উত্তেজনা ঘিরে বামপন্থিদের গণমিছিল স্থগিত, দেখা যায়নি লাকীকে
Published: 15th, March 2025 GMT
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ, ধর্ষণের বিচারসহ সাত দাবিতে বামপন্থি কয়েকটি সংগঠনের গণমিছিল স্থগিত করা হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টায় তারা দাবিগুলো নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। তবে ইনকিলাব মঞ্চসহ কয়েকটি সংগঠনের প্রতিবাদী কর্মসূচি ঘিরে ‘উত্তেজনা’ তৈরি হলে তারা গণমিছিল স্থগিত করেন। তবে সমাবেশে গণজাগরণ মঞ্চের লাকি আক্তারকে দেখা যায়নি।
এর আগে শুক্রবার রাতে ফেসবুকে কর্মসূচির কথা জানিয়ে যুক্ত হবার আহ্বান জানান লাকী আক্তার। এতে বিভিন্ন মহলকে প্রতিক্রিয়া দেখাতে দেখা যায়। গণমিছিলটি শহীদ মিনার থেকে টিএসসি পর্যন্ত হওয়ার কথা ছিল।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, আমাদের এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদেরকে গতকাল থেকে গোয়েন্দা সংস্থা থেকে বারবার করে ফোন দিয়ে বলা হয়েছে, আমরা যেন এ কর্মসূচি পালন সংক্ষেপ করি এবং পালন না করি। আমরা বলতে চাই, হামলা-মামলার ভয় দেখিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।
আরও পড়ুন: সিপিবির কার্যালয়ের সামনে সতর্ক অবস্থানে পুলিশ, বিকেলে শোকমিছিল
তিনি বলেন, অবিলম্বে জুলাই আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে, অবিলম্বে মোট ভায়োলেন্সে যারা নিহত হয়েছেন, তাদের বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগ আমল থেকে এই অন্তর্বর্তী সরকার আমলে যে হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, তার যথাযথ বিচার করতে হবে।
ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি আরও বলেন, সমাবেশে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের যে গণমিছিল হওয়ার কথা ছিল; শহীদ মিনার থেকে টিএসসি পর্যন্ত, সে গণমিছিল আমরা স্থগিত করে আমাদের সমাবেশ সমাপ্ত ঘোষণা করছি।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট একাংশের সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ, যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে-
১.
২. ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণ করতে হবে।
৩. জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে।
৪. মসজিদ, মন্দির, মাজারে হামলাকারী মব সন্ত্রাসীদের বিচার করতে হবে।
৫. চট্টগ্রাম কোর্ট প্রাঙ্গণে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ, যৌথ বাহিনী দ্বারা শ্রমিক হত্যার বিচার করতে হবে।
৬. সাগর-রুনি, তনু, আফসানা, মুনিয়াসহ পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ আমলে সংগঠিত হত্যার বিচার করতে হবে।
৭. হিন্দু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে হামলা, লুটপাটের বিচার করতে হবে।
এদিকে বামপন্থিদের কর্মসূচির প্রতিবাদে শাহবাগে জমায়েত হয়ে শহীদ মিনারে পদযাত্রা দিয়েছিল ইনকিলাব মঞ্চ। বেলা ১২ টার দিকে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি শহীদ মিনার থেকে বামপন্থিদের সরে যেতে পাঁচ মিনিটের আলটিমেটাম দেন। বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে তারা পদযাত্রা নিয়ে শহীদ মিনারের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তবে গণমিছিল প্রত্যাহার করায় তারা পুনরায় শাহবাগে ফিরে যান।
পরে শাহবাগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে কর্মসূচি ঘোষণা করে ২ দফা দাবি জানান ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীর উসমান হাদী।
ইনকিলাব মঞ্চের দাবিগুলো হলো-
১. জুলাই, পিলখানা, শাপলা গণহত্যার বিচার করতে হবে।
২. গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
কর্মসূচি ঘোষণা করে শরীফ উসমান হাদী বলেন, শাহবাগ যারা ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটিয়েছে, তাদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করে শাস্তি প্রদান করতে হবে৷ আমরা জানতে পেরেছি, দেশকে অস্থিতিশীল করতে আওয়ামী লীগ হাজার কোটি টাকা খরচ করছে। জাতিসংঘের মহাসচিবের সামনে দেশকে অস্থিতিশীল হিসেবে দেখাতে এই প্রচেষ্টা করছে শাহবাগীরা। আজকে যদি আমরা শাহবাগে অবস্থান না করতাম; তারা আবার শাহবাগ দখল করে আরেকটা শাহবাগ করতো।
এদিকে শাহবাগ থেকে ‘ল তে লাকি, তুই হাসিনা তুই হাসিনা’ স্লোগান ধরে শাহবাগ থেকে রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল করেছে চেতনায় শাপলা নামে একটি সংগঠন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ব চ র করত ব মপন থ গণম ছ ল আম দ র শ হব গ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তরুণ গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৫
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে মো. রাব্বি মিয়া (২০) নামের এক তরুণ আহত হওয়ার ঘটনায় ১০ জনের নামে মামলা হয়েছে। গুলির ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকালে আহত রাব্বির মা জোহরা খাতুন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
গুলিবিদ্ধ রাব্বি উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের হেলাল মিয়ার ছেলে। বর্তমানে রাব্বি পরিবারের সঙ্গে নবীনগর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝিকাড়া এলাকায় ভাড়া থাকেন। তিনি পেশায় একজন অ্যাম্বুলেন্সচালক।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নবীনগর উপজেলার টিঅ্যান্ডটিপাড়ার বাসিন্দা মো. আতাউর রহমান (৪৮), জাহিদ মিয়া (১৯), জুবায়েদ মুন্সী (১৯), মো. আহসান উল্লাহ (৪৪) ও মো. জসিম উদ্দিন (৪৪)। তাঁরা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. খুরশিদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ নভেম্বর টিঅ্যান্ডটিপাড়ার বাসিন্দা মো. সানি (২০) ও একই পাড়ার মো. জিসানের মধ্যে কথা–কাটাকাটি ও তর্ক হয়। একপর্যায়ে ঝগড়ার সময় সানি জিসানকে ছুরিকাঘাত করেন। এ ঘটনার জেরে উভয় পক্ষ সালিস ডাকে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে নবীনগর পৌর এলাকার কালীবাড়ি মোড়ের জমিদারবাড়ির মাঠে সানিসহ তাঁর লোকজন ও জিসানসহ তাঁর লোকজন সালিসে বসেন।
গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত রাব্বি সানির পক্ষের সমর্থক। তবে সালিসের রায়ে সানি ও তাঁর লোকজন সম্মত হননি। সালিস ছেড়ে ওঠার সময় জিসানসহ তাঁর লোকজন সানির লোকজনের ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে জিসান বন্দুক বের করে গুলি করেন। এতে রাব্বি গুলিবিদ্ধ হন এবং প্রতিপক্ষের হামলায় সানি আহত হন।
গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন রাব্বিকে উদ্ধার করে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, তরুণের বুকের বাঁ পাশের পাঁজরে গুলি লেগেছে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল মধ্যরাত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গুলির ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।