বিগত সময়ে তারা ছিলেন আওয়ামী লীগের কর্মী। পট পরিবর্তনের পর হয়েছেন জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের ইউনিয়ন কমিটির সভাপতিসহ বিভিন্ন পদের নেতা। সম্প্রতি পাবনার চাটমোহর উপজেলায় এমন অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (০৫ মার্চ) কৃষকদলের নবঘোষিত কমিটি থেকে ১০ জন পদত্যাগ করেছেন। একইসঙ্গে তারা নতুন করে ত্যাগী কর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন।

সম্প্রতি চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের কৃষকদলের ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে উপজেলা কৃষকদল। কমিটিতে সভাপতি পদে ওই ইউনিয়নের কুমারগাড়া গ্রামের নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি বাবু মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক নটাবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল মোমিন ও প্রচার সম্পাদক পদে দোদারিয়া গ্রামের আলহাজ হোসেনের নাম রয়েছে।

আরো পড়ুন:

হাওরে কাঁচা মরিচ চাষে লোকসানের মুখে চাষিরা

চরাঞ্চলের ভাগ্য বদলাবে বাকৃবি উদ্ভাবিত নতুন তিন পদ্ধতি

বিলচলন ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আফছার আলী ও যুগ্ম আহ্বায়ক মোখলেসুর রহমানসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, কমিটির সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্রচার সম্পাদক বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সভাপতি নজরুল ইসলামের বাড়িতে নৌকার অফিস ছিল। বিগত ১৬ বছরে তারা কোনোদিন বিএনপি বা অঙ্গ সংগঠনের কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেননি। তারা সবসময় আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছেন।

বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কৃষকদলের কমিটি বিলুপ্ত করে আওয়ামী লীগের দমন পীড়নে রাজপথে আন্দোলনে থাকা ত্যাগী কর্মীদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন।

বুধবার বিলচলন ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আফছার আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক মোখলেসুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আলামিন শেখ, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিমুল হোসেনসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিএনপির সভাপতি ও নেতারা কৃষকদলের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠনের জন্য পাবনা জেলা কৃষক দলের সভাপতি এবং সম্পাদকসহ উপজেলা কৃষকদলের নেতাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এদিকে, আওয়ামী লীগ কর্মীদের দিয়ে কৃষকদলের কমিটি গঠন করায় গঠিত নবঘোষিত কমিটির ১০ জন পদত্যাগ করেছেন। বুধবার (৫ মার্চ) তারা পদত্যাগপত্র দিয়েছেন জেলা ও উপজেলা কৃষকদল কমিটির কাছে।

পদত্যাগকারী নেতারা হলেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, সমাজকল্যাণ সম্পাদক জনি হোসেন, যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক মহসিন আলী, সহ দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সহ ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ইমরান হোসেন, সহ শিক্ষা ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক অলিফ হোসেন, সহ যোগাযোগ সম্পাদক মিনারুল ইসলাম, সদস্য আমিরুল ইসলাম ও আক্কাস আলী। 

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নতুন কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমি কখনো আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলাম না। আমি ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল করেছি। আমি আগে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম, এখনো আছি। ভবিষ্যতেও থাকবো। আমার প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করেছে। তারা প্রমাণ করুক আমি আওয়ামী লীগ করি।’’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাটমোহর উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আজাদুল ইসলাম বলেন, ‘‘অভিযোগ সত্য নয়। কমিটিতে না আসতে পেরে হয়ত তারা এ ধরনের অভিযোগ করেছেন। তারা যদি প্রমাণ করতে পারে, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ 

ঢাকা/শাহীন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নজর ল ইসল ম র ল ইসল ম য গ কর ছ ব এনপ র পদত য গ কর ছ ন ন কম ট কম ট র গঠন র উপজ ল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ