ইটভাটায় চলমান অভিযানের প্রতিবাদে সাভারে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
Published: 4th, March 2025 GMT
অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের চলমান অভিযানের প্রতিবাদে সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় ইটভাটার মালিক ও শ্রমিকেরা। আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটা থেকে তুরাগ এলাকায় মহাসড়কের উভয় লেন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে অবরোধের কারণে মহাসড়কের উভয় পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। তবে বিক্ষোভকারীরা সেনাবাহিনীর সদস্যদের অনুরোধে সাড়া দেননি। একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া দিয়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন বলে জানা গেছে।
আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে সালেহপুর এলাকার এ জেড বি অ্যান্ড কোম্পানি নামের একটি ইটভাটার মালিক আবু সাইদ বলেন, হঠাৎই উপজেলা প্রশাসন ইটভাটাগুলোয় অভিযান চালিয়ে ভাটার চিমনিগুলো গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। একেকবার ব্রিক ফিল্ডে তিন–চার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়। এভাবে ভেঙে দিলে তো সবাই পথে বসবেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি, ব্রিক ফিল্ড যদি ভাঙতেই হয়, তবে আমাদের অন্তত তিন মাস সময় দিতে হবে। নির্দিষ্ট একটা সময় দিলে আমরা সেভাবে নিজেদের ব্যবস্থা করে নেব। প্রয়োজনে আর এ ব্যবসা করব না।’
নুরখোলা ইটভাটার এক শ্রমিক বলেন, গত ৫ আগস্টের পর যদি ইটভাটা ভেঙে দেওয়া হবে, তাহলে সরকার ভ্যাট নিল কেন? ১০ বছর ধরে একেকটা ভাটা চলছে। হঠাৎ প্রশাসন ভাটাগুলো ভেঙে দিচ্ছে। যদি ইটভাটা ভেঙে দেয়, তাহলে প্রথম থেকে ভাঙেনি কেন, এখন মৌসুমের শেষে ভেঙে দিচ্ছে। ভাটা ভেঙে দিলে তাঁরা কোথায় যাবেন?
বিকেল পৌনে চারটার দিকে সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
এ বিষয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুবকর সরকার বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের একটি নির্দেশনা রয়েছে, চলতি মাসের ১৭ তারিখের মধ্যে অবৈধ যত ইটভাটা রয়েছে, তা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে হবে। তাঁরা আদালতের সেই নির্দেশনা অনুসরণ করেই কাজ করছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন ব হ ন র সদস ইটভ ট র র ধ কর
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।