পথসভায় বাধা, হামলায় আহত হান্নান মাসউদ
Published: 25th, March 2025 GMT
নোয়াখালীর হাতিয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদের পথসভায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় হামলায় তিনিসহ দলের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ এনসিপি নেতাদের। এ ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক রাস্তায় বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। গতকাল সোমবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার জাহাজমারা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে, ভোলায় এনসিপির প্রতিনিধি কমিটির সদস্য খোকন হাওলাদারকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টির হাতিয়া প্রতিনিধি মো.
জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল্লাহিল মজিদ নিশান বলেন, সন্ধ্যার আগে উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আবদুর রবকে পিটিয়ে আহত করা হয়। প্রতিবাদে জাহাজমারা বাজারে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে নেতাকর্মীরা। মিছিলটি পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে গেলে আবদুল হান্নান মাসউদের পথসভার সামনে পড়ে। এ সময় সামান্য উত্তেজেনা দেখা দেয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
এ ঘটনায় রাত ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আবদুল হান্নান মাসউদ নেতাকর্মী নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
হাতিয়া থানার ওসি এ কে এম আজমল হুদা বলেন, খবর পেয়ে জাহাজমারার উদ্দেশে রওনা হয়েছি। কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছাব। তবে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
এদিকে, ভোলার লালমোহন মডেল মসজিদ এলাকা থেকে তুলে নিয়ে এনসিপির প্রতিনিধি কমিটির সদস্য খোকন হাওলাদারকে মারধর করা হয়েছে। রোববার বিকেলে এ ঘটনায় তাঁর সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও বাজারের ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়া হয়। খবর পেয়ে স্বজনরা গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় বিএনপির বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন আহত খোকন। তবে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম বাবুলের দাবি, এ হামলার সঙ্গে বিএনপির কেউ জড়িত নন।
আহত খোকন হাওলাদারের বাড়ি কালমা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চরছকিনা গ্রামে। ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খোকন অভিযোগ করেন, গত রোববার বিকেলে লালমোহন থেকে নিত্যপণ্য কিনে বাড়ি ফেরেন তিনি। লালমোহন মডেল মসজিদের কাছে পৌঁছালে সানাউল, নাফিজ, শাহিনসহ কয়েকজন অটোরিকশা থামিয়ে তাঁকে মারধর করে। এক পর্যায়ে তাঁকে কলেজ রোডের এক বাগানে নিয়ে কয়েক দফা মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেয়। অস্ত্র হাতে দিয়ে ছবি তোলে এবং এ অস্ত্র তাঁর বলে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা চালায়। হামলাকারী সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। নাগরিক কমিটির রাজনীতি করার কারণেই তাঁকে মারধর করার অভিযোগ করেন তিনি।
আহত খোকনকে হাসপাতালে দেখতে এসে হামলাকারীদের বিচার চেয়েছেন এনসিপি ভোলা সদর উপজেলা প্রতিনিধি কমিটির সদস্য রশিদ আহাম্মদ ও ইয়াছিন আরাফাত। খোকন হাওলাদার বিএনপির রাজনীতি ছেড়ে এনসিপির রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন তারা।
খোকন হাওলাদার জানান, তিনি কালমা ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর বিএনপির রাজনীতি ছেড়ে এনসিপির মিছিল-মিটিং করছেন তিনি। এ কারণে তাঁর ওপর হামলা করা হয়। গত ৬ মার্চ একবার মারধর এবং তাঁর ব্যক্তিগত অফিস ভাঙচুর করা হয়।
লালমোহন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম বাবুলের ভাষ্য, বিএনপির কেউ এ হামলায় জড়িত নন। খোকনের ভাই মাসুদ ওয়ার্ড শ্রমিক লীগের সম্পাদক ও সন্ত্রাসী। বিগত দিনে মাসুদের কর্মকাণ্ডের জেরে মার খেয়েছেন তিনি। এখন বদনাম করার জন্য কারও শেখানো কথায় বিএনপির নামে অপপ্রচার করছেন। খোকন কখনও বিএনপির রাজনীতি করেছেন বলে জানা নেই তাঁর।
লালমোহন থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, খোকন হাওলাদার বিএনপির সাবেক ওয়ার্ড সেক্রেটারি। এনসিপির সদস্য কিনা, সেটি জানা নেই। এ ঘটনায় মামলা হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আহত আবদ ল হ ন ন ন ম সউদ ব এনপ র র জন ত প র র জন ত ব এনপ র স ন ত কর ম য় ব এনপ এনস প র র সদস য এ ঘটন য় কম ট র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষ বলছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, বাকি শুধু ইসলামি শাসন দেখার: গোলাম পরওয়ার
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আপনারা বিগত ৫৪ বছরে বিভিন্ন দলের শাসন দেখেছেন। সেখানে জনগণের কাঙ্ক্ষিত কল্যাণ সাধিত হয়নি। বিগত সরকারগুলো হত্যা, লুটপাট, দুর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচার, অবিচারের মাধ্যমে দেশকে একটি অস্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। দেশের মানুষ এখন বলতে শুরু করেছে, সব দলের শাসন দেখা হয়েছে, শুধু বাকি রয়েছে ইসলামি শাসন দেখার। তাই তো আমিরে জামায়াত শফিকুর রহমান একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের ডাক দিয়েছেন। একটি জনমুখী ও কল্যাণকর রাষ্ট্রের রূপরেখা ঘোষণা করেছেন। যেখানে লুটপাট-দুর্নীতির মাধ্যমে দেশ তলাবিহীন ঝুড়ি হবে না, বেকারত্বের অভিশাপ কোনো যুবককে বয়ে বেড়াতে হবে না, সকল বৈষম্য দূর হবে। মানুষ সত্যিকার একটি কল্যাণরাষ্ট্র দেখতে পাবে।’
আজ রোববার সকালে পবিত্র হজ পালন শেষে মিয়া গোলাম পরওয়ার নিজ বাড়িতে আসার পথে খুলনার সিকিরহাট, ফুলতলা বাজার ও শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে স্থানীয় জামায়াত আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরের কথা অনুযায়ী হয়তো আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন হতে পারে। জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল। মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীক দাড়িপাল্লা ফিরিয়ে দিয়েছে। সুতরাং আগামী নির্বাচনে দাড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টির জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
সকাল ১০টায় ফুলতলা ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সিকিরহাট খেয়াঘাট চত্বরে, সকাল সাড়ে ১০টায় ফুলতলা উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবদুল আলীম মোল্যার সভাপতিত্বে ফুলতলা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ও খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে শিরোমনি শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত পৃথক পৃথক পথসভা হয়। এসব পথসভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা অফিস সেক্রেটারি আশরাফুল ইসলাম, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম, জেলা যুব বিভাগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি ইউসুফ ফকির প্রমুখ।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মনে করেন, কল্যাণকর ও জনমুখী রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হলে সৎ মানুষের প্রয়োজন। জামায়াত নির্বাচিত হলে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কী কী করা হবে, বক্তব্যে সেসব তিনি তুলে ধরেন।
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৫ আসনে জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য ছিলেন গোলাম পরওয়ার। বক্তব্যে নিজের সংসদীয় এলাকায় ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনাও তুলে ধরেন তিনি।