কক্সবাজারে কেএফসি ও পিৎজা হাটসহ ৫ রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর
Published: 7th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বর্বরতার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে কক্সবাজার শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিছিল থেকে পর্যটন জোনের অন্তত পাঁচটি রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর করা হয়েছে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে শহরের পাবলিক লাইব্রেরি প্রাঙ্গণের শহীদ দৌলত ময়দান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি হলিডে মোড় ঘুরে লাবণী হয়ে কলাতলী এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। এসময় রেস্টুরেন্টে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ ইকবাল বলেন, “ইসরায়েলি পণ্য বিক্রির অভিযোগে কেএফসি, পিৎজা হাট, কাঁচা লংকা, পানসি ও মেরিন ফুড রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর চালানো হয়।” কাঁচের আঘাতে কয়েকজন পর্যটক আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
আরো পড়ুন:
বর পক্ষকে উদ্ধারে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ, থানায় মামলা
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৭
তিনি আরো বলেন, “আমরাও ফিলিস্তিনের পক্ষে আছি। কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছি। কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি এই (রেস্টুরেন্টে হামলা) ঘটনা ঘটিয়েছে, যা কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের জন্য অশনি সংকেত। ইসরায়েলি পণ্যের সাইনবোর্ড সরিয়ে নিতে বললে তা করা যেত। ভাঙচুর এবং পর্যটক আহত করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।”
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সুগন্ধা এলাকার টপ ফ্লোরে থাকা কেএফসি এবং নিচে অবস্থিত পিৎজা হাটে ভাঙচুরের চিহ্ন স্পষ্ট। কেএফসি লক্ষ্য করে ছোড়া ইট-পাটকেল নিচের পিৎজা হাটে গিয়ে পড়ে, এতে কাঁচ ও যন্ত্রপাতির ক্ষতি হয়। ঘটনার পর পিৎজা হাট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তবে কেএফসি খোলা রয়েছে।
পিৎজা হাট কক্সবাজার শাখার ইনচার্জ পারভেজ মিয়া বলেন, “প্রধানত কেএফসির প্রতি ক্ষোভ থেকেই হামলা শুরু হয়। কেএফসি ওপরের ফ্লোরে থাকায় নিক্ষিপ্ত বস্তু নিচে পিৎজা হাটে গিয়ে পড়ে। এতে আমাদের ক্ষতি হয়েছে।”
কাঁচা লংকা রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার ফিরোজ আহমেদ জানান, তাদের সাইনবোর্ডে সেভেন আপের বিজ্ঞাপন ছিল বলে ভাঙচুর চালানো হয়। তিনি বলেন, “আমরাও ফিলিস্তিনকে সমর্থন করি। কেউ বললে সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলতাম।”
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ স ইনব র ড ক এফস
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।