ঈদের ছুটি শুরুর পর ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ যানবাহন পার হলো যমুনা সেতু
Published: 29th, March 2025 GMT
ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে আজ শনিবারও যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ রয়েছে। তবে যানজট নেই কোথাও।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে গতকাল শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ হাজার ৩৩৫টি যানবাহন যমুনা সেতু পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৫২ হাজার ৯০০ টাকার।
আজ সকালে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ যমুনা সেতু সাইট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এবার ঈদের ছুটি শুরুর পর গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু দিয়ে সর্বোচ্চ যানবাহন পারাপার ও সর্বোচ্চ টোল আদায় হলো।
আজ সকালে মহাসড়কে সরেজমিন দেখা যায়, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক বেশি যানবাহন চলাচল করছে। কিন্তু কোথাও কোনো যানজট নেই। নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পেরে অনেক খুশি ঘরমুখী মানুষ। এলেঙ্গায় একটি সিএনজি স্টেশনে কথা হয় গাজীপুরের কোনাবাড়ীর একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক শহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিবছর ঈদে বাড়ি ফিরতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় যানজটে আটকে থেকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কিন্তু এবার সেই দুর্ভোগ নেই। গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে একটি পিকআপ ভ্যানে মাত্র এক ঘণ্টায় এলেঙ্গায় চলে এসেছেন।
পিকআপ ভ্যানের আরোহী রাইছুল ইসলাম জানান, ঈদে বাড়ি ফিরতে অনেকবার যানজটে সাহ্রি, ইফতার রাস্তায় করতে হয়েছে। এবার নির্বিঘ্নে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ বাড়ি ফিরে ইফতার করতে পারবেন।
হাইওয়ে পুলিশ সূত্র জানায়, গত তিন থেকে চার দিন যে হারে যানবাহন এ সড়কে চলাচল করেছে, তাতে ধারণা করা হচ্ছে, অধিকাংশ মানুষ বাড়ি পৌঁছে গেছে। আজ বিকেল থেকে যানবাহনের চাপ কমতে পারে।
যমুনা সেতু টোলপ্লাজা সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৮ হাজার ৩৩৫টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন ৩০ হাজার ৩৯৮টি। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৯০ লাখ ৯৮ হাজার ৫৫০ টাকা। অপর দিকে ঢাকাগামী ১৭ হাজার ৯৩৭টি যানবাহন পার হয়েছে। এতে টোল আদায় ১ কোটি ৪৭ লাখ ৫৪ হাজার ৩৫০ টাকা।
সেতু কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, আগের ২৪ ঘণ্টার (বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২ টা) তুলনায় পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু দিয়ে ১৩ হাজার ১০৮টি যানবাহন বেশি পারাপার হয়েছে। এতে ৭৩ লাখ ১৫ হাজার ৪০০ টাকার টোল আদায় বেশি হয়েছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ যমুনা সেতু সাইট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির বলেন, ঈদযাত্রায় যমুনা সেতুর দুই পাশে ৯টি করে মোট ১৮ বুথ দিয়ে যানবাহন পারাপার হচ্ছে। এর মধ্যে দুপাশেই মোটরসাইকেলের জন্য দুটি আলাদা বুথ করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব র র ত ১২ট প র হয় ছ য নজট
এছাড়াও পড়ুন:
উপদেষ্টা আসিফের অনুসারীদের সঙ্গে বিএনপির কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়নি
কুমিল্লার মুরাদনগরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের অনুসারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো পক্ষই মামলা করেনি। ওই ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি বলে জানিয়েছে মুরাদনগর থানা-পুলিশ।
আজ সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান।
আরও পড়ুনমুরাদনগরে উপদেষ্টা আসিফের অনুসারীদের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, আহত ৩৫১৬ ঘণ্টা আগেএর আগে গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলা সদরের আল্লাহু চত্বরে উপদেষ্টা আসিফের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল এবং সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগ আছে, এ সময় স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের অনুসারীরা সেখানে হামলা চালান। পরে আসিফের অনুসারীদের সঙ্গে তাঁদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ৭ সাংবাদিকসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হন।
তবে আসিফ মাহমুদের অনুসারীদের দাবি, হামলায় তাঁদের পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জনের দাবি, আসিফের অনুসারীরা আওয়ামী লীগের লোকজনসহ হামলা চালিয়ে তাঁদের পক্ষের অন্তত ১৫ জনকে আহত করেছেন।
আজ সকালে আসিফ মাহমুদের অনুসারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (বর্তমানে কার্যক্রম স্থগিত) মুরাদনগর উপজেলার আহ্বায়ক উবায়দুল সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলাম। কায়কোবাদের লোকজন আমাদের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছেন। তাঁরা শুধু আমাদের ওপরই নয়, গণমাধ্যমকর্মীদের ওপরও নির্মমভাবে হামলা চালিয়েছেন। আমরা এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। গতকালের হামলার ঘটনায় আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। গতকাল আহত ব্যক্তিরা স্থানীয়ভাবে ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।’
আসিফের অনুসারীরা আওয়ামী লীগের লোকজন নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন অভিযোগ করে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গতকাল ছাত্রদলের প্রোগ্রাম ছিল। সেখানে তাঁরা (আসিফের অনুসারীরা) পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছেন। সবচেয়ে বড় সত্য হচ্ছে, মুরাদনগরে আসিফের অনুসারী বা এনসিপি নামে যাঁরা মাঠে আছেন, তাঁরা সবাই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের লোক। গতকালের ঘটনায় আমাদের আহত নেতা-কর্মীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনার পর আমরা পরবর্তী কর্মসূচি বা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব। এ ছাড়া কাউকে আটকও করা হয়নি, তবে পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, এ জন্য পুলিশ সতর্ক রয়েছে।