ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বর্বরতার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে কক্সবাজার শহরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিছিল থেকে পর্যটন জোনের অন্তত পাঁচটি রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর করা হয়েছে।

সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে শহরের পাবলিক লাইব্রেরি প্রাঙ্গণের শহীদ দৌলত ময়দান থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি হলিডে মোড় ঘুরে লাবণী হয়ে কলাতলী এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। এসময় রেস্টুরেন্টে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ ইকবাল বলেন, “ইসরায়েলি পণ্য বিক্রির অভিযোগে কেএফসি, পিৎজা হাট, কাঁচা লংকা, পানসি ও মেরিন ফুড রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর চালানো হয়।” কাঁচের আঘাতে কয়েকজন পর্যটক আহত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

আরো পড়ুন:

বর পক্ষকে উদ্ধারে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ, থানায় মামলা

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা, গ্রেপ্তার ৭

তিনি আরো বলেন, “আমরাও ফিলিস্তিনের পক্ষে আছি। কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছি। কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি এই (রেস্টুরেন্টে হামলা) ঘটনা ঘটিয়েছে, যা কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের জন্য অশনি সংকেত। ইসরায়েলি পণ্যের সাইনবোর্ড সরিয়ে নিতে বললে তা করা যেত। ভাঙচুর এবং পর্যটক আহত করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।”

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সুগন্ধা এলাকার টপ ফ্লোরে থাকা কেএফসি এবং নিচে অবস্থিত পিৎজা হাটে ভাঙচুরের চিহ্ন স্পষ্ট। কেএফসি লক্ষ্য করে ছোড়া ইট-পাটকেল নিচের পিৎজা হাটে গিয়ে পড়ে, এতে কাঁচ ও যন্ত্রপাতির ক্ষতি হয়। ঘটনার পর পিৎজা হাট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তবে কেএফসি খোলা রয়েছে।

পিৎজা হাট কক্সবাজার শাখার ইনচার্জ পারভেজ মিয়া বলেন, “প্রধানত কেএফসির প্রতি ক্ষোভ থেকেই হামলা শুরু হয়। কেএফসি ওপরের ফ্লোরে থাকায় নিক্ষিপ্ত বস্তু নিচে পিৎজা হাটে গিয়ে পড়ে। এতে আমাদের ক্ষতি হয়েছে।”

কাঁচা লংকা রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার ফিরোজ আহমেদ জানান, তাদের সাইনবোর্ডে সেভেন আপের বিজ্ঞাপন ছিল বলে ভাঙচুর চালানো হয়। তিনি বলেন, “আমরাও ফিলিস্তিনকে সমর্থন করি। কেউ বললে সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলতাম।”

এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

ইলিয়াস খান বলেন, “মিছিলের সামনে এবং পেছনে পুলিশ থাকলেও দীর্ঘ মিছিলে মাঝখান থেকে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি পেপসির সাইনবোর্ড খুলে ফেলে এবং ইট ছোড়ে। মিছিলে থাকা অভিজ্ঞদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে।”

ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ স ইনব র ড ক এফস

এছাড়াও পড়ুন:

সবার নজরের বাইরে থাকা চৈতী দেশের জন্য আনল স্বর্ণপদক

একটু বড় হওয়ার পর মেয়েকে দেখে চিন্তায় পড়ে যান মা–বাবা। অন্য শিশুদের মতো বাড়ছে না সে। হাত–পা ছোট, উচ্চতাও থমকে গেছে। পরে বুঝতে পারেন—চৈতী বামন।

যে মেয়েকে নিয়ে একসময় দুশ্চিন্তার পাহাড়ে আটকা পড়েছিল পরিবার, আজ সেই চৈতীই আনন্দের আলো ছড়াচ্ছে। দেশের জন্য প্রথমবারের মতো এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমসে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছে চৈতী রানী দেব।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর গ্রামের শিলু রানী দেব ও সত্য দেবের মেয়ে চৈতীর বয়স ১৩ বছর। উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৭ ইঞ্চি। কিন্তু তার লক্ষ্য নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া । সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলমান এশিয়ান ইয়ুথ প্যারা গেমস ২০২৫–এ বর্শা নিক্ষেপ ও ১০০ মিটার দৌড়ে সে জিতে নিয়েছে দুটি স্বর্ণপদক। ৭ ডিসেম্বর এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

চৈতীর প্রতিভা আছে। অনুশীলনে সে খুব আন্তরিক। সে কিছু করতে চায়। আশা করছি, ওকে দিয়ে একটা ভালো ফলাফল পাবমেহেদী হাসান, বিকেএসপির প্রধান প্রশিক্ষক

চৈতীর স্বর্ণপদক পাওয়ার বিষয়টি দুবাই থেকে প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন স্পোর্টস ফর হোপ অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্সের (শি) প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী শারমিন ফারহানা চৌধুরী।

যে মেয়েকে সবাই দেখত শুধু উচ্চতায়

ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী চৈতী একসময় গ্রামবাসীর নজরে পড়ত শুধু তার খর্বাকৃতির জন্য। খেলাধুলায় তার যে অসাধারণ প্রতিভা আছে, তা ছিল চোখের আড়ালে।

তবে এই ছবি এখন বদলে গেছে। গ্রামবাসী বাড়িতে এসে খোঁজ নেন। শিক্ষকেরা খেলতে উৎসাহ দেন, ছবি তোলেন। স্কুলে সে এখন ‘তারকা’।

দুবাইয়ে বর্শা নিক্ষেপে স্বর্ণপদক জয়ের পর চৈতী

সম্পর্কিত নিবন্ধ