তিস্তা নদীতে নাব্য সংকট তীব্র হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও পলি জমে ভরে গেছে নদী। খনন না করায় এক সময়ের খরস্রোতা নদী অনেক স্থানে মরা খালে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় ৭ রুটে নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। 

উপজেলার ঠুটাপাইকর থেকে তিস্তাঘাট, কালির মেলা থেকে পাড়ামৌলা ঘাট, বুড়িরহাট থেকে ঢুঁষমারার চর, ডাংরারহাট ঘাট থেকে চরবিদ্যানন্দ, বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তৈয়বখাঁ ঘাট থেকে চর বিদ্যানন্দ, সরিষাবাড়ী থেকে মাঝেরচর ঘাট এবং তিস্তা থেকে থেতরাই ঘাট পর্যন্ত সাতটি নৌ রুট বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন নদীপাড়ের মানুষ। কৃষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষকে গন্তব্যে পৌঁছাতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়। এতে অতিরিক্ত অর্থের পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে সময়।  

আক্ষেপ করে কালিরহাট গ্রামের মিলন মিয়া বলেন, নদীর বিভিন্ন অংশে চর পড়ায় নৌকা চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এখন বিভিন্ন যানবাহনে দীর্ঘ পথ ঘুরে চলাচল করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

চরবিদ্যানন্দ গ্রামের মাসুদ রানা উপজেলায় সরকারি চাকরি করেন। নৌ চলাচল বন্ধ হওয়ায় পার্শ্ববর্তী কাউনিয়া উপজেলা দিয়ে ২৫ কিলোমিটার ঘুরে কলেজে তাঁকে যেতে হয়। প্রায়ই তাঁর কর্মস্থলে পৌঁছতে দেরি হয়ে যায়। তিনি নদী খনন করে এ সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন। 

সরেজমিন দেখা গেছে, প্রায় পানিশূন্য তিস্তায় ছোট-বড় অসংখ্য চর জেগেছে। নদীর মধ্য দিয়েই হেঁটে পারাপার হচ্ছে লোকজন। বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে নুড়িপাথর, কাঁকরযুক্ত বালি ও মাটি বয়ে আসায় দ্রুত নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও জমে থাকা অতিরিক্ত বালি ও কাঁকরযুক্ত মাটি আবাদি জমিকে অনাবাদি করে তুলছে। তিন দশকের বেশি সময় ধরে ভারতীয় পার্বত্যাঞ্চলে পাহাড় কেটে জনবসতি গড়ে তোলায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পরিকল্পিত খননের ব্যবস্থা না থাকায় নাব্য হারিয়ে ফেলেছে তিস্তা নদী। চর জেগে ওঠায় অধিকাংশ স্থানে ফসল ফলাচ্ছে কৃষক। সেখানে এখন সবুজের সমারোহ। চাষাবাদ হচ্ছে আলু, মরিচ, পেঁয়াজ, ভুট্টা, গম, বাদাম, মিষ্টিকুমড়া, তিল, তিসি, কাউন, বোরোসহ রকমারি ফসল। অনেক জায়গায় ঘরবাড়ি ও দোকানপাট করা হয়েছে। এতে দুর্ভোগের মাত্রা আরও বেড়ে গেছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান সমকালকে বলেন, আপাতত তিস্তা খনন সংক্রান্ত কোনো প্রকল্প নেই। মহাপরিকল্পনায় খননের বিষয়টি থাকতে পারে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব দ য নন দ

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ