গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় মোবাইল ফোন চুরির অপবাদ দিয়ে মেহেদী হাসান নামে ছাত্রলীগের এক নেতাকে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। স্বজনরা বলছেন, তাঁকে আটক করে প্রথমে প্রকাশ্যে পেটানো হয়। এতে অচেতন হয়ে পড়েন মেহেদী। চেতনা ফেরার পর নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়ে তাঁকে দিয়ে গাওয়ানো হয় গান। এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। শেষে কিছু টাকা দিয়ে মুক্তি মিললেও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন মেহেদী।

উপজেলার শৈলাট গ্রামে গত বুধবার রাতের এ ঘটনায় শনিবার শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মেহেদীর মা শিল্পী আক্তার। মেহেদী শ্রীপুরের গাজীপুর ইউনিয়নের ধনুয়া গ্রামের কবির হোসেনের ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

শিল্পী আক্তার বলেন, ‘রাতভর নির্যাতনের কারণে আমার ছেলে পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। বুধবার গাজীপুর গ্রামে নানার বাড়ি বেড়াতে যায় সে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমার সঙ্গে তার কথা হয়। পরে রাত ২টার দিকে ফোনে আমাকে জানানো হয়, মেহেদী নাকি মোবাইল ফোন চুরি করেছে। দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখি ছেলেকে মাটিতে অচেতন অবস্থায় বসিয়ে রাখা হয়েছে। তার মুখ দিয়ে লালা বের হচ্ছে। আমার সামনেই ওই এলাকার নাজিম উদ্দিনের ছেলে জাফর আহমেদ, মোস্তফা কামাল, রুবেল মিয়া, রবীন, ইলিয়াসসহ ১০-১২ জন তাকে পেটায়। এ দৃশ্য দেখে আমি চিৎকার করতে থাকি। ছেলেকে বাঁচাতে চাইলে তারা ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। ১০ হাজার টাকা নিয়ে ছেলেকে তারা ছেড়ে দেয়।’

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, শৈলাট গ্রামের নাজিমের ছেলে জাফরের নেতৃত্বে মেহেদীর ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। মামলায় জাফর ছাড়াও আসামি করা হয়েছে মোস্তফা কামাল, রুবেল মিয়া, রবীন, ইলিয়াসসহ ১০-১২ জনকে। 

শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সবার নজরের বাইরে থাকা চৈতী দেশের জন্য আনল স্বর্ণপদক

একটু বড় হওয়ার পর মেয়েকে দেখে চিন্তায় পড়ে যান মা–বাবা। অন্য শিশুদের মতো বাড়ছে না সে। হাত–পা ছোট, উচ্চতাও থমকে গেছে। পরে বুঝতে পারেন—চৈতী বামন।

যে মেয়েকে নিয়ে একসময় দুশ্চিন্তার পাহাড়ে আটকা পড়েছিল পরিবার, আজ সেই চৈতীই আনন্দের আলো ছড়াচ্ছে। দেশের জন্য প্রথমবারের মতো এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছে চৈতী রানী দেব।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামের শিলু রানী দেব ও সত্য দেবের মেয়ে চৈতীর বয়স ১৩ বছর। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। কিন্তু তার লক্ষ্য নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫–এ বর্শা নিক্ষেপ ও ১০০ মিটার দৌড়ে সে জিতে নিয়েছে দুটি স্বর্ণপদক। ৭ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

চৈতীর প্রতিভা আছে। অনুশীলনে সে খুব আন্তরিক। সে কিছু করতে চায়। আশা করছি, ওকে দিয়ে একটা ভালো ফলাফল পাবমেহেদী হাসান, বিকেএসপির প্রধান প্রশিক্ষক

চৈতীর স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়টি দুবাই থেকে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্সের (শি) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী শারমিন ফারহানা চৌধুরী।

যে মেয়েকে সবাই দেখত শুধু উচ্চতায়

ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চৈতী একসময় গ্রামবাসীর নজরে পড়ত শুধু তার খর্বাকৃতির জন্য। খেলাধুলায় তার যে অসাধারণ প্রতিভা আছে, তা ছিল চোখের আড়ালে।

তবে এই ছবি এখন বদলে গেছে। গ্রামবাসী বাড়িতে এসে খোঁজ নেন। শিক্ষকেরা খেলতে উৎসাহ দেন, ছবি তোলেন। স্কুলে সে এখন ‘তারকা’।

দুবাইয়ে বর্শা নিক্ষেপে স্বর্ণপদক জয়ের পর চৈতী

সম্পর্কিত নিবন্ধ