ভারত–ম্যাচে নায়ক, এরপর খলনায়ক: আবার ভারতকে পেয়ে নায়ক হতে চান সাদ
Published: 23rd, March 2025 GMT
বাংলাদেশের ফুটবলে সাদ উদ্দিন নামটা এলেই অনেকের চোখে ভাসে সেই দৃশ্যটা। কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ভারতের বিপক্ষে ২০১৯ সালের অক্টোবরে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি–কিকে সাদের উড়ন্ত হেডে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল গ্যালারি।
৪২ মিনিটের গোলে পাওয়া এই অগ্রগামিতা ৮৮ মিনিট পর্যন্ত ধরে রেখেছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা জিততে না পারলেও ওই হেড সাদকে রাতারাতি বাংলাদেশের ফুটবলে তারকা বানিয়ে দেয়।
মাঝে তিনটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রতিপক্ষকে পেনাল্টি দিয়ে সিলেটের এই ফুটবলার হয়েছেন খলনায়কও। সেই সাদের সামনে আবারও নায়ক হওয়ার সুযোগ। ২৫ মার্চ শিলংয়ে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে ভারতের বিপক্ষে গোল করতে পারলে সেটি হবে তাঁর জীবনের সেরা প্রাপ্তিগুলোর একটি।
সে কথা গতকাল শিলংয়ের জওহরলাল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনের ফাঁকে প্রথম আলোর এক প্রশ্নে বললেনও তিনি, ‘ইনশা আল্লাহ সুযোগ পেলে অবশ্যই গোল করে দলকে জেতাতে চাই।’
কিন্তু জিততে হলে যেমন অনুকূল পরিবেশ পেতে হয়, ২০১৯ সালে তা কলকাতায় পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেবার নিজেদের মনমতো অনুশীলন করা গেছে। পছন্দনীয় ঘাসের মাঠ পেয়েছেন ফুটবলাররা।
কিন্তু এবার শিলং এসে প্রথম দুদিনে অনুশীলন মাঠ নিয়ে বাংলাদেশ দলে রয়েছে অসন্তোষ। সেটা উল্লেখ করে সাদ বললেন, ‘২০১৯ সালে সল্টলেকে ম্যাচের আগে এমন সমস্যা ছিল না। সুযোগ–সুবিধা ভালো ছিল। ভালো মাঠে অনুশীলন করেছি। কিন্তু এবার যা অবস্থা, এটা আমাদের জন্য ভালো নয়। আমরা জানতাম এমন সমস্যার মুখোমুখি হব। তবে আমরা মানসিকভাবে তৈরি। এবার আমাদের জিততে হবে। জয়ের মানসিকতা নিয়েই আমরা এখানে এসেছি।’
আরও পড়ুনহামজা আসলে কতটা ভালো, কী বলছেন তাঁর বাংলাদেশ-সতীর্থ১ ঘণ্টা আগেসাদ যখন কথাগুলো বলছিলেন, মনে পড়েছিল ২০১৯–পরবর্তী সময়ে ভিন্ন কারণে তাঁর আলোচনায় আসার সেই দিনগুলো। ২০২১ মালদ্বীপ সাফে নেপালের সঙ্গে জিতলে যেখানে ফাইনালে উঠবে বাংলাদেশ—ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে বক্সে তাঁর ফাউলে পিছিয়ে থাকা নেপাল পেনাল্টিতে ১–১ করে। বাংলাদেশ আর ফাইনালে উঠতে পারেনি।
ওই বছরই শ্রীলঙ্কায় চার জাতি টুর্নামেন্টে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ড্র করলে ফাইনালে উঠত বাংলাদেশ, সেই ম্যাচে ৯০তম মিনিটে বক্সে বল লাগে সাদের হাতে। পেনাল্টিতে গোল করে স্বাগতিক দল ২–১ গোলে জিতে ফাইনালে উঠে যায়।
বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে সাদ উদ্দিন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।
কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।
নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।
জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’
কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’