ঈদুল ফিতরের ছুটিতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বান্দরবানে নেমেছে পর্যটকের ঢল। সারা দেশের অসংখ্য বিনোদনপ্রেমী ভিড় জমিয়েছেন এ জেলায়। ঈদের তৃতীয় দিন বুধবার (২ এপ্রিল) সকাল থেকে বান্দরবানের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র পর্যটকদের পদচারণায় মুখর।

বান্দরবান শহরের মেঘলা, গোল্ডেন টেম্পল, নীলাচলসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। বিশেষ করে, পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে আসা শিশুদের কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠেছে পর্যটন এলাকাগুলো। অনেকেই দল বেঁধে এসেছেন, কেউবা প্রিয়জনদের সঙ্গে কাটাচ্ছেন ছুটির দিনগুলো। স্থানীয় হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলোতে পর্যটকদের ভিড় দেখা গেছে।

মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে দেখা গেছে আনন্দঘন পরিবেশ। কেউ লেকের স্বচ্ছ জলে প্যাডেল বোট চালিয়ে উপভোগ করছেন প্রকৃতির ছোঁয়া, কেউ ক্যাবল কারে চড়ে পাহাড়ের ওপর থেকে নিচের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখছেন। প্রকৃতির অপরূপ রূপ দেখে মুগ্ধ সবাই। পর্যটকদের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকাজুড়ে।

রাজধানী ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা আব্দুল করিম এ প্রতিবেদককে বলেন, “প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে বারবার বান্দরবানে আসতে মন চায়। ঈদের ছুটিতে ছেলেমেয়েদের নিয়ে ঘুরতে এসে দারুণ সময় কাটছে।”

পর্যটনকেন্দ্র নীলাচলে কথা হয় নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা হাবিবুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, এটাই আমার প্রথম বান্দরবান ভ্রমণ। এখানে না এলে বুঝতেই পারতাম না, এত সুন্দর পরিবেশ কেমন লাগে। ঢাকাতে যারা থাকে, এখানে না আসলে কিছুই বুঝবে না।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের ছুটিতে বিপুল পরিমাণ পর্যটকের আগমন তাদের জন্য আশীর্বাদ। রিসোর্ট ও হোটেলগুলোর ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে। কিছু কিছু রিসোর্ট ও হোটেলে ২ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত শতভাগ রুম বুকিং হয়েছে।

হোটেল রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো.

সিরাজুল ইসলাম বলেন, শহরের সব হোটেল শতভাগ বুকিং হয়ে গেছে। ভারতে ভ্রমণ বন্ধ থাকায় কিছু বিদেশি পর্যটকও বান্দরবানে আসছেন। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আনন্দিত।

বান্দরবান ট্যুরিস্ট পুলিশের এএসপি নিত্যানন্দ দাস বলেন, ঈদের ছুটিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জেলা ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা পুলিশ সমন্বিতভাবে কাজ করছে, যাতে পর্যটকরা নিরাপদে ভ্রমণ উপভোগ করতে পারেন।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, বান্দরবান জেলায় পর্যটনকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে থাকি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বদা সজাগ আছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা সচেতন। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না পারেন, সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে।

ঢাকা/চাইমং/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ন দরব ন

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত ৩ জন পেহেলগামের হামলাকারী: পার্লামেন্টে অমিত শাহ

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত তিন বন্দুকধারী ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার অভিযানটি চালানো হয়।

আজ মঙ্গলবার ভারতের সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় দেওয়া বক্তব্যে অমিত শাহ এসব কথা বলেন।

তিন মাসেরও বেশি আগে গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা পেহেলগামের বৈসরানে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীরা হামলা চালান। ওই ঘটনায় ২৬ জন নিহত হন।

অমিত শাহ বলেন, ‘আমি পার্লামেন্টে জানাতে চাই, বৈসরানে যে তিন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছিলেন, তাঁদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে।’ তাঁর দাবি, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবার সদস্য। জাতিসংঘ এটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।

অমিত শাহ আরও বলেন, ‘হামলায় তাঁদের জড়িত থাকার ব্যাপারে আমাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর কাছে বিস্তারিত প্রমাণ আছে।’

ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, কাশ্মীরের দাচিগাম এলাকার পাহাড়ে গতকাল ওই অভিযান চালানো হয়েছে। শ্রীনগর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে দাচিগামের অবস্থান।

এপ্রিলে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গলের ভেতর লুকিয়ে থাকা বন্দুকধারীরা হঠাৎ বেরিয়ে এসে পর্যটকদের ওপর গুলি চালান। ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের প্রায় সবাই ভারতীয়। একজন নেপালি ছিলেন।

আরও পড়ুনকাশ্মীরে পর্যটকদের গুলি করার আগে কী হয়েছিল, জানালেন প্রত্যক্ষদর্শীরা২৫ এপ্রিল ২০২৫

ভারতের অভিযোগ, এ হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদদ আছে। তবে ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। পেহেলগামে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত মে মাসে পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে চার দিন ধরে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষে ৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকেই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীর অঞ্চলটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভক্ত হয়ে আছে। উভয় দেশ পুরো কাশ্মীরকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে থাকে। কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়াকে কেন্দ্র করে তারা দুটি যুদ্ধসহ বেশ কয়েকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে।

আরও পড়ুনপেহেলগামে হামলায় জড়িত সবাইকে এবার পাকিস্তানি নাগরিক বলে দাবি ভারতের২৪ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেন্ট মার্টিন ভালো নেই, সেন্ট মার্টিনের মানুষ ভালো নেই
  • কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে ডুবে গেছে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু
  • ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত ৩ জন পেহেলগামের হামলাকারী: পার্লামেন্টে অমিত শাহ