ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল রাশিয়ার মালিকানায় দিয়ে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার পক্ষে মত ট্রাম্পের দূতের, দুশ্চিন্তায় মার্কিন মিত্ররা
Published: 12th, April 2025 GMT
গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পাঠানো এক আলোচনাকারীর সঙ্গে খাবার খাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেন স্টিভ উইটকফ। মস্কোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনায় নেতৃত্বদানকারী বিশেষ মার্কিন দূত তিনি। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে উইটকফ একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন।
উইটকফ মনে করেন, ইউক্রেনের পূর্বদিকের চারটি অঞ্চলকে নিজেদের মালিকানায় আনতে রাশিয়া যে কৌশল নিয়েছে, তাকে সমর্থন দেওয়াটাই ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার একটি দ্রুততম উপায়। দুই মার্কিন কর্মকর্তা এবং ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও পাঁচ ব্যক্তি রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন। ২০২২ সালে ইউক্রেনের ওই চার অঞ্চলকে রাশিয়া অবৈধভাবে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা চালিয়েছিল।
এর আগেও উইটকফ একই ধরনের মনোভাব জানিয়েছিলেন। এমনকি গত মাসে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব টাকার কার্লসনকে দেওয়া একটি পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে প্রকাশ্যে তিনি এমন অভিমত জানিয়েছিলেন। তবে ইউক্রেন বারবারই এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় কর্মকর্তাদের কেউ কেউ একে মূলত রাশিয়ার দাবি বলে উল্লেখ করেছেন।
ইউক্রেনে নিযুক্ত মার্কিন দূত জেনারেল কিথ কেলোগ ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে উইটকফের বিরুদ্ধে পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন বিবাদপূর্ণ ভূমিসংক্রান্ত কিছু শর্ত নিয়ে আলোচনা করতে ইচ্ছুক হলেও রাশিয়ার কাছে একতরফাভাবে অঞ্চলগুলোর সম্পূর্ণ মালিকানা হস্তান্তরে কখনোই রাজি হবে না। সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র এ কথা জানিয়েছে।
বৈঠকে মার্কিন কৌশল বদলানোর বিষয়ে ট্রাম্প কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি। তাঁর সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠকটি শেষ হয়। গতকাল শুক্রবার পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে রাশিয়ায় সফর করেন উইটকফ।
ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে অচলাবস্থা কীভাবে ভাঙা যাবে, তা নিয়ে উইটকফের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মতবিরোধ ক্রমাগত বাড়ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন কেলোগ। তিনি চান, ইউক্রেনকে আরও বেশি সরাসরি সমর্থন দেওয়া হোক। সংশ্লিষ্ট মার্কিন কর্মকর্তা ও ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা চার পশ্চিমা কূটনীতিক সূত্রে এমন কথা জানা গেছে।
এ ব্যাপারে উইটকফের কার্যালয়, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ, পররাষ্ট্র দপ্তর, ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ওয়াশিংটনে রাশিয়ার দূতাবাসের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল রয়টার্স। তবে সাড়া পাওয়া যায়নি।
রাশিয়ার বিশেষ দূত কিরিল দিমিত্রিয়েভের সঙ্গে স্টিভ উইটকফ। সেন্ট পিটার্সবার্গ, রাশিয়া, ১১ এপ্রিল.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসুর বিবৃতি: বিএনপি তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে
জুলাই সনদে সই করলেও বিএনপি ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে, এমন বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। রোববার বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, জুলাই বিপ্লব ছিল বৈষম্য, অবিচার ও ফ্যাসিবাদী শাসনকাঠামোর বিরুদ্ধে এ দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার সম্মিলিত বিপ্লব। শুধু সরকার পরিবর্তন নয়, বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ ও একটি বৈষম্যহীন-ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল বিপ্লবের মূল ভিত্তি। নতুন প্রজন্ম চেয়েছিল এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে কোনো প্রকার বৈষম্য ও রাজনৈতিক একচেটিয়া কর্তৃত্বের জায়গা থাকবে না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে জুলাই সনদে সই করলেও বিএনপি ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।
ডাকসুর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশেষত বিএনপি এমন সব মৌলিক সংস্কারের বিরোধিতা করেছে, যা সরাসরি ছাত্র-জনতার স্বপ্নের সঙ্গে জড়িত। পিএসসি, দুদক, ন্যায়পাল ও মহাহিসাব নিরীক্ষকের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগ নিশ্চিত করার সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়। কোনো রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব রাষ্ট্রগঠনমূলক সংস্কারের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে ছাত্র-জনতা সেই বাধা অতিক্রমে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেবে।