রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে স্প্যানিশ কোপা ডেল রের সেমিফাইনাল প্রথম লেগে ১-০ ব্যবধানে জয় পেয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ফুটবলপ্রেমীরা ধরেই নিয়েছিল মঙ্গলবার (০১ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ফিরতি লেগে ঘরের মাঠে অনায়াস জয় পাবে লস ব্লাঙ্কোসরা। কিন্তু সবার ভাবনা আর কল্পনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রুদ্ধশ্বাস এক ম্যাচ উপহার দিলো সোসিয়েদাদ। কয়েক দফা এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত তারা অতিরিক্ত সময় পেরিয়ে ৪-৪ গোলে ড্র করে রিয়ালের সঙ্গে। প্রথম লেগে জয় পাওয়া রিয়াল দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪ ব্যবধানের জয়ে ফাইনালে নাম লেখায় ১২০ মিনিট শেষে।

এদিন ম্যাচের ১৬ মিনিটেই লিড নেয় সোসিয়েদাদ। এ সময় হেডে পাবলো মারিনের বাড়িয়ে দেওয়া বল পেয়ে ডান পায়ের শটে গোল করেন সোসিয়েদাদের আন্দের বার্নেছেয়া। ৩০ মিনিটের মাথায় ভিনিসিউস জুনিয়রের বাড়িয়ে দেওয়া বল ডি বক্সের সামনে পেয়ে যান এন্ড্রিক। তখন তার সামনে ছিলেন কেবল সোসিয়েদাদের গোলরক্ষক। তার মাথার ওপর দিয়ে বল মেরে গোল করে সমতা ফেরান এন্ড্রিক। তাতে ১-১ গোলের সমতায় শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা।

বিরতির পর ৭২ মিনিটে ডেভিড আলবা নিজেই নিজেদের জালে বল জড়িয়ে দেন। তাতে আবারও এগিয়ে যায় সোসিয়েদাদ। ৮০ মিনিটে মাইকেল ওয়ারজাবাল গোল করে ব্যবধান ১-৩ করে ফেলেন। তবে ৮২ মিনিটে ভিনিসিউস জুনিয়রের বাড়িয়ে দেওয়া বল থেকে জুদ বেলিংহ্যাম গোল করে ব্যবধান কমান (২-৩)। আর ৮৬ মিনিটে ওরেলিয়াঁ চুয়ামেনি গোল করে সমতা ফেরান (৩-৩)। তাতে ধরা নেওয়া হচ্ছিল রিয়াল দুই লেগ মিলিয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে যাচ্ছে। কিন্তু যোগ করা সময়ে (৯০+৩) সোসিয়েদাদের ওয়ারজাবাল নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করে আবারও দলকে এগিয়ে নেন (৩-৪)। তাতে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৪ সমতা থাকায় অতিরিক্ত সময়ে যায় ম্যাচ। আর সেই অতিরিক্ত সময়ের ১১৫ মিনিটের মাথায় অ্যান্তোনিও রুদিগার কর্নার থেকে আসা বলে হেড নিয়ে জালে জড়িয়ে রিয়ালের জয় নিশ্চিত করেন। নিশ্চিত করেন দলের সেমিফাইনাল।

এ নিয়ে ৪১তম বারের মতো কোপা ডেল রের সেমিফাইনালে উঠলো রিয়াল। সবশেষ ২০২২-২০২৩ মৌসুমে তারা ফাইনাল খেলেছিল এবং ২০তম শিরোপা জিতেছিল এই টুর্নামেন্টের শিরোপা। অন্যদিকে সোসিয়েদাদ সবশেষ ২০১৯-২০২০ মৌসুমে ফাইনাল খেলে দ্বিতীয় শিরোপা জিতেছিল।

রিয়াল মাদ্রিদ ২৬ এপ্রিলের ফাইনালে হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা নতুবা নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে পাবে। প্রথম লেগে বার্সা ও অ্যাটলেটিকো ৪-৪ গোলে ড্র করেছে। আজ অ্যাটলেটিকোর মাঠে ফিরতি লেগের লড়াইয়ে নামবে তারা।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবধ ন ফ ইন ল গ ল কর প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ