সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে রবিবার চাঁদপুরের অর্ধশত গ্রামে ধর্মীয় সকল আনুষ্ঠানিকতায় ঈদ পালন করা হয়েছে।

রবিবার (৩০ মার্চ) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন হাজীগঞ্জের সাদরা দরবার শরীফের মুখপাত্র রাসেল মুন্সী।

তিনি বলেন, “বহু আগে থেকেই আমরা সাদরা দরবার শরিফের অনুসারীরা প্রতিবছরই সৌদিআরবের সাথে মিল রেখে রোজা ও ঈদ উদযাপন করি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আমরা ঈদের নামাজ আদায়ে প্যান্ডেল তৈরি করেছি। সেখানেই নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে ঈদ উদযাপন করলাম।”

স্থানীয়রা জানান, ১৯২৮ সাল থেকে হাজীগঞ্জের সাদরা দরবার শরিফের মরহুম পীর মাওলানা ইসহাক (রহ.

) সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও দুই ঈদ উদযাপনের প্রচলন করেন। তার দেখাদেখি হাজীগঞ্জ ছাড়াও ফরিদগঞ্জ ও মতলব উত্তরের বেশকিছু গ্রামসহ সবমিলিয়ে প্রায় অর্ধশত গ্রামে এভাবে রোজা ও ঈদ করা হয়।

এদিন সকালে দেখা যায়, নতুন পোশাক পরে শিশুসহ সব বয়সের মানুষ একে একে জড়ো হচ্ছেন দরবার শরীফের মাঠে। এরপর ওই দরবার শরিফ মাঠে ঈদের জামায়াত হয় সকাল ৯টায়। যেখানে ইমামতি করেন পীরজাদা জাকারিয়া চৌধুরী। 

পরে সকাল সাড়ে ৯টায় সাদরা হামিদিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ইমামতি করেন আরিফ চৌধুরী। ঈদের জামায়াতের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সবাই একে অপরের সাথে কোলাকোলি করে কুশল বিনিময় করেন।

এদিন একই সাথে ঈদ করেন হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদরা ছাড়াও সমেশপুর, অলিপুর, বলাখাল, মনিহার, প্রতাপুর ও বাসারার বাসিন্দারা।

এছাড়াও ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, কামতা, গল্লাক, ভুলাচোঁ, সোনাচোঁ, উভারামপুর, উটতলি, মুন্সিরহাট, কাইতাড়া, মূলপাড়া, বদরপুর, আইটপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, পাইকপাড়া, নূরপুর, সাচনমেঘ, শোল্লা, হাঁসা ও গোবিন্দপুর, মতলব উত্তরের দশানী, মোহনপুর, পাঁচানী এবং কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলার অনেক গ্রামে ঈদ জামায়েত আদায় করা হয়।

এ বিষয়ে সাদরা দরবার শরিফের বর্তমান পীরজাদা মাওলানা আরিফ চৌধুরী বলেন, “সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর চন্দ্রমাস হিসাব করে আমরা রমজান, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপন করে থাকি। এটি আমাদের দীর্ঘদিনের ধর্মীয় প্রচলন।”

তিনি আরও বলেন, “চাঁদপুরের এই বিশেষ ঐতিহ্য প্রতি বছরই আলোচনায় আসে। যা জেলার ধর্মীয় ও সামাজিক বৈচিত্র্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।”

ঢাকা/অমরেশ/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সবার নজরের বাইরে থাকা চৈতী দেশের জন্য আনল স্বর্ণপদক

একটু বড় হওয়ার পর মেয়েকে দেখে চিন্তায় পড়ে যান মা–বাবা। অন্য শিশুদের মতো বাড়ছে না সে। হাত–পা ছোট, উচ্চতাও থমকে গেছে। পরে বুঝতে পারেন—চৈতী বামন।

যে মেয়েকে নিয়ে একসময় দুশ্চিন্তার পাহাড়ে আটকা পড়েছিল পরিবার, আজ সেই চৈতীই আনন্দের আলো ছড়াচ্ছে। দেশের জন্য প্রথমবারের মতো এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছে চৈতী রানী দেব।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামের শিলু রানী দেব ও সত্য দেবের মেয়ে চৈতীর বয়স ১৩ বছর। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। কিন্তু তার লক্ষ্য নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫–এ বর্শা নিক্ষেপ ও ১০০ মিটার দৌড়ে সে জিতে নিয়েছে দুটি স্বর্ণপদক। ৭ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

চৈতীর প্রতিভা আছে। অনুশীলনে সে খুব আন্তরিক। সে কিছু করতে চায়। আশা করছি, ওকে দিয়ে একটা ভালো ফলাফল পাবমেহেদী হাসান, বিকেএসপির প্রধান প্রশিক্ষক

চৈতীর স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়টি দুবাই থেকে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্সের (শি) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী শারমিন ফারহানা চৌধুরী।

যে মেয়েকে সবাই দেখত শুধু উচ্চতায়

ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চৈতী একসময় গ্রামবাসীর নজরে পড়ত শুধু তার খর্বাকৃতির জন্য। খেলাধুলায় তার যে অসাধারণ প্রতিভা আছে, তা ছিল চোখের আড়ালে।

তবে এই ছবি এখন বদলে গেছে। গ্রামবাসী বাড়িতে এসে খোঁজ নেন। শিক্ষকেরা খেলতে উৎসাহ দেন, ছবি তোলেন। স্কুলে সে এখন ‘তারকা’।

দুবাইয়ে বর্শা নিক্ষেপে স্বর্ণপদক জয়ের পর চৈতী

সম্পর্কিত নিবন্ধ