মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। এক মাস সিয়াম সাধনার পর সচ্ছল ব্যক্তিরা ঈদে পরিবার-পরিজন নিয়ে সাধ্যমতো আনন্দ উপভোগ করলেও ছিন্নমূল মানুষদের ঈদের দিন কাটে অন্যান্য দিনে মতোই। তারা না পান ভালো খাবার, না পান ভালো জামা-কাপড়। রাস্তায় বসে-শুয়ে কেটে যায় তাদের ঈদের দিন।

সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদের দিন দুপুরে কমলাপুর রেল স্টেশনের সামনে কথা হয় রাহেলা বেগমের সঙ্গে। তার পরনে ছেঁড়া ও ময়লা কাপড়। কোলে কাঁদছে অভুক্ত সন্তান। 

রাহেলা বেগম বলেন, “ঈদ এলে অন্যরা যেমন নতুন জামা-কাপড় কিনেন, খাবার খান, ঘোরাফেরা করেন; আমরা হেডা পারি না। আমরা গরিব মানুষ, কমলাপুরের ফুটপাতে থাকি, ফুটপাতেই খাই।”

মতিঝিলে কথা হয় ভিক্ষুক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। নাম জিজ্ঞাসা করামাত্রই একটু মুচকি হেসে বলেন, “বাবা আজ ঈদ। কিন্তু, আমার গায়ে কোনো কাপড় নাই। ভিক্ষা করে কি আর ঈদ করা যায়? রোজার মাসে যে কয়টা টাকা আয় করেছিলাম, পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দিতে হয়েছে। ঈদের দিনেও ভিক্ষা করছি, আমাগো আবার কীসের ঈদ?”

টিকাটুলির ফুটপাতে থাকা জুলেখা বলেন, “দুই সন্তান নিয়ে রাস্তায় থাকি। বাঁইচা থাকতেই তো কষ্ট হয়। আমাগোও ঈদ করতে ইচ্ছা করে। কিন্তু, কী করমু? আমাগো টাকা-পয়সা নেই, থাকলে ঈদে নতুন কাপড় কিনতাম।”

নিউ মার্কেট, কারওয়ান বাজার, কমলাপুর, হাইকোর্ট এলাকা, গুলিস্তান, কাকরাইল, বিজয়নগর, মতিঝিল, আজিমপুর, বাংলা মোটরসহ বেশকিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এসব এলাকার রাস্তায় বসে-শুয়ে আছেন অনেকে। তাদের জীবনে নেই ঈদের আনন্দের ছোঁয়া। কেউ কিছু দেবে, সেই অপেক্ষায় আছেন তারা। ভিক্ষা কিংবা সাহায্যের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ছুটছেন। কেউবা রাস্তার ধারে লাকড়ির চুলায় ভাত-তরকারি রান্না করছেন। ঈদ তাদের জীবনে কোনো ছাপ ফেলেনি।

ঢাকা/এমআর/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঈদ র দ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সেই রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যা ঘটেছিল

২৩ আগস্ট রাতে আমাদের গ্রেপ্তার

সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ,  ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এ এইচ এম কামরুজ্জামন, এই লেখক শেখ আবদুল আজিজ ও আবদুস সামাদ আজাদ—এই ৬ জনকে ১৯৭৫ সালের ২৩ আগস্ট একসঙ্গে গ্রেপ্তার করে আমাদের পল্টনে কন্ট্রোল রুমে একটি ভাঙা বাড়িতে নেওয়া হয়। আমরা বসা অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি সৈয়দ আহমদকে মুক্তি দেওয়ার জন্য জনৈক কর্নেল ফারুককে অনুরোধ করেছিলেন।

কর্নেল ফারুক উত্তরে বলেছিলেন, ‘আপনাদের সবার ট্রায়াল এখানে হবে।’ আমাদের উদ্দেশ করে বলা হয়েছিল, ‘ইউ উইল হ্যাভ টু জাস্টিফাই ইয়োর করাপশন।’ এ কথা শুনে আমরা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। ভাবলাম, এটা কোর্ট নয়, আদালত নয়, কীভাবে এখানে বিচার হবে? এই পরিস্থিতিতে আমাদের পরস্পরের কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
ইতিমধ্যে মেজর ডালিম এসে এইচ এম কামারুজ্জামানের সঙ্গে আস্তে আস্তে কথা বলতে লাগল। কামরুজ্জামান ডালিমকে বলেছিল, ‘এ রকম তো কথা ছিল না!’ তারপর ডালিম চলে গেল। আমাদের সামনে আমাদের সহানুভূতিশীল পুলিশ কর্মচারীরা দৌড়াদৌড়ি করছিল। কিছু সময় পর তারা এসে বলল, ‘আপনারা এই গাড়ি ও মাইক্রোবাসে তাড়াতাড়ি ওঠেন; সেন্ট্রাল জেলে যেতে হবে।’ আমরা গাড়িতে উঠলাম এবং ভাবলাম, বেঁচে গেলাম। সেন্ট্রাল জেলে প্রবেশ করলাম। আমাদের নতুন জেলে থাকার জায়গা করে দেওয়া হলো।

শেখ আবদুল আজিজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ