কোঁকড়া চুল নিয়ে প্রচুর কটুক্তি শুনেছি: নিথিয়া মেনন
Published: 9th, April 2025 GMT
দক্ষিণী সিনেমার দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী নিথিয়া মেনন। দুই যুগের অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য সিনেমায় অভিনয় করেছেন। ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন। বর্তমান অবস্থানে পৌঁছানোর জার্নিটা তার জন্য সহজ ছিল না। বিশেষ করে তার মাথার কোঁকড়া চুল নিয়ে কটুক্তি কম শুনেননি এই অভিনেত্রী। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব নিয়ে কথা বলেছেন এই অভিনেত্রী।
নিথিয়া মেনন বলেন, “আপনাকে আপনার মতো করে থাকতে হবে। মানুষ নিজের মতো করে বাঁচে না— আজকাল এমন প্রবণতা বেশি দেখতে পাচ্ছি। মানুষ তাদের চেহারা, মুখমণ্ডলকেও মাইক্রোম্যানেজমেন্ট করছে। কিন্তু আপনার এটা করার কোনো প্রয়োজন নেই। আপনাকে নিজের মতো করে থাকতে হবে, নাহলে আপনি দুর্বল হয়ে পড়বেন।”
খানিকটা ব্যাখ্যা করে নিথিয়া মেনন বলেন, “আমার মনে হয়, আমি নিজের মতো থাকা ছাড়া আর কিছুই করতে পারিনি। এটাই আপনাকে স্বীকৃতি এনে দেবে। আমি যখন স্বীকৃতি পাই, তখন আশা করি— এটি মানুষকে নিজের মতো বাঁচার অনুভূতি দেবে।”
আপনি কখনো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছেন কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে নিথিয়া মেনন বলেন, “প্রত্যেকের জীবনে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার মুহূর্ত আছে। স্কুল-কলেজে পড়াকালীন আমার চুল কোঁকড়ানো ছিল। এর জন্য তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছি। সেই সময়ে চুল স্ট্রেইট (চুল সোজা করা) করা একটা ট্রেন্ড ছিল। সবাই এতে অভ্যস্তও ছিলেন। কিন্তু আমি এমন কিছু করব, তা চিন্তাও করতে পারিনি।”
সময়ের সঙ্গে গা ভাসাননি নিথিয়া মেনন। এ অভিনেত্রী বলেন, “তারপর আমার কোঁকড়া চুলগুলোকে প্রাকৃতিকভাবে সুন্দর দেখানোর পথ খুঁজে বের করি। আমি কোনো কিছুই ব্যবহার করিনি। এমনকী, এখনো কোনো প্রসাধনী ব্যবহার করি না। সবসময়ই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। আমাকে বলা হতো— খাটো, মোটা, চুল-ভ্রু বড় বড় ইত্যাদি।”
চেহারা নয় শিল্পকর্ম নিয়ে আলোচনা হোক। নিথিয়া মেনন বলেন, “আমি এমনভাবে বেড়ে উঠেছি, যেখানে ভাবি, ‘আপনি কেন আমার চেহারা নিয়ে কথা বলবেন? অন্য কিছু বলতে পারেন। আমি চরিত্রে কী নিয়ে এসেছি, তা নিয়ে কথা হোক। আমি খাটো নাকি লম্বা, মোটা নাকি পাতলা তা বিবেচ্য নয়। আমার শিল্পটাকে সুক্ষ্মভাবে দেখুন।”
১৯৯৮ সালে শিশুশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রে পা রাখেন নিথিয়া মেনন। ২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কন্নড় ভাষার ‘সেভেন ও ক্লক’ সিনেমার মাধ্যমে নায়িকা হিসেবে পর্দায় অভিষেক হয় তার। এরপর ‘উস্তাদ হোটেল’, ‘বেঙ্গালুরু ডেজ’, ‘হানড্রেড ডেজ অব লাভ’সহ বেশ কিছু জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দেন তিনি।
নিথিয়া মেনন অভিনীত ৬১টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। গত বছর ‘থিরুচিত্রম্বলম’ সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন তিনি। বর্তমানে তার হাতে তামিল ভাষার দুটো সিনেমার কাজ রয়েছে।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি