চিত্রশিল্পীরা কল্পিত অনেক চরিত্র আঁকেন। আবার মানুষের ছবি হবহু এঁকে ফেলতে পারেন। কিন্তু একশো বছর আগে আঁকা কল্পিত কোনো ছবির সঙ্গে যদি বর্তমানের কোনো মানুষের মুখ হুবহু মিলে যায়, তাকে কি বলবেন। কাকতালীয় বলতে পারেন আবার ব্যাপারটিকে ভীতিকরও আখ্যা দিতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ২২ বছর বয়সী তরুণী রাইলি ম্যাডিসন ল্যাডনার নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ভিডিওর পোস্ট করে থাকেন। হঠাৎ টিকটকে অচেনা এক ব্যক্তির বার্তা পান। যেটাতে লেখা ছিল, ‘আপনি দেখতে হুবহু ১৯০৯ সালে এক শিল্পীর আঁকা ছবির মতো।’’ বার্তাটি রাইলিকে চমকে দিয়েছিল। কিন্তু বিষয়টিকে তিনি খুব বেশি পাত্তা দেননি। কিন্তু একই বিষয়ে তিনি একাধিক বার্তা পেতে শুরু করেন।
এরপর রাইলি এ বিষয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেন। তিনি জানতে পারেন ‘অ্যাট দ্য ড্রেসিং টেবিল’ নামের একটি ছবিতে আঁকা নারীর চেহারার সঙ্গে নিজের চেহারার অনেকাংশেই মিল রয়েছে। ওই চিত্রকর্মটি রাশিয়ার চিত্রশিল্পী জিনাইদা সেরেব্রিয়াকভ-এর আঁকা।
আরো পড়ুন:
বেসনের সঙ্গে যে যে উপাদান মিশিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে পারেন
রোজায় ত্বকের যত্নে সহজ টিপস
চিত্রকর্মটিতে দেখা যাচ্ছে, এক তরুণী একটি ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে তার লম্বা চুল আলতো করে উঁচু করে ধরে চিরুনি দিয়ে আঁচড়াচ্ছেন। পরে রাইলি ওই চিত্রকর্মটির সামনে বসে একই রকম ভঙ্গি করে একটি ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন।
তিনি লিখেছেন, ‘‘এটা খুবই ভয় পাওয়ার মতো, প্রায় গা-ছমছম করে ওঠার মতো বিষয়। কারণ, চিত্রকর্মটি ১০০ বছরের বেশি পুরোনো, আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম।’’
নেটিজেনদের অনেকে ভিডিওটি দেখে মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, ছবিতে থাকা তরুণীর পুনর্জন্ম হয়েছে এবং রাইলিই ওই তরুণী।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?