যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ের ঢাকা-রংপুর-রাজশাহী মহাসড়কে আবারও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। কামারখন্দ উপজেলার ‘কোনাবাড়ী এলাকার ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে’র সামনে রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ‘জামায়াতপন্থি একদল শিক্ষক বহনকারী’ মাইক্রোবাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাত দল আচমকা ইট-পাটকেল ছুড়ে মাইক্রোবাসের গতি রোধ করে। গাড়িটি থামলে ৮-১০ জনের একদল ডাকাত শিক্ষকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। ভয় দেখিয়ে নগদ প্রায় ৬০ হাজার টাকা ও সাতটি মোবাইল ও দুটি পরিধেয় কোর্ট লুট করে পালিয়ে যায়। 

গত এক মাসে এই মহাসড়কে আরও দুটি যাত্রীবাহী প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এক মাসের ব্যবধানে পর পর তিনটি ডাকাতির ঘটনায় যাত্রী-চালকদের কাছে ‘আতঙ্কের জনপদ’ বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড়ের মহাসড়ক। 

পুলিশ বলছে, কামারখন্দ উপজেলার কোনাবাড়ী এলাকায় সাসেক-২ প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তার সম্প্রসারণ কাজ চলছে। ফলে সেখান দিয়ে চলাচলকারী ঢাকা-উত্তরাঞ্চগামী যানবহন ধীরগতিতে চলে। এ সুযোগে ডাকাতরা ছোট ছোট মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারের গতিরোধ করে সহজেই ডাকাতি করে পালিয়ে যায়। 

এছাড়া বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে সয়দাবাদ থেকে নলকা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় মহাসড়কের দুপাশে  ভুট্টা, আঁখ ও ফসলের ক্ষেত থাকায় বিশেষ করে রাতে অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। সেতুর টহল পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে ডাকাতদল প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাসে ডাকাতি করে সহজে পালিয়ে যায়।

ডাকাতি হওয়া শিক্ষক বহনকারী মাইক্রোবাসের চালক রাজশাহীর আশেক আল রহমান সমকালকে বলেন, রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাইক্রোবাসে করে কামারখন্দ উপজেলার কোনাবাড়ী এলাকার ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট পার হচ্ছিলাম। এ সময় ডাকাত দল আচমকা ইট-পাটকেল ছুড়ে আমাদের মাইক্রোবাসের গতি রোধ করা হয়। গাড়িটি থামলে ৮-১০ জনের একদল ডাকাত অস্ত্রের মুখে আমাদের জিম্মি করে। ভয় দেখিয়ে নগদ প্রায় ৬০ হাজার টাকা ও সাতটি মোবাইল ও দুটি পরিধেয় কোর্ট লুট করে পালিয়ে যায়। 

তিনি আরও বলেন, সেখানে আরও কয়েকটি ডাকাতির ঘটনায় আমরা আতঙ্কের মধ্যে ছিলাম। সেই আতঙ্কের মধ্যেই আবার ডাকাতির কবলে পড়লাম।

বঙ্গবন্ধু পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.

আনারুল ইসলাম সোমবার ভোরে জানান, ‘একদল শিক্ষক সেতুর পশ্চিমপাড়ের কোনাবাড়িতে রোববার রাতে ডাকাতির কবলে পড়েন। এ ঘটনায় রাতেই মামলা হলেও অপরাধীদের চিহ্নিত বা লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।’

ওসি আরও জানান, টহল পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে গত এক মাসের ব্যবধানে পশ্চিম পাড়ের মহাসড়কে পরপর তিনটি ডাকাতের ঘটনা ঘটেছে। কোন ডাকাতির ঘটনায় অপরাধীদের ধরা এখনো সম্ভব হয়নি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ ড ক ত র ঘটন আতঙ ক র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ