নিজেদের দেশে ২৯ বছর পর আইসিসি ইভেন্ট আয়োজন করে গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারেনি পাকিস্তান। ভারত ও নিউ জিল‌্যান্ডের কাছে ম‌্যাচ হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় শূন‌্য হাতে। বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের পয়েন্ট ভাগাভাগিতে মেলে সান্তনা।

এমন ভরাডুবির পর প্রবল সমালোচনা হচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে নিয়ে। দলটির সীমিত পরিসরের কোচ আকিব জাভেদ দলের ব‌্যর্থতার পেছনে দলটির লাল বলের কোচ জেসন গিলেস্পিকেও দায়ি করেছেন। সঙ্গে পিসিবির মনোভাবও।

আকিবের মন্তব‌্যে বেশ চটেছেন পাকিস্তানের সাবেক কোচ মিকি আর্থার। টক স্পোর্টসের সঙ্গে আলাপচারিতায় আর্থার প্রবল সমালোচনা করেন পাকিস্তানের ক্রিকেট নিয়ে। তার ভাষ‌্য, ‘‘আমি এই কথাটা বলতে পেরে আনন্দিত হবো এবং সত‌্যি বলতে এটাই সত‌্য। জেসন গিলেস্পি অসাধারণ কোচ। দারুণ মানুষ। পাকিস্তান ক্রিকেট ধারাবাহিকভাবে নিজেদের ক্ষতি করে পায়ে কুড়াল মারছে। আমি বলবো, তারা নিজেরাই নিজেদের শত্রু।’’

আর্থার পাকিস্তানকে চ‌্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা জিতিয়েছিলেন, ২০১৭ সালে। এরপর আরো কয়েক বছর ছিলেন দলটির দায়িত্বে। ২০১৯ বিশ্বকাপে ভালো করতে না পারায় তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। চ‌্যাম্পিয়নস ট্রফির ব‌্যর্থার পর আকিবের অভিযোগ ছিল এমন, “আমরা গত দুই বছরে প্রায় ১৬ জন কোচ ও ২৬ জন নির্বাচক পরিবর্তন করেছি। বিশ্বের যে কোনো দলে যদি এই কৌশল প্রয়োগ করা হয়, তারাও এমন অস্থিতিশীলতার মুখোমুখি হবে। ’’

আকিবের এমন কথায় চটে তাকে ‘‘ক্লাউন’’ বলতেও দ্বিধা করেননি আর্থার, ‘‘তারা বেশ ভালোমানের কোচ পেয়েছিল যাদের হাত ধরে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল। তারপর একজন মেশিন এলো যিনি নিজের দলকেই খাটো করা শুরু করলো এবং গণমাধ‌্যমে নিজস্ব এজেন্ডা নিয়েই চলছেন তিনি।’’

‘‘ওখানে একটা জঙ্গল হয়ে আছে সেজন‌্য গ‌্যারি এবং গিলেস্পির জন‌্য খারাপ লাগছে। কোনো সন্দেহ নেই তাদেরকে খাটো করে দেখা হচ্ছে। খেলোয়াড় এবং পাকিস্তান ক্রিকেটের নির্ণয় করতে হবে তারা কি চাচ্ছে।’’ – যোগ করেন তিনি।

পাকিস্তান থেকে অনেক দূরে থাকলেও আর্থার দলটি নিয়ে বেশ আশাবাদী, ‘‘পাকিস্তানে বেশ ভালোমানের খেলোয়াড় আছে। তাদের সম্পদও বেশ শক্তিশালী। তরুণ খেলোয়াড়রা বেশ উদ্দীপ্ত। তাদের স্কিলও অসাধারণ। তবে যেভাবে তারা খেলছে তা মানা কঠিন। দেখে হতাশা বাড়ছে।’’

ঢাকা/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আর থ র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ