কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক‍্যাম্পে পৌঁছেছেন বাংলাদেশে সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। দিনভর বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন তিনি। তাঁর সঙ্গে বিমানের একই ফ্লাইটে কক্সবাজার পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার দুপুর ১২টা ৪৮ মিনিটে তাঁদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি চার্টার্ড ফ্লাইট কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বিমানবন্দরে তাঁদের স্বাগত জানান। 

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস বিভাগ থেকে জানান হয়েছে, জাতিসংঘের মহাসচিব কক্সবাজার বিমানবন্দরে নেমে বেশ কিছু অনুষ্ঠানিকতা সেরে উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সেখানে তিনি বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। বেলা ২টা ১০ মিনিটের দিকে রোাহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছেন মহাসচিব।

জাতিসংঘ মহাসচিবের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন। এসব অনুষ্ঠান শেষে জাতিসংঘ মহাসচিব উখিয়ায় প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন।

অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস কক্সবাজার বিমানবন্দরের একটি প্রকল্প উদ্বোধন এবং খুরুশকূল জলবায়ু উদ্বাস্তু কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। পরে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে ইফতারে যোগ দেবেন। বাসস জানায়, পরিদর্শন ও ইফতার শেষে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব একসঙ্গে সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরবেন।

শুক্রবার দুপু্রে কক্সবাজার পৌঁছে নির্মাণাধীন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দুটি সাইট পরিদর্শন করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানকার কাজের অগ্রগতি ও সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করা হয়। এ সম্পর্কিত একটি সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।  

তারা জানান, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্মাণকাজ ৯৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি চালু হলে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০টি এয়ারক্রাফট এই বিমানবন্দর থেকে ওঠা-নামা করবে বলে প্রধান উপদেষ্টাকে জানানো হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.

জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয় করছে। সফরকে ঘিরে বহু স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

 

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শরণ র থ শ ব র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ