মেসিদের এই ছবি দেখে আনন্দের সঙ্গে দীর্ঘশ্বাসও জাগে
Published: 28th, March 2025 GMT
একই ফ্রেমে তিনটি ছবি। দেখে মনে হয়, এ শুধু ছবি নয় সময়ের বিবরণী, একটি প্রজন্মের উদিত হওয়া থেকে পরিপূর্ণতা সে ছবিতে অনূদিত। আর একজন আছেন, যাঁর গোধূলীলগ্নের রংটা ছবিতে ফুটেছে সবচেয়ে বেশি।
‘ছাড়পত্র’ কবিতায় কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য যেমন লিখেছিলেন, ‘এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান’—তেমনি লিয়ান্দ্রো পারেদেসও হয়তো বুঝেছেন, তরুণেরা উঠে আসছে, এক প্রজন্মের কাছ থেকে আরেক প্রজন্মের কাছে ব্যাটন হস্তান্তরের সময়টা তাই শুরু হয়েছে।
পারেদেসের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে পোস্ট করা হয়েছে ছবি তিনটি। সোনালি রঙের ফ্রেমে ওপর-নিচ করে বসানো তিনটি ছবি। সবার ওপরের ছবিতে লিওনেল মেসির হাত ধরে আছেন পারেদেস, রদ্রিগো দি পল, হুলিয়ান আলভারেজ ও ক্রিস্টিয়ান রোমেরো। ছবির বিশেষত্ব হলো, মেসিকে পূর্ণবয়স্ক হিসেবে আঁকা হলেও অন্য চারজন বাচ্চা বয়সের। মাথায় রঙিন ব্যান্ড।
আরও পড়ুনআনচেলত্তি না এলে ‘প্ল্যান বি’তে যাঁকে কোচ বানাতে চায় ব্রাজিল১ ঘণ্টা আগে২০২২ কাতার বিশ্বকাপের আগে এবং পরে এমনই একটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তখনই ছবিটি দেখে সবাই বুঝে ফেলেছিলেন, এ ছবির ধারণা নেওয়া হয়েছে কমিক বই সিরিজ ‘টিনএজ মিউট্যান্ট নিনজা টার্টলস’ থেকে। সেই কমিক বইয়ের চারটি চরিত্র লিওনার্দো, দোনাতেল্লো, রাফায়েল ও মিকেলঅ্যাঞ্জেলোর অনুরূপে আঁকা হয়েছে পারেদেস, দি পল, আলভারেজ ও রোমেরোকে। আর মেসি? কমিক সিরিজটি পড়া থাকলে কিংবা পরে কার্টুন হিসেবে টিভিতে প্রচার হওয়ার পর দেখা থাকলে নিশ্চয়ই জানেন, এই চার ‘নিনজা টার্টলস’–এর ওস্তাদ ও পালক-পিতা ছিলেন মাস্টার স্প্লিন্টার। তার হাত ধরেই তাদের বড় হয়ে ওঠা এবং তার কাছেই তাদের মার্শাল আর্ট শেখা। এরপর নিউইয়র্ক শহরকে শয়তানদের হাত থেকে তাদের বাঁচানোর গল্প নিয়েই এই কমিক সিরিজ।
লিয়ান্দ্রো পারেদেসের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ছবিটি পোস্ট করা হয়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।