প্রকৃতিতে কান পাতলেই আমরা নানা ধরনের শব্দ শুনি। একইভাবে মহাকাশে থাকা তারাগুলোও গিটারের তারের আদলে মৃদু কম্পনের শব্দ তৈরি করে। মহাবিশ্বের রহস্য উন্মোচনে এবার সেই মৃদু কম্পনের শব্দ কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারাগুলোর মৃদু কম্পনের শব্দকে তারাকম্প নামে অভিহিত করেন বিজ্ঞানীরা। নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত নতুন এক গবেষণায় তারাকম্প বিশ্লেষণের মাধ্যমে মহাবিশ্বের রহস্য উন্মোচনের নতুন এক কৌশলের কথা বলা হয়েছে।

পৃথিবী থেকে প্রায় তিন হাজার আলোকবর্ষ দূরে এম৬৭ নক্ষত্রপুঞ্জের বিপুলসংখ্যক দৈত্যাকার তারার সুর বিশ্লেষণ করে গ্যালাক্সির রহস্য বের করতে চান বিজ্ঞানীরা। এ জন্য বর্তমানে টেলিস্কোপের মাধ্যমে তারাকম্পের শব্দের কম্পাঙ্কের বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করছেন বিজ্ঞানীরা। নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কে অনুরণন ঘটে বলে সূক্ষ্ম পরিবর্তন দেখা যায়।

কেপলার স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সূর্যের মতো অধিকাংশ তারায় তারাকম্প ঘটে থাকে। যেসব তারার বুদ্‌বুদযুক্ত বাইরের স্তর থাকে, সেখানে এমন চিত্র দেখা যায়। গরম গ্যাসের বুদ্‌বুদ ওপরে উঠে ফেটে যায়, যার কারণে পুরো তারার মধ্যে তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে। সেই তরঙ্গের কারণে তারা কম্পিত হয়ে থাকে।

বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে সূর্যের মতো তারা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কীভাবে বিকশিত হয়, তা বোঝার চেষ্টা করেছেন। এ জন্য এম৬৭ নক্ষত্রপুঞ্জের মতো উৎসের দিকে খেয়াল রাখছেন তাঁরা। তারাকম্প বিশ্লেষণ করে তারার পৃষ্ঠের নিচে কী রয়েছে, তা জানা যাবে। বড় তারায় গভীর ও ধীর কম্পন তৈরি হয়। আর ছোট তারায় উচ্চমাত্রার তীক্ষ্ণ কম্পন দেখা যায়।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ত র কম প র রহস য

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের

গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।

মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।

সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।

এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।

মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।

এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ