ঢাকা থেকে বগুড়ায় এসে পৌঁছেছি আগের দিন। উঠেছি শহর থেকে খানিকটা দূরে। অক্টোবরের শুরু। উত্তরবঙ্গের ঝাঁ ঝাঁ গরম কমতে শুরু করেছে। আকাশে শরতের পেঁজা তুলার মতো মেঘ, পরিষ্কার ঝকঝকে রোদ। ব্রেকফাস্ট করে প্রাচীন নগরটি দেখতে বেরিয়ে পড়লাম। ঠিক কবে এই গড় বা দুর্গ গড়ে উঠেছিল, তা নিয়ে এখনো বিতর্ক বিদ্যমান। তবে ধারণা করা হয়, মৌর্য শাসনামলে (খ্রিষ্টপূর্ব ৩২০-২৩৬) এর পত্তন ঘটেছিল। পুণ্ড্রনগরের গোড়াপত্তন হয় সম্ভবত প্রথম চন্দ্রগুপ্তের সময়। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ছিলেন মগধের সেনাধ্যক্ষ। তিনি মগধের শাসক নন্দরাজকে উৎখাত করে পশ্চিমে হিন্দুকুশ পর্বত থেকে পূর্বে বঙ্গ সমতট পর্যন্ত বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন। ভৌগোলিক কারণেই সম্ভবত করতোয়ার পশ্চিম তীরে বরেন্দ্রভূমিতে গড়ে তুলেছিলেন এই দুর্গ। এ দুর্গের নগরকাঠামোর সঙ্গে ভারতের প্রাচীন সভ্যতা মহেঞ্জোদারো-হরপ্পা এবং চন্দ্রগুপ্তের আমাত্য কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র–তে বর্ণিত নগর–পরিকল্পনার সাদৃশ্য লক্ষণীয়।

মহাস্থানগড় জাদুঘরে মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও পরবর্তী মুসলমান শাসনামলেরও নানা নিদর্শন দেখা যাবে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সবার নজরের বাইরে থাকা চৈতী দেশের জন্য আনল স্বর্ণপদক

একটু বড় হওয়ার পর মেয়েকে দেখে চিন্তায় পড়ে যান মা–বাবা। অন্য শিশুদের মতো বাড়ছে না সে। হাত–পা ছোট, উচ্চতাও থমকে গেছে। পরে বুঝতে পারেন—চৈতী বামন।

যে মেয়েকে নিয়ে একসময় দুশ্চিন্তার পাহাড়ে আটকা পড়েছিল পরিবার, আজ সেই চৈতীই আনন্দের আলো ছড়াচ্ছে। দেশের জন্য প্রথমবারের মতো এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছে চৈতী রানী দেব।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামের শিলু রানী দেব ও সত্য দেবের মেয়ে চৈতীর বয়স ১৩ বছর। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। কিন্তু তার লক্ষ্য নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫–এ বর্শা নিক্ষেপ ও ১০০ মিটার দৌড়ে সে জিতে নিয়েছে দুটি স্বর্ণপদক। ৭ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

চৈতীর প্রতিভা আছে। অনুশীলনে সে খুব আন্তরিক। সে কিছু করতে চায়। আশা করছি, ওকে দিয়ে একটা ভালো ফলাফল পাবমেহেদী হাসান, বিকেএসপির প্রধান প্রশিক্ষক

চৈতীর স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়টি দুবাই থেকে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্সের (শি) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী শারমিন ফারহানা চৌধুরী।

যে মেয়েকে সবাই দেখত শুধু উচ্চতায়

ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চৈতী একসময় গ্রামবাসীর নজরে পড়ত শুধু তার খর্বাকৃতির জন্য। খেলাধুলায় তার যে অসাধারণ প্রতিভা আছে, তা ছিল চোখের আড়ালে।

তবে এই ছবি এখন বদলে গেছে। গ্রামবাসী বাড়িতে এসে খোঁজ নেন। শিক্ষকেরা খেলতে উৎসাহ দেন, ছবি তোলেন। স্কুলে সে এখন ‘তারকা’।

দুবাইয়ে বর্শা নিক্ষেপে স্বর্ণপদক জয়ের পর চৈতী

সম্পর্কিত নিবন্ধ