্যাটসম্যান এখানেই থামেননি। ভারতের কেন এখন সমালোচকদের কথায় পাত্তা দেওয়ার দরকার নেই, সেটা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নাসের, আথারটনদের রুজি–রোজগারে তাঁর দেশের ভূমিকার প্রসঙ্গও টেনেছেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারত এখন মানের দিক থেকে, আয়ের দিক থেকে, প্রতিভার দিক থেকে, বিশেষ করে অর্থ আয়ের দিক কোন জায়গায় আছে, সেটা তাঁদের ধারণাতেই নেই। টেলিভিশনের সম্প্রচার স্বত্ব এবং মিডিয়া থেকে প্রাপ্ত আয়ের মাধ্যমে বৈশ্বিক ক্রিকেটে ভারতের বড় অবদান রয়েছে। তাঁদের বোঝা দরকার, বিশ্ব ক্রিকেটে ভারতের যে অবদান তার ওপরে তাঁদের বেতন নির্ভর করে।’

এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত। আগামীকাল গ্রুপ পর্বে দলটির শেষ ম্যাচ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সব ম য চ দরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফিরিয়ে দাও’ থেকে ‘ধূসর সময়’: সিডনিতে একই মঞ্চে মাইলস ও আর্টসেল

সিডনির বসন্তের সন্ধ্যা। লিভারপুলের হুইটল্যাম লেজার সেন্টারের বাইরে তখন লম্বা লাইন—হাতে পতাকা, কাঁধে ব্যাগ, চোখে প্রত্যাশা। সাউন্ডচেকের শব্দ ভেসে আসছে বাইরে। ভেতরে যেন উন্মুখ এক ‘সাগর’, যেখানে মিশে আছে দুই প্রজন্মের মুখ, কণ্ঠ আর স্মৃতি। শনিবার রাতটি হয়ে উঠেছিল প্রবাসী বাঙালিদের জন্য এক ব্যতিক্রমী উৎসব—বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের দুই যুগের দুই প্রতীক, মাইলস ও আর্টসেল; প্রথমবারের মতো একই মঞ্চে গান করল সিডনিতে।
‘গ্রিনফিল্ড এন্টারটেইনমেন্ট’ আয়োজিত এই ‘মিউজিক ফেস্ট’ ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছিল, তা যেন উপচে পড়ল সেই রাতে। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পরপরই সব শেষ। অনুষ্ঠান শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই সিডনির দক্ষিণ-পশ্চিম উপশহর লিভারপুলের রাস্তাগুলো ভরে গেল গানের ভক্তে।

আয়োজনের আগে ভিডিও বার্তায় মাইলস জানায় তাদের উচ্ছ্বাস। ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য হামিন আহমেদ বলেন, ‘সিডনি বরাবরই আমাদের কাছে বিশেষ কিছু। সম্ভবত ১৯৯৬ সালে আমরাই প্রথম বাংলাদেশি ব্যান্ড হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় পারফর্ম করি। এরপর এ নিয়ে অন্তত পঞ্চমবারের মতো সিডনিতে এলাম। এখানকার দর্শকদের ভালোবাসা সব সময়ই অবিশ্বাস্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতাম এটি স্মরণীয় একটি আয়োজন হতে যাচ্ছে। আমরা চেয়েছি সবাই একসঙ্গে গাইবে, চিৎকার করবে—ভক্তরা সেটাই করেছেন।’ গিটারিস্ট তুজো যোগ করেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি শহরে ট্যুর করছি, কিন্তু সিডনির আবহ একেবারেই আলাদা। দর্শকেরা আমাদের রাতটিকে স্মরণীয় করে দিয়েছেন।’

মঞ্চে আর্টসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ