ঈদে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলোকে ঘিরে দর্শকদের ব্যাপক উন্মাদনা লক্ষ্য করা গেছে। সিঙ্গেল হল থেকে শুরু করে মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে টিকিট নিয়ে চলছে হাহাকার। এরই মধ্যে ‘দাগি’ সিনেমা নিয়ে ঘটলো বিরূপ ঘটনা। অন্য এক সিনেমার নেতিবাচক রিভিউ দাগি বলে সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে দিয়েছে একটি গ্রুপ। যা দৃষ্টিগোচর হয়েছে দাগি টিমের। তাই অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল।

সোমবার রাতে রাজধানীর এয়ারপোর্ট রোডের সেন্টারপয়েন্ট শপিং মল স্টার সিনেপ্লেক্সে বিশেষ প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন ‘দাগি’ টিম। প্রদর্শনীর আগে কথা বলেন ‘দাগি’ সিনেমার প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিলসহ নিনেমার কথা কুশলীরা।

শাহরিয়ার শাকিল বলেন, “আমরা দেখেছি কোনো একটি সিনেমার রিভিউ ‘দাগি’ সিনেমার বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং সেটা সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। একটি ভিডিওতে দেখেছি যেখানে বলা হচ্ছে, এটি একটি জঘন্য সিনেমা। আমরা টিকিট না পেয়ে এই সিনেমা দেখেছিলাম। পাশে দাগির পোস্টার, যেন এটা দাগির রিভিউ।”

এরপর হুঁশিয়ারি দিয়ে এই প্রযোজক বলেন, ‘এতদিন ধরে একটাও নেগেটিভ রিভিউ পেলাম না, হঠাৎ করে কেন এই ধরনের রিভিউ যে, এত খারাপ সিনেমা! এটা পরিকল্পিত অপপ্রচার। আবারো যদি কেউ এরকম ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে তাহলে আমরা অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।’

পরে বিশেষ প্রদর্শনীতে উপস্থিত অভিনয়শিল্পী, সংগীতশিল্পী, নির্মাতা, প্রযোজক এবং সাংবাদিকরা ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের চালানো গণহত্যার প্রতিবাদে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে মৌন প্রতিবাদে অংশ নেন।

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে ৭ এপ্রিল সারা বিশ্বে ডাকা হয় ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক’। এতে সমর্থন জানান এদেশের সাধারণ মানুষ। পূর্ব পরিকল্পিত হওয়ায় একইদিনে অনুষ্ঠিত হয় ‘দাগি’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী। তবে শিল্পী ও সাংবাদিক সমাজের যারা এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন তারা সেই প্রতিবাদকে সমর্থন করতে ভোলেননি। গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে এক মিনিট নীরবতার মাধ্যমে অংশ নিয়েছেন বিশেষ প্রদর্শনীতে।

আলফা আই প্রযোজিত ‘দাগি’ নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন। এতে অভিনয় করেছেন আফরান নিশো, তমা মির্জা, সুনেরাহ বিনতে কামাল, শহিদ্দুজামান সেলিম, গাজী রাকায়েত, রাশেদ মামুন অপু প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আফর ন ন শ ঈদ র স ন ম

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।

সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।

পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু

১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।

বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।

এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।

আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।

জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
  • সুদানে গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ও জবিতে মানববন্ধন
  • জুলাইবিরোধী শক্তির শাস্তি দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
  • সুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন
  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
  • সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী