অসুস্থ হওয়ার পরও খালেদা জিয়া স্বৈরাচারের কাছে মাথা নত করেননি: শামা ওবায়েদ
Published: 16th, March 2025 GMT
কারাগারে যাওয়ার পর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আওয়ামী লীগ সরকার বিষ প্রয়োগ করেছিল বলে শুনতে পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) শামা ওবায়েদ। বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উনি (খালেদা জিয়া) যখন হাসপাতালে ছিলেন, তখন ওনাকে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল বলেও আমরা শুনতে পেয়েছি। সেই অবস্থায় উনি আরও অসুস্থ হয়েছেন। সেই অসুস্থ হওয়ার পরেও উনি স্বৈরাচারের কাছে মাথা নত করেননি।’
ফরিদপুরে ইফতার পার্টি–পূর্ব এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন শামা ওবায়েদ। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জুলফিকার হোসেনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে আজ রোববার ফরিদপুর শহরের অম্বিকা ময়দানে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জুলফিকার হোসেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রশিদুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক আফজল হোসেন প্রমুখ।
শামা ওবায়েদ বলেন, ‘আমাদের ১৫ বছর, ১৭ বছরের যে যুদ্ধ, যে কষ্ট, যে অত্যাচার, যে অনাচার, যে ত্যাগ, যে তিতিক্ষা সবচেয়ে বেশি ত্যাগ যাঁরা করেছেন, আমি বলব গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। যিনি অসুস্থ অবস্থায় ছিলেন। ওনাকে একটি মিথ্যা মামলায় সম্পূর্ণ বিনা দোষে ছয় বছর জেল খাটতে হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ওনাকে (খালেদা জিয়া) ও ওনার পরিবারকে বারবার বলা হয়েছিল যে উনি যদি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চান, তাহলে ওনাকে জামিন দেওয়া হবে। কিন্তু তিনি অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি।’
শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি বলে উল্লেখ করে শামা ওবায়েদ বলেন, ‘সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, আমাদের মধ্যে ১৫ বছর যাঁরা ছিলেন না, যাঁদের আমরা দেখিনি, যাঁরা কখনো কোনো আন্দোলন–সংগ্রামে ছিলেন না, তাঁদের ঘাড়ের ওপর সওয়ার হয়ে আওয়ামী লীগ ফিরে আসতে চাচ্ছে। আমাদের সে জন্য সজাগ থাকতে হবে। সব রকম ষড়যন্ত্রের ঊর্ধ্বে থেকে আমাদের দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে, জনগণের পাশে থাকতে হবে।’
বাংলাদেশ এখন ‘সবচেয়ে বড় বিপদ অতিক্রম করছে’ মন্তব্য করে বিএনপির নেত্রী শামা ওবায়েদ বলেন, ‘সবচেয়ে ক্রান্তিকাল আমরা পার করছি। এখনো আমরা ভোটাধিকার পাইনি। আমরা এখনো একটা ভোট দিতে পারিনি। নির্বাচন ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের যে যুদ্ধ, সেই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।’
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তুলে ধরে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে শামা ওবায়েদ বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের এই দাবি থাকুক, হাসিনামুক্ত, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে আর কোনো নারী নির্যাতন চাই না। আর কোনো অত্যাচার ও অনাচার চাই না। আর কোনো ডাকাতি চাই না। আর কোনো খুন–গুম দেখতে চাই না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র আম দ র আর ক ন
এছাড়াও পড়ুন:
কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত মসজিদ কমিটির সভাপতির মৃত্যু
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত মসজিদ কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম (৫২) ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। প্রায় আড়াই মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর শনিবার (১৪ জুন) তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় শনিবার (১৪ জুন) রাতে চর আবাবিল ইউনিয়নের উদমারা এলাকা থেকে কিশোর গ্যাং সদস্য সাব্বির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে অভিযুক্ত রহিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কিশোর গ্যাং সদস্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরো পড়ুন:
পরকীয়ার জেরে স্বামী-স্ত্রীর বিষপান, মারা গেলেন স্বামী
ফুলকুমার নদে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
নিহতের ভাই মো. জসিম উদ্দিন জানান, দক্ষিণ চর আবাবিলের উদমারা এলাকায় জুয়ার আসর ও মাদক সেবনের প্রতিবাদ করায় ৩ এপ্রিল স্থানীয় কিশোর গ্যাং সদস্যরা জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাকে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে সদর হাসপাতালে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ চিকিৎসার পর শনিবার (১৪ জুন) তিনি মারা যান।
পুলিশ জানায়, জাহাঙ্গীর আলম উদমারা সাহাদু উল্যা মাঝিবাড়ি জামে মসজিদের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। মসজিদের আশপাশে মাদক ও জুয়া বন্ধে তার ভূমিকার কারণে কিশোর গ্যাংয়ের বিরাগভাজন হন তিনি। হামলায় নেতৃত্ব দেন কিশোর গ্যাং সদস্য জুবায়ের, বাহার ও সাব্বির।
এ ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী রাজিয়া বেগম ৭ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরো ২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। আদালত মামলা আমলে নিয়ে রায়পুর থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেয় এবং ১০ এপ্রিল মামলা রুজু হয়।
এর আগে একই এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের হামলায় সুদেব শীল মনু নামে একজন নিহত হন। এ সব ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী একাধিকবার বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করলেও থামেনি কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য।
ঢাকা/লিটন/বকুল