সিলেটে মধ্যরাতে ছাত্রলীগসহ এলাকাবাসীর সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক দল-ছাত্রদলের সংঘর্ষ
Published: 12th, April 2025 GMT
সিলেট নগরীর মাছিমপুর-মেন্দিবাগ এলাকায় স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ এলাকাবাসীর সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হামলা ও পাল্টা হামলায় ৩১টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এতে বিএনপি নেতা আজিজসহ কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার মধ্যরাতের ওই ঘটনার পর ঘটনাস্থলে ছুটি যান বিএনপি নেতারা। উত্তেজনা দেখা দিলে রাত ১টার দিকে সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় আজ শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত কোনো অভিযোগ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ওসি জিয়াউল হক।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ওই এলাকায় আড্ডা দিতেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। ৫ আগস্টের পর সিলেট ল কলেজের পাশের ওই এলাকায় আড্ডা দিতে শুরু করেন বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রতিদিনের মতো শুক্রবার রাতে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য সচিব ও বিএনপি নেতা আজিজুল হোসেন আজিজসহ কয়েকজন নেতাকর্মী ওই এলাকায় আড্ডা দিচ্ছিলেন। গাড়ি পার্কিং নিয়ে মাছিমপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হান্নানের ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী অপুর সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওই সময় আজিজকে মারধর করা হয়।
এর প্রতিবাদে বিএনপি নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগ নেতার বাসায় (সাবেক কাউন্সিলর শারমিন আক্তার সুমির বাসা) মিছিল নিয়ে হামলা করে। ওই সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতিরোধ করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। একপর্যায়ে মোটরসাইকেল ফেলে পিছু হঠেন বিএনপির কর্মীরা। পরে মোটরসাইকেলগুলো ভাঙচুর করা হয়। আহত অবস্থায় আজিজকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান মহানগর বিএনপি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীসহ বিএনপি নেতারা। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলাকারীতে খুঁজতে থাকেন। উত্তেজনা দেখা দিলে রাত একটার পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। ভাঙচুর করা মোটরসাইকেল ট্রাকে করে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি নেতা আজিজের ওপর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা করেছে।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল স ঘর ষ র ন ত কর ম র স ঘর ষ ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।