একই ফ্রেমে তিনটি ছবি। দেখে মনে হয়, এ শুধু ছবি নয় সময়ের বিবরণী, একটি প্রজন্মের উদিত হওয়া থেকে পরিপূর্ণতা সে ছবিতে অনূদিত। আর একজন আছেন, যাঁর গোধূলীলগ্নের রংটা ছবিতে ফুটেছে সবচেয়ে বেশি।

‘ছাড়পত্র’ কবিতায় কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য যেমন লিখেছিলেন, ‘এসেছে নতুন শিশু, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান’—তেমনি লিয়ান্দ্রো পারেদেসও হয়তো বুঝেছেন, তরুণেরা উঠে আসছে, এক প্রজন্মের কাছ থেকে আরেক প্রজন্মের কাছে ব্যাটন হস্তান্তরের সময়টা তাই শুরু হয়েছে।

পারেদেসের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে পোস্ট করা হয়েছে ছবি তিনটি। সোনালি রঙের ফ্রেমে ওপর-নিচ করে বসানো তিনটি ছবি। সবার ওপরের ছবিতে লিওনেল মেসির হাত ধরে আছেন পারেদেস, রদ্রিগো দি পল, হুলিয়ান আলভারেজ ও ক্রিস্টিয়ান রোমেরো। ছবির বিশেষত্ব হলো, মেসিকে পূর্ণবয়স্ক হিসেবে আঁকা হলেও অন্য চারজন বাচ্চা বয়সের। মাথায় রঙিন ব্যান্ড।

আরও পড়ুনআনচেলত্তি না এলে ‘প্ল্যান বি’তে যাঁকে কোচ বানাতে চায় ব্রাজিল১ ঘণ্টা আগে

২০২২ কাতার বিশ্বকাপের আগে এবং পরে এমনই একটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তখনই ছবিটি দেখে সবাই বুঝে ফেলেছিলেন, এ ছবির ধারণা নেওয়া হয়েছে কমিক বই সিরিজ ‘টিনএজ মিউট্যান্ট নিনজা টার্টলস’ থেকে। সেই কমিক বইয়ের চারটি চরিত্র লিওনার্দো, দোনাতেল্লো, রাফায়েল ও মিকেলঅ্যাঞ্জেলোর অনুরূপে আঁকা হয়েছে পারেদেস, দি পল, আলভারেজ ও রোমেরোকে। আর মেসি? কমিক সিরিজটি পড়া থাকলে কিংবা পরে কার্টুন হিসেবে টিভিতে প্রচার হওয়ার পর দেখা থাকলে নিশ্চয়ই জানেন, এই চার ‘নিনজা টার্টলস’–এর ওস্তাদ ও পালক-পিতা ছিলেন মাস্টার স্প্লিন্টার। তার হাত ধরেই তাদের বড় হয়ে ওঠা এবং তার কাছেই তাদের মার্শাল আর্ট শেখা। এরপর নিউইয়র্ক শহরকে শয়তানদের হাত থেকে তাদের বাঁচানোর গল্প নিয়েই এই কমিক সিরিজ।

লিয়ান্দ্রো পারেদেসের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ছবিটি পোস্ট করা হয়.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ