ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল থেকে আড়াই মাস বয়সী একটি শিশু চুরি হয়েছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ওই ঘটনা ঘটে।

শিশুটির মা হাসি বেগম অভিযোগ করেন, সোমবার সারা দিন এক অচেনা নারী তাঁদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেন। পরে ওই নারী তাঁর সন্তানকে চুরি করে পালিয়েছেন।

এদিকে শিশুটি উদ্ধারের দাবিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে শিশুটির পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন।

নিখোঁজ শিশুটির নাম সায়ান। সে সদর উপজেলার মুন্সিরহাট গ্রামের শিমুল হোসেনের ছেলে। পরিবারের সদস্যরা জানান, ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় সায়ানকে রোববার ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সোমবার সকালে তার মা ও নানির সঙ্গে এক অচেনা নারীর পরিচয় হয়। ওই নারী সারা দিন সায়ানের পরিচর্যায় সহযোগিতায় করেন। সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ওই নারীর কাছে সায়ানকে রেখে তাঁরা দুজন পাশের ওয়ার্ডে অন্য এক রোগীকে দেখতে যান। পরে তাঁরা ফিরে এসে দেখেন, সায়ান ও ওই নারী নেই। হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়েও তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে সায়ানের স্বজনদের হাসপাতালে এসে খোঁজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করেন। পরে পুলিশের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়ে তাঁরা সড়ক থেকে সরে যান।

পরে হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করে দেখা যায়, ওই নারীই শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন।

সায়ানের মা হাসি বেগম আজ মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, ‘ওই নারী খুব আন্তরিক ছিলেন। যেকোনো কাজে নিজেই এগিয়ে আসতেন। তাই তাঁর ওপর বিশ্বাস জন্মে গিয়েছিল। সায়ানকে তাঁর কাছে রেখে গিয়েছিলাম। কিন্তু সে যে এমন কাজ করবে, বিশ্বাস করতে পারছি না।’

এ ঘটনায় শিশুটিকে উদ্ধারের দাবিতে আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তায় অবস্থান নেন স্বজন ও শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে তাঁরা সড়কের ওপর বসে পড়েন। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে বেলা একটার দিকে জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় ইশরাত ফারজানা বলেন, ‘সিসি ফুটেজ দেখে আমরা নিশ্চিত হয়েছি ওই নারী কোন পথে কোন জায়গায় শিশুটিকে নিয়ে গেছেন। মুঠোফোন ট্র্যাক করে আমরা তাঁর অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।’ এরপর অবরোধকারীরা সড়ক থেকে সরে যান।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুর রহমান বলেন, ‘আমরা শিশুটির অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটা সুখবর দিতে পারব।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওই ন র ঠ ক রগ অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

সবার নজরের বাইরে থাকা চৈতী দেশের জন্য আনল স্বর্ণপদক

একটু বড় হওয়ার পর মেয়েকে দেখে চিন্তায় পড়ে যান মা–বাবা। অন্য শিশুদের মতো বাড়ছে না সে। হাত–পা ছোট, উচ্চতাও থমকে গেছে। পরে বুঝতে পারেন—চৈতী বামন।

যে মেয়েকে নিয়ে একসময় দুশ্চিন্তার পাহাড়ে আটকা পড়েছিল পরিবার, আজ সেই চৈতীই আনন্দের আলো ছড়াচ্ছে। দেশের জন্য প্রথমবারের মতো এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছে চৈতী রানী দেব।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামের শিলু রানী দেব ও সত্য দেবের মেয়ে চৈতীর বয়স ১৩ বছর। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। কিন্তু তার লক্ষ্য নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫–এ বর্শা নিক্ষেপ ও ১০০ মিটার দৌড়ে সে জিতে নিয়েছে দুটি স্বর্ণপদক। ৭ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

চৈতীর প্রতিভা আছে। অনুশীলনে সে খুব আন্তরিক। সে কিছু করতে চায়। আশা করছি, ওকে দিয়ে একটা ভালো ফলাফল পাবমেহেদী হাসান, বিকেএসপির প্রধান প্রশিক্ষক

চৈতীর স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়টি দুবাই থেকে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্সের (শি) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী শারমিন ফারহানা চৌধুরী।

যে মেয়েকে সবাই দেখত শুধু উচ্চতায়

ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চৈতী একসময় গ্রামবাসীর নজরে পড়ত শুধু তার খর্বাকৃতির জন্য। খেলাধুলায় তার যে অসাধারণ প্রতিভা আছে, তা ছিল চোখের আড়ালে।

তবে এই ছবি এখন বদলে গেছে। গ্রামবাসী বাড়িতে এসে খোঁজ নেন। শিক্ষকেরা খেলতে উৎসাহ দেন, ছবি তোলেন। স্কুলে সে এখন ‘তারকা’।

দুবাইয়ে বর্শা নিক্ষেপে স্বর্ণপদক জয়ের পর চৈতী

সম্পর্কিত নিবন্ধ