আইপিএলের প্রথমভাগে বেঞ্চে থাকবেন ‘গতি তারকা’ মায়াঙ্ক
Published: 11th, March 2025 GMT
আইপিএলের ১৮তম আসর বসতে যাচ্ছে রবিবার (২২ মার্চ, ২০২৫) থেকে। ফ্র্যাঞ্চাইজি দুনিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় এই আসরের খেলা মাঠে গড়ানোর আগে বড় ধাক্কা লাগল লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টে। দলটির গতি তারকা মায়াঙ্ক যাদব যে, আইপিলেরে প্রথমাংশে বেঞ্চে বসে থাকবেন।
কয়েকদিন আগে নিশ্চিত হয় যে, আইপিএলে প্রথম দুই সপ্তাহ খেলতে পারবেন না জাসপ্রীত বুমরাহ। এ বার সেই চোটের কারণেই মাঠে নামতে অপেক্ষা করতে হবে মায়াঙ্কেরও। তার পেশির চোট এখনও পুরোপুরি সারেনি। ঠিক কোন সময়ে তিনি আইপিএল খেলতে পারবেন, তা এখনও জানা যায়নি। তবে ধারণা করা যাচ্ছে প্রথম ছয়-সাতটি ম্যাচ লক্ষ্ণৌর এই পেসার খেলতে পারবেন না।
আরো পড়ুন:
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে না খেলা প্যাট কামিন্স খেলবেন আইপিএলে
মুজিব যেভাবে আইপিএলে
শেষ এক বছরে একের পর এক চোটে পড়েছেন মায়াঙ্ক। গত মৌসুমে ঘন্টায় প্রায় ১৫৭ কিলোমিটার গতিতে বল করে নজর কেড়েছিলেন তিনি। যে কারণে লক্ষ্ণৌ, জেদ্দায় অনুষ্ঠিত মেগা নিলামে তোলেনি এই গতি তারকাকে। ধরে রেখেছিল বিশাল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে।
এদিকে মায়াঙ্ককের চোটের ব্যাপের বিবৃতি দেওয়া হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে। তাকে পুরোপুরি সারিয়ে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দলটি। লক্ষ্ণৌর ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট জাহির খান ক্রিকইনফোকে বলেন, “আমরা চাই মায়াঙ্ক ১০০ শতাংশ নয়, বরং ১০০ শতাংশ ফিট হয়ে খেলতে নামুক।”
২০২৩ সালের লক্ষ্ণৌ মায়াঙ্ককে কিনেছিল মাত্র ২০ লক্ষ রুপিতে। তবে চোটের কারণে একটি ম্যাচও খেলা হয়নি তার। তার অভিষেক হয়েছিল গত মৌসুমে। প্রথম ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে তিন উইকেট নিয়েছিলেন। পরের ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষেও নিয়েছিলেন তিন উইকেট। পর পর দু’ম্যাচে সেরা হয়েছিলেন তিনি। তবে চোটের কারণে মাত্র চার ম্যাচ খেলেই থেমেছিল তার আইপিএল যাত্রা। সেটাই যথেষ্ঠ ছিল এই ২২ বছর বয়সী পেসারের জাতীয় দলে ঢুকার জন্য। বাংলাদেশের বিপক্ষে অভিষেক টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৪ উইকেট নেন, সাথে দেখান গতির ঝলক। সেই প্রতিশ্রুতি দেখেই ১১ কোটি টাকা দিয়ে মায়াঙ্ককে ধরে রাখে লক্ষ্ণৌ।
আইপিএলে লক্ষ্ণৌ প্রথম ম্যাচ ২৪ মার্চ। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে খেলবে তারা।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও
রংপুরের গংগাচড়ায় ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সহিংসতার শিকার হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘটনার তিন দিন পরেও এলাকায় ফেরেনি অনেক পরিবার। আতঙ্কে এখনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।
গত ২৭ জুলাই রাতে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আগে এলাকায় মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়।
পুলিশ, প্রশাসন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, যারা হামলা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন ‘বহিরাগত’। পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে লোকজন এসে হামলা চালিয়ে চলে যায়। হামলার সময় ২২টি ঘরবাড়ি তছনছ ও লুটপাট করা হয়।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প বসানো হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঢেউটিন, কাঠ, চাল-ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবু আতঙ্কিত পরিবারগুলো।
ক্ষতিগ্রস্তদের একজন অশ্বিনী চন্দ্র মোহান্ত বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল এক ভয়াবহ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননাকারী কিশোরকে থানা হেফাজতে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঘরবাড়ি রক্ষা হয়নি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি এবং কিছু মুরুব্বি আমাদেরকে অভয় দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষা হয়নি।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেরাই অভিযুক্ত কিশোরকে থানায় সোপর্দ করেছি। তারপরও মিছিল নিয়ে এসে দুই দফায় আমাদের ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়ে লুটপাট করেছে তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেই অপরিচিত।”
আরেক ভুক্তভোগী দেবেন্দ্র চন্দ্র বর্মন জানান, “প্রথমে অল্পসংখ্যক কম বয়সী কিছু ছেলে আসে। পরে হাজারো লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালায়। অনেকেই এখনো আত্মীয়দের বাড়িতে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”
রবীন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী রুহিলা রানী বলেন, “ছোট ছেলেটা যদি ভুল করে থাকে, আমরা তাকে থানায় দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ কেন? আমাদের গরু, সোনা-টাকা সব লুটে নিয়েছে। শুধু চাল-ডাল আর টিনে কি জীবন চলে?”
গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
গংগাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরটিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক নিরাপত্তায় নিয়োজিত।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান মৃধা বলেন, “অপরাধীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হচ্ছে সহায়তা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।”
উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যমতে, হামলায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। ঘর মেরামতের পর কিছু পরিবার ফিরলেও অভিযুক্ত কিশোর ও তার চাচার পরিবারের কেউ এখনো ফিরে আসেনি।
ঢাকা/আমিরুল/ইভা