২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে আল হিলালের বিপক্ষে জয়বঞ্চিত ছিল আল নাসর। লিগে ৭ ম্যাচ এবং সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১০ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েও জিততে পারেনি আল নাসর। গতকাল রাতে কিংডম অ্যারেনায় এই জয়খরা কাটাতে পেরেছে স্তেফানো পিওলির দল। সৌদি প্রো লিগের ম্যাচে আল হিলালকে হারিয়েছে ৩-১ গোলে, যা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো যোগ দেওয়ার পর ‘ক্যাপিটাল ডার্বি’তে আল নাসরের প্রথম জয়। বিরতির পর দুটি গোল করে রোনালদো নিজে সে জয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।

৪৭ মিনিটে সাদিও মানের পাস থেকে প্রথম গোলটি করার পর ৮৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে দ্বিতীয় গোল করেন রোনালদো। ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে ১২৭২ ম্যাচে রোনালদোর গোলসংখ্যা এখন ৯৩১। অর্থাৎ ১০০০ গোলের মাইলফলকের দেখা পেতে পর্তুগিজ কিংবদন্তির চাই আর ৬৯ গোল। ৪০ বছর বয়সী এ ফুটবলারের হাজার গোলে পৌঁছাতে ঠিক কত দিন লাগতে পারে?

প্রশ্নটি এখন বেশির ভাগ ফুটবলপ্রেমীদের মুখে মুখে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আল নাসরে যোগ দেওয়ার পর ক্লাবটির হয়ে এ পর্যন্ত ১০৪ ম্যাচে ৯৪ গোল রোনালদোর। ম্যাচপ্রতি ০.

৯০ গোল করে। ফেব্রুয়ারিতে চল্লিশ পূর্ণ করা রোনালদোর মধ্যে বয়সের ছাপ নেই বললেই চলে। চলতি মৌসুমে ম্যাচ প্রতি ০.৮৮ করে গোল গড় সেটাই বলছে, যখন তাঁর গোলসংখ্যা ৩৪ ম্যাচে ৩০। গত মৌসুমে পর্তুগিজ তারকার গোল গড় ছিল ম্যাচপ্রতি ০.৯৮ করে (৫১ ম্যাচে ৫০ গোল)। আর প্রথম মৌসুমে ১৯ ম্যাচে ১৪ গোল করা রোনালদোর ম্যাচপ্রতি গোল গড় ছিল ০.৭৩ করে।

অর্থাৎ, আল নাসরে যোগ দেওয়ার পর গোলের মধ্যেই আছেন রোনালদো। যে কারণে তাঁর হাজার গোল নিয়ে জল্পনা-কল্পনাও বেড়েছে। তবে রোনালদোর পরিপুষ্ট পরিসংখ্যানে পেনাল্টি গোলের অবদান কম নয়। ১৭২টি গোল করেছেন পেনাল্টি থেকে, যা তাঁর ক্যারিয়ারের মোট গোলের ১৮ শতাংশ।

আরও পড়ুন‘ম্যারাডোনা ব্র্যান্ড’ নিয়ে ফুফুদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন তাঁর মেয়েরা১৩ ঘণ্টা আগে

প্রশ্ন হলো, হাজার গোলের দেখা পেতে রোনালদোর কত দিন লাগতে পারে। একেবারে সুনির্দিষ্টভাবে উত্তর দেওয়া অসম্ভব। তবে গণিত ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সহায়তায় আন্দাজ তো করাই যায়। যেমন ধরুন, সৌদির ক্লাবটির হয়ে ম্যাচপ্রতি তাঁর ০.৯০ গোল গড়ের আলোকে বলা যায়, হাজার গোলের দেখা পেতে রোনালদোকে আরও ৭৯ ম্যাচ খেলতে হবে। চলতি মাস থেকে হিসাব করলে আরও প্রায় দেড় থেকে দুই বছর সময় লাগতে পারে। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কার হিসাবে, কোনো চোটে না পড়লে ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ কিংবা ২০২৭ সালের শুরুর দিকে মাইলফলকটির দেখা পেতে পারেন রোনালদো।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী বলে

মেটা এআইকে একই প্রশ্ন করা হয়েছিল। কৃত্রিম এই বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিও মনে করে, ২০২৭ সালের শুরুর দিকে হাজারতম গোলের দেখা পাবেন রোনালদো। গ্রোকের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি অবশ্য সময়টা একটু পিছিয়ে দেখাচ্ছে। ২০২৭ সালের মে থেকে আগস্টের মধ্যে রোনালদো মাইলফলকটির দেখা পেতে পারেন বলে মনে করছে তারা। গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি জেমিনি তিনটি সম্ভাব্য সময় দেখিয়েছে। আশার জায়গা থেকে বলা হয়েছে ২০২৬ সালের শেষ কিংবা ২০২৭ সালের শুরুতে হাজারতম গোলের দেখা পাবেন রোনালদো। বাস্তবতার জায়গা থেকে সময়টি ২০২৮ অথবা ২০২৯ হতে পারে। আর হতাশাবাদীর জায়গা থেকে বলা হয়েছে রোনালদো কখনোই হাজারতম গোলের দেখা পাবেন না। পর্তুগিজ তারকাকে চেনা থাকলে শেষ সম্ভাব্য পথটি হয়তো আন্দাজ করত না গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি।

আরও পড়ুনপৃথিবীতে খারাপ মানুষ আছে—এটা বুঝতে পেরে অকালে ঝরেছে যে আর্জেন্টাইন প্রতিভা১৪ ঘণ্টা আগে

চলতি মৌসুম শেষে আল নাসরের সঙ্গে রোনালদোর চুক্তির মেয়াদ ফুরোবে। পর্তুগিজ কিংবদন্তি সৌদি ক্লাবটিতে থাকবেন কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। যদিও আলোচনা আছে, শিগগিরই চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হবে। তবে রোনালদোর শেষবারের মতো ইউরোপে ফেরার সম্ভাবনাও আছে। যে ক্লাবের হয়ে ক্যারিয়ারের শুরু করেছিলেন, ফিরতে পারেন সেই স্পোর্টিং লিসবনে। এ প্রসঙ্গটি উঠছে হাজার গোলের বিষয়টি মাথায় রেখেই।

পর্তুগালের চেয়ে সৌদি ফুটবলে হাজারতম গোলের মাইলফলকের দেখা পাওয়া রোনালদোর জন্য তুলনামূলক সহজ। তবে ঘরে ফিরে ২০২৬ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেওয়া এবং সেখান থেকেই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানানোর তাৎপর্য অন্যরকম। রোনালদোর হাজারতম গোলের স্বপ্নপূরণ তাই এসব বিষয়ে সিদ্ধান্তের ওপরও নির্ভর করছে।

আরও পড়ুনমৌসুম শেষেই সিটি ছাড়বেন ডি ব্রুইনা১৬ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ত র ম ব দ ধ মত ত হ জ রতম গ ল র ২০২৭ স ল র পর ত গ জ গ ল কর আরও প

এছাড়াও পড়ুন:

জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ, ১-৪ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা

জাপানে পড়াশোনা করার আগ্রহ থাকতে পারে অনেকের। এ আগ্রহে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য দারুণ এক সুযোগ নিয়ে এসেছে দেশটির হোনজো ফাউন্ডেশন। এ ফাউন্ডেশনের হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ ২০২৬-এ আবেদন শুরু হয়েছে। এই মর্যাদাপূর্ণ জাপানি বৃত্তির মাধ্যমে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া যাবে। এতে রয়েছে আংশিক অর্থায়নের বৃত্তির পাশাপাশি মাসিক ভাতা, যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এই আন্তর্জাতিক বৃত্তি মূলত তাঁদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার লক্ষ্যেই প্রদান করা হয়। পাশাপাশি এটি জাপান এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতে সাহায্য করবে।

হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপের উদ্দেশ্য—

১৯৯৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে হোনজো ফাউন্ডেশনকে আন্তর্জাতিক বৃত্তি সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি প্রতিষ্ঠা করেন টাউন লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা মাসানরি হোনজো। তিনি ফাউন্ডেশনের প্রাথমিক মূলধন হিসেবে ২০ কোটি ইয়েন নগদ অর্থ এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানের ১০ লাখ শেয়ার দান করেন এ বৃত্তির জন্য। হোনজো ফাউন্ডেশন উন্নয়নশীল দেশের সেই সব শিক্ষার্থীকে সাহায্য করে, যাঁরা ভবিষ্যতে নিজেদের দেশকে উন্নয়নের পথে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবেন। পাশাপাশি জাপানি শিক্ষার্থীরাও বিদেশে পড়াশোনার জন্য এ বৃত্তি পেয়ে থাকেন, যা বৈশ্বিক সংযোগ ও আন্তর্জাতিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

আবেদনে যোগ্যতার শর্ত

হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তির জন্য আবেদনকারীদের নিচের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে—

—জাপান ব্যতীত সব দেশের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

—আবেদনকারীকে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া কোনো গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হবে বা ভর্তির পরিকল্পনা থাকতে হবে।

—বর্তমান শিক্ষার্থী, যাঁরা এখনো ভর্তি হননি বা কর্মরত, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন, যদি তাঁরা এপ্রিল ২০২৬-এ ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা করেন।

—যাঁরা ২০২৫ সালের শরৎকালীন সেমিস্টারে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁরাও এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।

—প্রফেশনাল গ্র্যাজুয়েট স্কুলে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা সাধারণত যোগ্য নন, তবে বৈধ গবেষণা পরিকল্পনা জমা দিতে পারলে তাঁরা আবেদন করতে পারবেন।

বয়সসীমা

—পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩৫ বছর।

—মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩০ বছর।

—পড়াশোনা শেষ করার পর নিজ দেশের উন্নয়নে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার থাকতে হবে।

—আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতি আগ্রহী হতে হবে এবং ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও অ্যালামনাই নেটওয়ার্কে অংশগ্রহণ করতে হবে।

—দৈনন্দিন কথোপকথনের মতো জাপানি ভাষায় কথা বলার দক্ষতা থাকতে হবে, কারণ, সাক্ষাৎকার কেবল জাপানি ভাষায় হবে।

বৃত্তির সুবিধা

হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তি শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাপক আর্থিক ও একাডেমিক সহায়তা প্রদান করে:

১। পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ।

২। মাসিক ভাতা।

—১ বা ২ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার ইয়েন।

—৩ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ১০ হাজার ইয়েন।

—৪ বা ৫ বছরের কোর্সের জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন।

—জাপানে যাওয়ার জন্য ট্রাভেল গ্র্যান্ট দেওয়ার সুযোগ থাকতে পারে।

—আর্থিক দুশ্চিন্তা ছাড়াই পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ।

—জাপানের সংস্কৃতিময় জীবনযাত্রা উপভোগের পাশাপাশি পড়াশোনার সুযোগ।

—বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্লোবাল নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার সুযোগ।

হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তিতে শিক্ষার্থীরা পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ পাবেন এবং পাবেন মাসিক ভাতা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেন্ট যোসেফের উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি, নিয়ম প্রকাশ
  • এমবাপ্পের জোড়া গোলে চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়ালের রোমাঞ্চকর জয়
  • জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ, ১-৪ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা
  • আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটি মাইলফলক ছোঁয়ার বলেই আশা আছে বাংলাদেশের