কুষ্টিয়ার খোকসায় বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে প্রতিবেশী দাদার ধর্ষণের শিকার সেই আট বছরের শিশুর বসতঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার আফজাল কাজীর ছেলে তারেক কাজীকে আটক করেছে পুলিশ। 

শনিবার (৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মঈনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) গভীর রাতে আগুনে পুড়ে যায় ওই শিশুর থাকার একমাত্র টিনের ঘর। এ সময় ঘরে কেউ না থাকায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। 

শনিবার সন্ধ্যার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগী শিশু এবং তার মাকে পাওয়া যায়নি। তারা কোথায় আছেন জানতে চাইলে পরিবারের কেউ মুখ খোলেননি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মাথা গোঁজার একমাত্র ঘর ও পাশের রান্নাঘরটি পুড়ে গেছে। কয়েকটি বাঁশের খুঁটি অবশিষ্ট রয়েছে। ঘরের মধ্যে থাকা বিছানা-বালিশ আংশিক পোড়া অবস্থায় পড়ে রয়েছে যত্রতত্র। শিশুটির চাচা বলেন, ‘‘কয়েক দিন ব্যস্ত থাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি আগেই ঘুমিয়ে পড়ি। পরে লোকজনের চিৎকারে জেগে দেখি ভাইয়ের ঘরে আগুন জ্বলছে।’’

তিনি এ সময় অভিযোগ করে বলেন, ‘‘কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। তাছাড়া ওই ঘরে গভীর রাতে আগুন লাগবে কী করে?’’ তিনি ধর্ষণের বিচার দাবির পাশাপাশি এই অগ্নিকাণ্ডেরও বিচার দাবি করেন।

খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘‘ধর্ষণের ঘটনা শোনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত আফজাল কাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়। শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। হঠাৎ করে ওই বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে শোনামাত্র জড়িত থাকার অভিযোগে তারেক কাজী নামে এক সন্দেহভাজনকে আটক করেছি। তিনি ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার একমাত্র আসামি আফজাল কাজীর ছেলে।’’

এ দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা হোসেন ইমাম বলেন, ‘‘শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে।’’

কাঞ্চন//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সবার নজরের বাইরে থাকা চৈতী দেশের জন্য আনল স্বর্ণপদক

একটু বড় হওয়ার পর মেয়েকে দেখে চিন্তায় পড়ে যান মা–বাবা। অন্য শিশুদের মতো বাড়ছে না সে। হাত–পা ছোট, উচ্চতাও থমকে গেছে। পরে বুঝতে পারেন—চৈতী বামন।

যে মেয়েকে নিয়ে একসময় দুশ্চিন্তার পাহাড়ে আটকা পড়েছিল পরিবার, আজ সেই চৈতীই আনন্দের আলো ছড়াচ্ছে। দেশের জন্য প্রথমবারের মতো এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছে চৈতী রানী দেব।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামের শিলু রানী দেব ও সত্য দেবের মেয়ে চৈতীর বয়স ১৩ বছর। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। কিন্তু তার লক্ষ্য নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫–এ বর্শা নিক্ষেপ ও ১০০ মিটার দৌড়ে সে জিতে নিয়েছে দুটি স্বর্ণপদক। ৭ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

চৈতীর প্রতিভা আছে। অনুশীলনে সে খুব আন্তরিক। সে কিছু করতে চায়। আশা করছি, ওকে দিয়ে একটা ভালো ফলাফল পাবমেহেদী হাসান, বিকেএসপির প্রধান প্রশিক্ষক

চৈতীর স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়টি দুবাই থেকে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্সের (শি) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী শারমিন ফারহানা চৌধুরী।

যে মেয়েকে সবাই দেখত শুধু উচ্চতায়

ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চৈতী একসময় গ্রামবাসীর নজরে পড়ত শুধু তার খর্বাকৃতির জন্য। খেলাধুলায় তার যে অসাধারণ প্রতিভা আছে, তা ছিল চোখের আড়ালে।

তবে এই ছবি এখন বদলে গেছে। গ্রামবাসী বাড়িতে এসে খোঁজ নেন। শিক্ষকেরা খেলতে উৎসাহ দেন, ছবি তোলেন। স্কুলে সে এখন ‘তারকা’।

দুবাইয়ে বর্শা নিক্ষেপে স্বর্ণপদক জয়ের পর চৈতী

সম্পর্কিত নিবন্ধ